বাকেরগঞ্জে প্রতিপক্ষের হামলায় যুবক নিহত

বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার ফরিদপুর ইউনিয়নের সোনাপুরা গ্রামে প্রতিপক্ষের হামলায় রবিউল ইসলাম রনি মোল্লা (২৪) নামে এক যুবক নিহত হয়েছে। ওই হামলায় তার মা সহ অপর দুই ভাই গুরুতর আহত হয়েছে। আহত দুই ভাইকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে ¯’ানীয় ইউপি সদস্য জহিরুল ইসলাম ওরফে হাতকাটা মামুনের নেতৃত্বে একদল সন্ত্রাসী গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে এই হামলা চালায় বলে অভিযোগ করেছেন হতাহতের স্বজনরা। এ ঘটনায় এখনও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।
নিহত রবিউল ইসলাম রনি মোল্লা ওই এলাকার ইয়াসিন মোল্লার ছেলে। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তার দুই সহোদর সোহেল মোল্লা (২৬) এবং তৌকির মোল্লা (২২)।
হতাহতদের মামা মোস্তফা সিকদার জানান, এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে হাতকাটা মামুনের সাথে রনি মোল্লার পূর্ব বিরোধ চলচিলো। গত মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে মামুনের নেতৃত্বে ২০ থেকে ৩০ জনের একদল দুর্বৃত্ত দেশীয় ধারালো অস্ত্র সহ রনির বাড়িতে হামলা চালায়। তারা ঘরের সামনের এবং পেছনের দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভেতর ঢুকে রনি, সোহেল ও তৌকির মোল্লাকে এলোপাথারী কুপিয়ে এবং পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। তাদের রক্ষা করতে গেলে তাদের মা মোর্শেদা বেগমকেও পিটিয়ে আহত করে হামলাকারীরা। এক পর্যায়ে তারা নগদ অর্থ সহ বাসার যাবতীয় মূল্যবান মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়। হামলার পর ¯’ানীয়রা ৩ ভাইকে উদ্ধার করে গুরুতর অব¯’ায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে ভর্তি করে। সেখানে চিকিৎসাধীন অব¯’ায় রাত সাড়ে ৩টার দিকে রনি মোল্লাকে মৃত ঘোষণা করেন দায়িত্বরত চিকিৎসকরা। আহত অপর দুই ভাইকে হাসপাতালের ৫ম তলায় সার্জারী ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে।
বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মো. রেজাউল করিম বলেন, গুরুতর আঘাত নিয়ে তিনজনকে হাসপাতালে নিয়ে আসে স্বজনরা। তাদের মধ্যে একজন রাতে মারা গেছে। নিহতের অপর দুই ভাইকে হাসপাতালের সার্জারী বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে একজনের অব¯’া আশঙ্কাজনক।
বাকেরগঞ্জ থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন জানান, হামলাকারী হাতকাটা মামুন এবং নিহত রনির সাথে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে পূর্ব বিরোধ ছিলো। মামুুনের নামে বাকেরগঞ্জ থানায় ১৩টি মামলা রয়েছে। নিহত রনির নামেও থানায় ৪টি মামলা রয়েছে। পূর্ব বিরোধের জের ধরে মঙ্গলবার রাতে আকস্মিক মামুনের নেতৃত্বে রনির বাড়িতে হামলা চালানো হয়। তারা পিটিয়ে ও কুপিয়ে ১ জনকে হত্যা এবং অপর দুইজনকে আহত করে। নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার পর থেকে আসামীরা আত্মগোপনে রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। এ ঘটনায় মামলা দায়ের সহ আইনগত ব্যব¯’া নেয়ার কথা বলেন ওসি।
নিহত রনি মোল্লা স্থানীয়ভাবে ছাত্রলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। তবে দলে কোন বড় পদ-পদবী ছিলো না। তিনি ফরিদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শফিকুর রহমানের অনুসারী হিসেবে এলাকায় পরিচিত ছিলেন। অপরদিকে হামলাকারী হাতকাটা মামুনও ক্ষমতাসীন দলের একজন সক্রিয় কর্মী এবং স্থানীয় সাবেক চেয়ারম্যান মীর মোহসীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
এই হত্যাকান্ডের পর ওই এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ফের অনাকাংখিত পরি িস্থতি মোকাবেলায় ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মো. আলাউদ্দিন।