মামলা করার অপরাধে প্রতিবন্ধী গৃহবধূকে আদালতের সামনে থেকে অপহরণের পর ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানায় ভিকটিম গৃহবধূ নিজেই বাদি হয়ে ৫ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন, গৃহবধূর স্বামী প্রবীর মিত্র, ননদ জামাই মানব চন্দ্র, গৌরাঙ্গ নাথ এবং অজ্ঞাতনামা আরো ২ জন।
এ মামলার প্রধান আসামি প্রবীর মিত্র গৃহবধূর দায়েরকৃত অপর একটি অপহরণ মামলার আসামি হিসেবে জেলহাজতে রয়েছেন। তবে বাকি আসামিরা পালাতক।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারের (ওসিসি) দায়িত্বে থাকা বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) এইচ.এম শাহীন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, ভিকটিমের অসুস্থতার কারণে মামলা করতে কিছুটা বিলম্ব হয়েছে। তা ছাড়া ভিকটিমের মেডিকেল পরীক্ষা এবং তার প্রতিবেদন পাওয়ার পরেই এজাহার তৈরি করে তা কোতয়ালি মডেল থানায় পাঠানো হয়। থানা পুলিশ বৃহস্পতিবার মামলাটি রুজু করেছে।
মামলার বরাত দিয়ে এসআই এইচএম শাহীন জানান, পারিবারিক প্রস্তাবের মাধ্যমে ২০১৩ সালে পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠী উপজেলার বিনেন্দ্র মিত্রর পুত্র প্রবীর মিত্রর সাথে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পরে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে নির্যাতন ও ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয়।
এ ঘটনায় গৃহবধূ বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় গৃহবধূর শাশুড়ি আরতি মিত্র ও দেবর পার্থ মিত্রকে গ্রেপ্তার করে জেল হাজতে পাঠায় থানা পুলিশ। এতে স্বামীসহ অন্যান্য আসামিরা আরো ক্ষিপ্ত হন।
গত ১৬ এপ্রিল আদালত থেকে বাড়িতে যাওয়ার সময় গৃহবধূকে অচেতন করে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়। জ্ঞান ফিরে গৃহবধূ একটি অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের মধ্যে নিজেকে দেখতে পান এবং তার পাশেই স্বামী প্রবীর মিত্র, ননদ জামাই মানব চন্দ্র, গৌরাঙ্গ নাথসহ আরো কয়েকজন দাঁড়িয়ে রয়েছেন। সেখানেই পুরুষ আসামিরা মামলা দায়েরের খেসারতের কথা বলে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা কোতয়ালি মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরাফাত হাসান রহমান বলেন, ঘটনার একদিন পরে গৃহবধূর স্বামী একটি যৌতুক মামলায় আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় বিচারক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তবে এজাহারে নামধারী অপর দুই আসামি এখনো পালাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।