বরিশালে ৩ দিনব্যাপী যাত্রা প্রদর্শনী শুরু

বরিশালে শুরু হয়েছে ৩ দিনব্যাপী যাত্রা প্রদর্শনী। মঙ্গলবার প্রথম দিন আঞ্চলিক লোক কাহিনী অবলম্বনে ‘গুনাইবিবি’ প্রদর্শন করা হয়। দ্বিতীয় দিন বুধবার ‘আলোমতি প্রেমকুমার’ এবং তৃতীয় দিন ‘মুক্তির শিহরণ’ মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৩ দিনের যাত্রা প্রদর্শনী।
সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নগরীর বান্দ রোডের জেলা শিল্প কলা একাডেমীর অডিটরিয়ামে যাত্রা প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দার। এ সময় জেলা কালচারাল অফিসার হাসানুর রশীদ মাকসুদসহ সাংস্কৃতিক অঙ্গনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমীর উদ্যোগে এবং নাট্যকলা ও চলচ্চিত্র বিভাগের তত্ত্বাবধানে নতুন যাত্রাপালা নির্মাণ ও মঞ্চায়ন কর্মসূচির আওতায় বরিশালে আয়োজন করা হয় ৩ দিনব্যাপী যাত্রা প্রদর্শনীর।
উদ্বোধনের পর আদি রূপাঞ্জলি অপেরার পরিবেশনায় আঞ্চলিক লোক কাহিনী অবলম্বনে প্রদর্শন করা হয় গুনাইবিবি। প্রথম দিন দর্শকের উপস্থিত ছিলো আশাব্যাঞ্জক।
যাত্রা উপভোগ করতে আসা সাংস্কৃতি প্রেমীরা বলেন, যাত্রা আবহমান সাংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। কালের বিবর্তনে যাত্রা প্রায় হারিয়ে গেছে। দীর্ঘদিন পর যাত্রা দেখতে পেরে খুশি তারা। আবার জীবনে প্রথমবারের মতো যাত্রাপালা দেখে অভিভূত হয়েছেন নতুন প্রজন্মের অনেকে। এক দর্শক বলেন, নতুন প্রজন্ম ডিজিটালাইজেশনে আক্রান্ত। তারা জানেন না গুনাইবিবি কি, যাত্রাপালা কি। তাদের সুষ্ঠু ধারায় ফিরেয়ে আনতে গ্রামীর সাংস্কৃতি চর্চার প্রয়োজন। তারা আগামীতেও সুষ্ঠু ধারার যাত্রাপালা আয়োজনের দাবী জানিয়েছেন।
জেলা কালচারাল অফিসার হাসানুর রশীদ মাকসুদ বলেন, বুধবার দ্বিতীয় দিন বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় দক্ষিনবঙ্গ নাট্য সংস্থার পরিবেশনায় ‘আলোমতি প্রেমকুমার’ এবং বৃহস্পতিবার তৃতীয় দিন সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় শিবশক্তি নাট্য সংস্থার পরিবেশনায় ‘মুক্তির শিহরন’ মঞ্চায়নের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ৩ দিনের যাত্রা প্রদর্শনী।
উদ্বোধনের পর জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দিন হায়দা বলেন, এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে আবার যাত্রাপালার পুনরুজ্জীবন হবে। প্রথম দিনে দর্শকের উপস্থিতি আয়োজকদের সন্তুস্ট করেছে। আগামীতে এই ধরনের আয়োজনে জেলা প্রশাসন সার্বিক সহায়তা করবে বলে তিনি জানান।
সাংস্কৃতিজন নগরীর রূপাতলী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পাপিয়া জেসমিন বলেন, প্রাচীনকালে যাত্রাপালা ছিলো ধর্মভিত্তিক। পরবর্তীতে যাত্রাপালার মাধ্যমে সমাজের নানা অসঙ্গতি এবং ভালো উদাহরণ তুলে ধরা হতো। পরে এতে অশ্লীলতা এসে যায়, আবার মূল ধারায়ও ফিরে আসে। বর্তমানে যাত্রা হারিয়ে গেছে। সরকারি ভাবে যাত্রা প্রদর্শনীর আয়োজন করায় তিনি ধন্যবাদ জানান এবং আগামীতে পৃষ্ঠপোষকতাও দাবী করেন।