বরিশালে শিক্ষকের কান ধরানোর ভিডিও ভাইরাল

বরিশালে জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউটের শিক্ষক মো. মিজানুর রহমান ছাত্রীদের নম্বর বেশি পাইয়ে দেওয়ার ফাঁদ দেখিয়ে অনৈতিক সম্পর্ক করার দায়ে কান ধরে ওঠবস ও তওবা করিয়েছে ইনস্টিটিউটের ছাত্ররা। এসময় এক ছাত্রীর পা ধরে মাফ চাইতেও দেখা গেছে। এমন একটা পোস্ট সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে।
বরিশাল নগরীর রূপাতলী এলাকার জমজম নার্সিং ইনস্টিটিউটের কমিনিউিট মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক মিজানুর রহমান সজলকে ওই অভিযোগে কান ধরিয়ে ওঠবস করানো এবং পা ধরে মাফ চাওয়ানো হয়।
গত ২৫ আগস্ট বরিশাল নগরের অক্সফোর্ড মিশন এলকায় ওই ঘটনা ঘটানো হয় এমন দাবি শিক্ষকক মিজানুর রহমানের।
শিক্ষক মিজানুর রহমান সজলের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জমজম ইনস্টিটিউটের শিক্ষক হিসেবে ছাত্রীদের নানাভাবে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেছেন। এমনকি পরীক্ষায় বেশি নম্বর পাইয়ে দিয়ে ছাত্রীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করানো হতো। তার বিরুদ্ধে এমনসব অভিযোগে একাধিকবার ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ ও নির্বাহী পরিচালকের কাছে অভিযোগ দেওয়া হলেও তারা তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। তবে এসব অভিযোগের কথা অস্বীকার করেছেন শিক্ষক মিজানুর রহমান সজল এবং প্রতিষ্ঠানের নির্বাহী পরিচালক।
ভিডিওতে মিজানুর রহমান সজলকে কান ধরে ওঠবস করা ছাড়াও বলতে শোনা গেছে, ‘আমি কোন মেয়েদের দিকে তাকাবো না। কোন মাইয়ারে কমুনা আমার লগে শো, আমি তোরে পাশ করাইয়া দিমু। কোন মাইয়ারে কমুনা কুয়াকাটা চলো, মহুয়া খামু, ইনজয় করমু। ভালো সম্পর্ক থাকলেও কোন মাইয়াকে ভাইভায় এক্সটা নম্বর দিমু না। আমি আইজ থেকে ভদ্র হইয়া চলমু।’
অভিযুক্ত শিক্ষক মিজানুর রহমান সজল বলেন, সামাজিক যোগাযোাগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া ওই ভিডিওর ব্যক্তি আমি। আমার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন। আমাকে কান ধরে ওঠবস করতে বাধ্য করা হয়েছে। একই সঙ্গে এক সময়ে আমার ছাত্রীর পা ধরে মাফ চাইতেও বাধ্য করা হয়েছে।
তিনি বলেন, গত ২৫ আগস্ট জমজম ইনস্টিটিউটের ম্যাটসের শিক্ষার্থী ইমতিয়াজ ইমন তার ৬-৭জন সঙ্গী নিয়ে আমাকে নগরের হাতেম আলী কলেজ চৌমাথা এলাকা থেকে ধরে নিয়ে যায়। ২০১৮ সালে আমি যখন জমজমে চাকুরী করেছি তখনকার ছাত্র ইমন। তারা আমাকে অক্সফোড মিশন রোডে নিয়ে আমাকে মারধর করে। পরে ইমনের স্ত্রী ও ২০১৮ সালের জমজম ইনস্টিটিউটের ছাত্রী মনিরাকে নিয়ে আসে ইমন। এক পর্যায়ে মনিরার সামনে আমার কাপড়চোপর খুলে ফেলা শুরু করে। লজ্জায় আমি ওরা যা যা বলতে বলেছে তা বলেছি। আমাকে তারা বলতে থাকে আমরা যা যা বলবো সেটা না করলে নগ্ন করে ফেলবো। পরে ওদের নির্দেশ অনুযায়ী আমি মনিরার পা ধরে ক্ষমা চাই, কান ধরে ওঠবস করি এবং ওই কথাগুলো বলি।
এব্যাপারে জমজম ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক মো. সাজ্জাদুল হক বলেন, মিজানুর রহমান সজল আমাদের প্রতিষ্ঠানে এক সময় শিক্ষক ছিলেন। বর্তমানে তিনি আমাদের প্রতিষ্ঠানে নেই। তবে করোনকালীন সময় অনলাইনে তিনি আমারে প্রতিষ্ঠানে ক্লাস নিতেন। তাঁর সঙ্গে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পছন্দ অপছন্দ নিয়ে দ্বন্দ্ব থাকলেও ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্কের বিষয়টি আমাদের জানা নেই। তাছাড়া এব্যাপারে কোন শিক্ষার্থী লিখিত কোন অভিযোগ দেয়নি। শুনেছি গত মাসে তাকে ধরে নিয়ে কিছু শিক্ষার্থী কান ধরে ওঠবস করিয়েছে। যেহেতু তিনি বর্তমানে আমাদের প্রতিষ্ঠানে নেই, তাই তার ওই ঘটনার দায় আমরা নেব না।