পুলিশ কর্মকর্তার শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনে স্ত্রীর আত্মহনন

বরিশাল জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপ-পরির্দশক মাইনুল ইসলাম সাইফুলের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনেই তার নববিবাহিতা স্ত্রী সাথী আক্তার সাথী আত্মহনন করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে স্ত্রীকে আত্মহননে প্ররোচনার হাত থেকে বাঁচতে অসুস্থতার ভান ধরে অভিযুক্ত সাইফুল ইসলাম শের-ই বাংলা মেডিকেলে ভর্তি হয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন নিহতের স্বজনরা। প্রথম স্ত্রী এবং ওই ঔরসে ২ সন্তানের কথা গোপন রেখে কলেজ ছাত্রীকে দ্বিতীয় বিয়ে এবং তাকে চাকুরী দেয়ার নামে পিত্রালয় থেকে আনা ৫ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা নিয়ে দাম্পত্য কলহ ছিলো সাইফুল ও সাথীর মধ্যে।
সাথীর ভাই মো. রতন সূত্র জানায়, মাইনুল ইসলাম তার প্রথম স্ত্রী এবং ওই সংসারের দুই সন্তানের কথা গোপন রেখে সাথী আক্তারকে এক বছর আগে বিয়ে করে। দ্বিতীয় স্ত্রীকে সোনালী ব্যাংকে চাকুরী দেয়ার নামে সাথীর বাবার বাড়ি থেকে ৫ লাখ টাকা আনেন সাইফুল। পরে চাকুরী না হওয়ায় ওই ৫ লাখ টাকা ফেরত না দিয়ে আত্মসাত করেন তিনি। এসব ঘটনা নিয়ে দাম্পত্য কলহ চলছিলো তাদের সংসারে। বিভিন্ন সময় সাথীকে শারীরিক এবং মানসিক নির্যাতন করে সাইফুল। নির্যাতনের মুখে গত সোমবার দুপুরে নগরীর বৈদ্যপাড়া এলাকায় সাইফুলের ভাড়া বাসায় সবার অজান্তে ফ্যানের সাথে রশি বেঁধে গলায় পেচিয়ে আত্মহনন করে সাথী।
সাথীর ভগ্নিপতি বাবুগঞ্জের কেদারপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. নুরে আলম জানান, ‘এটা পরিকল্পিত হত্যাকান্ড। সাথী আক্তারকে নিয়মিত মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করা হতো। এ ঘটনা তদন্ত করে কঠোর বিচার দাবী করেন তিনি। স্ত্রীকে আত্মহননে প্ররোচনার অভিযোগ থেকে বাঁচতে সাইফুল পরিকল্পিতভাবে অসুস্থতার ভান ধরে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সাথীর ভগ্নিপতি নুরে আলম।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক মাইনুল ইসলাম সাইফুলের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও ফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য জানা যায়নি।
তবে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার ওসি আ. রাজ্জাক বলেন, জেলা গোয়েন্দার শাখার এসআই সাইফুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রীর আত্মহত্যার খবর তারা শুনেছেন। এ ঘটনার পর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে সাইফুল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। অসুস্থতার জন্য তাকে সাময়কি ছুটি দেয়া হয়েছে।
বরিশাল কোতয়ালী মডেল থানার ওসি মো. আজিমুল করিম জানান, মর্গে সাথীর মরদেহ ময়না তদন্ত হয়েছে। পরে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় থানায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়না তদন্ত রিপোর্ট পেলে সে অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন ওসি।