বরিশাল সিটির অভ্যন্তরের মহাসড়ক ৪ লেনে উন্নীত করার কাজ শিগগিরই শুরু

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর বাড়তি যানবাহনের চাপ সামলাতে বরিশাল নগরীর অভ্যন্তরের সাড়ে ১২ কিলোমিটার মহাসড়ক প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হচ্ছে শিগগিরই।
এ লক্ষ্যে ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক বিভাগের আহ্বান করা দরপত্র মূল্যায়নের কাজ চলছে। দুই প্যাকেজে এই টেন্ডারের আওতায় নগরীর প্রবেশদ্বার গড়িয়ারপাড় থেকে দপদপিয়া সেতুর টোল প্লাজা পর্যন্ত ২৪ ফুট প্রশস্ত সাড়ে ১২ কিলোমিটার মহাসড়কের দুই পাশ ২৪ থেকে ২৮ ফুট চওড়া করা হবে। মাঝে থাকবে একটিমাত্র রোড ডিভাইডার। দ্রুত দরপত্র মূল্যায়ন শেষে আগামী এক মাসের মধ্যে মহাসড়ক উন্নয়ন কাজ শুরু হবে। এই কাজ সম্পন্ন হলে নগরীর অভ্যন্তর দিয়ে যাওয়া মহাসড়ক যানজট মুক্ত হবে। কমবে দুর্ঘটনা।
পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাগামী পর্যটকরা দুর্ভোগ থেকে রক্ষা পাবেন। ভাঙ্গা-বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের সাড়ে ১২ কিলোমিটার বরিশাল নগরীর অভ্যন্তরে। গত বছর ২৫ জুন পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর ধারণার থেকেও বেশি যানবাহনের চাপ পড়েছে এই মহাসড়কে। নতুন অনেক পরিবহন কোম্পানি রুট চালু করেছে বরিশাল হয়ে কুয়াকাটা পর্যন্ত। পণ্যবাহী যান ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাগামী হালকা যান চলাচলও বেড়েছে। সব যানের গতি আটকে যাচ্ছে বরিশাল নগরী অংশের সাড়ে ১২ কিলোমিটার মহাসড়কে। এই সাড়ে ১২ কিলোমিটার মহাসড়কে যানজট এখন নিত্যদিনের। এক সড়কে হরেক যানবাহন এবং পথচারী চলাচল করায় দুর্ঘটনা ঘটে প্রতিদিন।
এ অবস্থায় নগরীর অভ্যন্তরের মহাসড়ক সম্প্রসারণে সুবিধাভোগী, সুশীল সমাজ, সাংবাদিক, বিভাগীয় ও জেলা প্রশাসন এবং সড়ক বিভাগের শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে গত ৭ জুলাই সমন্বয় সভা করেন সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহ। সভায় পরিস্থিতি পর্যালোচনায় কাশীপুর থেকে আমতলা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে সিটি করপোরেশনের বর্ধিত করা সড়ক ও দুই পাশের দুটি ডিভাইডার ভেঙে গড়িয়ারপাড় থেকে দপদপিয়া পর্যন্ত ফোর লেনে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব পায় সড়ক বিভাগ। বরাদ্দ আনতে সহযোগিতা করার কথা রাজনৈতিক মহলের।
বছরের শেষদিকে এই প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ে ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয় সড়ক যোগাযোগ মন্ত্রণালয়। এক মাসে আগে নগরীর অভ্যন্তরের সাড়ে ১২ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নে দরপত্র আহ্বান করে সড়ক বিভাগ। দুটি প্যাকেজে এই দরপত্র এখন মূল্যায়ন পর্যায়ে রয়েছে।
বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদ মাহমুদ সুমন জানান, ৫২ কোটি টাকা ব্যয়ে গড়িয়ারপাড় থেকে অ্যালাইনমেন্ট ঠিক রেখে বর্তমান ২৪ ফুট প্রশস্ত মহাসড়ক ক্ষেত্রবিশেষ ২৪ থেকে ২৮ ফুট প্রশস্ত করা হবে। কাশীপুর থেকে আমতলা পর্যন্ত মহাসড়কের দুই পাশে সিটি করপোরেশন নির্মিত অপ্রয়োজনীয় বিশাল দুটি রোড ডিভাইডার ভেঙে দুই পাশে সড়ক বিভাগের পুরো জায়গায় সড়ক নির্মাণ করা হবে। মাঝখানে থাকবে এক মিটার প্রশস্ত একটি মাত্র ডিভাইডার। গড়িয়ারপাড় থেকে কাশীপুর, কাশীপুর থেকে সাগরদী ব্রিজ এবং সাগরদী থেকে দপদপিয়া পর্যন্ত পৃথক তিনটি নকশায় সড়ক উন্নয়ন করা হবে। ফুটপাত-ড্রেন-আলোকসজ্জা করবে সিটি করপোরেশন। এটি নির্মিত হলে নান্দনিক সড়কে পরিণত হবে। যানজট মুক্ত হবে বরিশাল শহরের মহাসড়ক।
এ বিষয়ে বরিশাল সড়ক ও জনপথ বিভাগের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী এ কে এম আজাদ রহমান বলেন, নগরীর অভ্যন্তরের সাড়ে ১২ কিলোমিটার মহাসড়ক উন্নয়নের দরপত্র মূল্যায়ন পর্যায়ে রয়েছে। শিগগিরই কার্যাদেশ দেওয়ার মধ্য দিয়ে সড়ক নির্মাণকাজ শুরু হবে।