বাসদের ‘মানবতার বাজার’স্থগিত,রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার অভিযোগ

বাসদের ‘মানবতার বাজার’স্থগিত,রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের শিকার অভিযোগ

বরিশালে বাসদের ‘মানবতার বাজার’ এর কার্যক্রম স্থগিত করতে বাধ্য হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ বরিশাল জেলা শাখার নেতৃবৃন্দ। রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রে জায়গা না পাওয়ায় চালু হওয়ার দুদিনের মাথায় কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বিকল্প পন্থায় এ বাজারের কার্যক্রম চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা বাসদের আহবায়ক ইমরান হাবিব রুমন ও সদস্য সচিব ডাঃ মনীষা চক্রবর্তী।

শনিবার বেলা ১১ টায় বরিশাল নগরের ফকিরবাড়ি রোডস্থ বাসদের অস্থায়ী কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করে বাসদ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠকালে ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, বাসদ বরিশাল জেলা শাখার উদ্যোগে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় মানুষকে সম্মানের সঙ্গে খাদ্য সহায়তা দেয়ার জন্য গত বছর ১২ এপ্রিল ‘মানবতার বাজার’ যাত্রা শুরু করে মানবতার বাজার। এই মানবতার বাজারের কাজগুলোসহ ফ্রি অক্সিজেন ব্যাংক, ফ্রি করোনা অ্যাম্বুলেন্স সার্ভিস, করোনা রোগীদের ফ্রি চিকিৎসা, মানবতার কৃষি, মানবতার পাঠশালাসহ নানান আয়োজন আমাদের রয়েছে। আর বিনামূল্যের এই বাজারের মডেলটি শুধু আমাদের বরিশালে বা দেশে না, দেশের বাইরেও প্রচুর সুনাম কুড়িয়ছে।

বাসদ জানায়, গত বছর এই মানবতার বাজার থেকে ২০ সহস্রাধিক মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছিল। আর এ বছর ৬ মে থেকে আমরা দ্বিতীয় দফায় মানবতার বাজার পরিচালনা শুরু হয়। ২ দিনে এই মানবতার বাজার থেকে ৫০০ শতাধিক শ্রমজীবী দঃস্থ মানুষকে খাদ্য সহায়তা দেয়া হয়েছে। এবারের কার্যক্রম বরিশাল নগরের অমৃত লাল দে কলেজ মাঠে পরিচালনা শুরু হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় দুইদিন পর গতকাল সন্ধ্যায় আমাদের মানবতার বাজার করতে দেয়ার বিষয়টিতে কর্তৃপক্ষ অপারগতা প্রকাশ করেছে। মানবতার বাজারটি অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ সরাসরি না বললেও বিভিন্ন সুত্র থেকে আমরা জানতে পেরেছি এক রাজনৈতিক দলের চাপের মুখে তারা এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে মণিষা চক্রবর্তী বলেন, আমরা আরও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগাযোগ করি এবং আমরা মানবতার বাজার পরিচালনা করার জন্য অনুরোধ করি। প্রথমে তারা খুশি হয়ে অনুমতি দিলেও পরবর্তীতে তারাও একই রাজনৈতিক চাপের কাছে নতি স্বীকার করেন ও প্রতিষ্ঠান ব্যবহার করতে দেয়ার ব্যাপারে অপারগতা প্রকাশ করেন।

তিনি বলেন, বরিশালের রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে বর্তমানে একমাত্র বাসদই ধারাবাহিকভাবে ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। এটা অনেকের কাছেই অস্বস্তির বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে আমরা মনে করি। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে প্রতিদ্বন্দ্বীতা মানে আমাদের কাছে ভালো কাজের প্রতিযোগিতা কিন্তু ক্ষমতাসীন ও প্রভাবশালী মহল এই প্রতিদ্বন্দ্বীতাতে ভালো কাজ বন্ধ করার ষড়যন্ত্রে পরিণত করেছে। নিজেদের অকর্মন্যতা ও গণবিছিন্ন চরিত্রকে না পাল্টে বরং তারা আমাদের কর্মকা-কে ক্ষতিগ্রস্ত করার জন্য ঘৃণ্য পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। কিন্তু আমাদের কর্মকা- এই ধরণের বাঁধা দিয়ে বন্ধ করা যাবে না, বরং এই বাঁধা আমাদের মনোবলকে আরও দৃঢ় করবে।

তিনি বলেন, ইতিপূর্বে আমরা বরিশালে করোনা আক্রান্ত রোগীদের জন্য বিনামূল্যে আইসোলেশন সেন্টার চালু করার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। কিন্তু কোন ভেন্যু না পাওয়ায় আমরা সেটা করতি পারিনি। তাই আমরা ঝুঁকি নিয়ে হলেও করোনা আক্রান্ত রোগীদের বাসায় বাসায় গিয়ে চিকিৎসাসেবা প্রদান করছি, কিন্তু আমাদের কার্যক্রম আমরা বন্ধ করিনি। গতবছরও আমাদের মানবতার বাজার উচ্ছেদের ঘৃণ্য অপচেষ্টা করা হয়েছিল, জনগণের প্রতিরোধের মুখে সেই সময় সেই ষড়যন্ত্রকারীরা সফল হতে পারেনি। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে আমাদের এই লড়াইয়ে আমরা জনগনকে পাশে চাই। আর ষড়যন্ত্রকারী মহলের প্রতি আহ্বান-অন্যদের ভালো উদ্যোগকে বাধাগ্রস্ত না করে নিজেরা ত্রাণ বিতরণ করুন, আরও ভালো কিছু করার চেষ্টা করুন।