বরিশালে তরুণ উদ্যোক্তাদের সহানুভূতি

বরিশালে তরুণ উদ্যোক্তাদের সহানুভূতি

মহামারী করোনাভাইরাস এর প্রকোপে জীবন-জীবিকা অচল হয়ে পরেছে। বরিশাল নগরীর অসহায়-দরিদ্র মানুষ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুরাও চরম বিপাকে। ওই সকল মানুষ খাবারের অভাবে দিন কাটে কষ্টে। নগরীরর অনলাইন উদ্যোক্তা গাজী হাদিউজ্জামান এর অনলাইন ই-কর্মাস প্রতিষ্ঠান ‘বিখ্যাত পন্য সম্ভার’ এর আয়োজনে আরো ২০ অনলাইন প্রতিষ্ঠানের উদ্যোক্তরা একত্র হয়ে বরিশাল নগরীরর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে অসহায়-দরিদ্র মানুষ ও সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের খাবার বিতরণ অব্যাহত রাখছে।

গত শনিবার (৩ জুলাই) আমতলার পার্ক থেকে খাবার বিতরণ শুরু করে প্রতিষ্ঠান গুলির উদ্যোক্তাগণ। এর পর থেকে প্রতিদিন খাবার বিতরণ অব্যাহত রাখছে। প্রতিদিন নগরীরর বিভিন্ন স্থানে ঘুরে ঘুরে খাবার অভাবে অসহায় হয়ে পরা মানুষের পাশে দাড়ান ওই তরুণরা। গত রোববার অশ্বিনী কুমার হল চত্বর এবং গতকাল সোমবার বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে খাবারের অভাবে অসহায় হয়ে পরা মানুষদের খাবার বিতরণ করে।

কার্যক্রমের উদ্যোক্তা মো: আলামিন জানান, ‘লকডাউনের কারনে শহরের অসহায়-দরিদ্র মানুষ এবং সুবিধাবঞ্চিত শিশুরা এবং ভাতের হোটেল বন্ধ থাকার কারনে খেটে খাওয়া মানুষ বিপাকে পরেছে। তাদের না খেয়ে দিন কাটাতে হয়। এছাড়া বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনের হোটেলগুলো গত দুইদিন বন্ধ থাকায় রোগীদের সঙ্গে স্বজনরা বিপাকে পরেন। এই সকল বিপদে পরা মানুষের পাশে আমরা বিনামূল্যে খাবার পরিবেশন করতে পেরে বেশ আনন্দিত। আমাদের এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টায় সকলের সহযোগিতা পেলে যতদিন লকডাউন থাকবে এই কার্যক্রম চালিয়ে যাবো।’

বিখ্যাত পন্য সম্ভার এর প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক গাজী হাদিউজ্জামান বলেন, ‘মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য’ ‘এই গানের কথাগুলো আমাকে বার বার ভাবিয়ে তোলে। আমরা বেঁচে থাকতে কি করলাম! কতটুও করেছি? এই চলমান মহামারীতে চারপাশে তাকালে দু’চোখে অন্ধকার দেখতে পাই। মানুষ ভালো নেই। ওই শিশুরাও ভালোনেই। এই সকল মানুষের পেটের খুদা সহ্য না করতে পেরে আমাদের এই উদ্যোগ নেয়া। আমরা প্রতিদিন প্রায় ১০০ জন সুবিধাবঞ্চিত অসহায় মানুষের মাঝে খাবার বিতরণ করছি। আমাদের এই কাজের সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে যুক্ত  আছেন বরিশালের প্রায় ২০ জন তরুণ উদ্যোক্তা। যাদের কেউ আমাদের খাবার প্রস্তুত করে দিচ্ছেন আবার কেউ অর্থনৈতিক ভাবে সহযোগিতা করছেন। এভাবেই আমরা মানুষের পাশে থাকতে চাই।’ 

তিনি আরো বলেন, ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক দিল-আফরোজ তানিয়া ম্যাম আমাদের সবসময় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া আমাদের এই উদ্যোগ আরো সুন্দর করার জন্য বরিশালের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘সবুজ বাংলা সোসাইটি’-এর একদল স্বেচ্ছাসেবক নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছেন। তবে আমরা বিশ্বাস করি সবাই যদি এই করুন পরিস্থিতিতে নিজ নিজ জায়গা থেকে এগিয়ে আসেন তাহলে না খেয়ে থাকতে হবেনা অসহায়-দরিদ্র মানুষের।’