বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী দিয়ে ভারত গমনে নিষেধাজ্ঞা

বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী দিয়ে ভারত গমনে নিষেধাজ্ঞা

করোনাভাইরাসের প্রেক্ষাপটে বাংলাবান্ধা ও বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে ভারত গমনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি।

শুক্রবার বিকেল পাঁচটার পর থেকে বাংলাদেশি পাসপোর্টধারীদের ভারতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়নি। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে জানা গেছে।

তবে বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয় নাগরিকরা ও ভারতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকরা চাইলে নিজ নিজ দেশে ফিরতে পারবেন। তবে আমদানি-রপ্তানির বিষয়ে কোন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে কিনা জানা যায়নি। 

বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোকছেদ আলী জানান, এখন পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ভিসাধারী যাত্রী পারাপার বন্ধের জন্য সরকারিভাবে কোনো নোটিশ পাইনি। আমরা বিকেল ৫টা পর্যন্ত যাত্রীদের পার করিয়েছি। যাত্রী পারাপার বন্ধে সরকারি সিদ্ধান্ত পেলে আমরা এ বন্দর দিয়ে সাময়িকভাবে যাত্রী পার বন্ধ করে দেব। বন্ধের পর থেকে বাংলাদেশি কোনো যাত্রী ভারতে প্রবেশ করতে পারবে না। যদি কোনো বাংলাদেশি যাত্রী ভারতে থেকে থাকে তবে তারা এই সময়ের মধ্যে দেশে ফিরতে পারবেন বলে তিনি জানান।

বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মেহেদী হাসান খান বাবলা জানান, শুনেছি ভারতীয় কর্তৃপক্ষ যাত্রী পারাপার বন্ধের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এটি যদি হয়ে থাকে তাহলে তা আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রভাব পড়বে। যদিও এই বন্দর দিয়ে খাদ্য-শস্য আমদানি হয় না, মূলত পাথর আমদানি করা হয়, তবুও প্রভাব পড়বে। এমনিতেই করোনার প্রভাবের কারণে এ বন্দর দিয়ে যাত্রী পারাপার কমে গেছে। যদি বন্দর বন্ধ হয় তাহলে ব্যবসায় প্রভাব পড়ার পাশাপাশি সরকার অনেকটা রাজস্ব হারাবে বলে মনে করছি।

বুড়িমারী স্থলবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) এসআই আনোয়ার হোসেন জানান, করোনাভাইরাস আতঙ্কে ভারত সরকার তাদের দেশে প্রবেশ ঠেকাতে প্রায় সব ধরনের ভিসা বন্ধ করেছে। সম্প্রতি ভারতে এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে একজনের মৃত্যুতে এ কড়াকড়ি আরোপ করেছে দেশটির সরকার। ভারতীয় কোনো নাগরিক নিজ দেশে প্রবেশ করতে চাইলে তারা যেতে পারবেন। তবে অন্য দেশের কোনো নাগরিককে ভারতের চ্যাংড়াবান্দা ইমিগ্রেশন গ্রহণ করবে না বলে জানানো হয়েছে।

লালমনিরহাটের পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা বলেন, ভারত সরকারে সিদ্ধান্তে তাদের চ্যাংড়াবান্দা ইমিগ্রেশন ভারতীয় ছাড়া অন্য কোনো পাসপোর্টধারীকে গ্রহণ করবে না বলে বুড়িমারী ইমিগ্রেশনকে জানিয়েছে।

বিশ্বজুড়ে করোনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৭২০ জন। আক্রান্ত এক লাখ ৪৩ হাজার ৩৪৩ জন। তবে এর মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৬৮ হাজার ৩২৪ জন। মৃত ও আক্রান্তের অধিকাংশই হচ্ছে চীনের হুবেই প্রদেশের বাসিন্দা। অঞ্চলটির রাজধানী উহান থেকে ডিসেম্বরের শেষে ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে।

তবে চীনে করোনার প্রাদুর্ভাব কমে আসলে ইউরোপসহ কয়েকটি দেশে ভয়াবহ সংক্রমণ ঘটেছে। ইতালির মাধ্যমে ঝুঁকির মুখে পড়ে গেছে গোটা ইউরোপ। ফ্রান্সে আক্রান্ত হয়েছে দুই হাজার ২৮৪ জন, মারা গেছে ৪৮ জন। স্পেনে আক্রান্ত ২ হাজার ২৭৭ জন, মৃত ৫৫ জন। যুক্তরাজ্য, নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, অস্ট্রিয়াসহ আরও দেশে আক্রান্তরা মারা গেছে।

এদিকে ইরানেও লাফিয়ে লাফিয়ে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। দেশটিতে মারা গেছে ৪২৭ জন, আক্রান্ত ১০ হাজার ৭৫ জন। দেশটিতে পার্লামেন্টের এমপিসহ সরকারি অনেক শীর্ষ কর্মকর্তা আক্রান্ত হয়েছেন করোনায়।

ভারতে এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ৭৩ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে এবং এতে মৃত্যু হয়েছে একজনের। অন্যদিকে বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ৩ জন করোনা আক্রান্ত শনাক্ত হলেও তাদের মধ্যে দুজন সুস্থ হয়ে উঠেছেন।