বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী : অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী

বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী : অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী

অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেছেন, দেশরত্ন শেখ হাসিনা আমার ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস রেখে যে দায়িত্ব দিয়েছেন কমিউনিটি ক্লিনিক পরিচালনার জন্য, সেই দায়িত্ব আমি শতকরা ১০০ ভাগ অর্জন করতে আপনাদের সকলকে নিয়ে অগ্রসর হবো বলে বিশ্বাস করি। শেখ হাসিনা বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিকোণ থেকে জাতির পিতার স্বপ্ন কমিউনিটি ক্লিনিককে বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। এর সুফল বাংলার প্রান্তিক জনগোষ্ঠী পেতে শুরু করেছে। কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সংস্থা গঠনের উদ্দেশ্য হচ্ছে শেখ হাসিনার সাথে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সরাসরি যোগাযোগ হবে এই স্বাস্থ্য ব্যবস্থার মাধ্যমে। তাই কমিউনিটি ক্লিনিক হচ্ছে শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সরাসরি সংযোগ স্থাপনের একটি মাধ্যম এবং আমাদের দায়িত্বের মধ্যে এটা পড়ে।

আজ বুধবার বেলা সাড়ে ১১টায় রাজধানীর বাংলাদেশ মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলে (বিএমআরসি) আয়োজিত ‘জাতির পিতার স্বাস্থ্য ভাবনা এবং রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্যোগ’ শীর্ষক গোল টেবিল আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলী বলেন, সকল মানুষের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বলতে চাই 'বারবার দরকার, শেখ হাসিনার সরকার'। কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সফলতা নির্ভর করে কমিউনিটি গ্রুপের ওপর, যারা সার্বিকভাবে এটিকে দেখাশুনা করে। তার সাথে কমিউনিটি সাপোর্ট গ্রুপে যারা আছেন, তাদের দায়িত্ব হচ্ছে জনগণকে বুঝানো যে, এখানে কমিউনিটি ক্লিনিক আছে। এখান থেকে আপনারা কি কি সেবা গ্রহণ করবেন। এই কমিউনিটি গ্রুপ এবং সাপোর্ট গ্রুপের একজন জাতীয় সমন্বয়কারী হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একজন কর্মী শাহানা পারভীন এই দায়িত্ব পালন করছেন।
বাংলা একাডেমির সভাপতি সেলিনা হোসেন বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক নিয়ে যে আলোচনা হচ্ছে, এটি আমার কাছে দিগন্ত বিস্তারী স্বপ্ন। গণমানুষের সহযোগিতা দেওয়া, স্বাস্থ্য সেবা দেওয়া, এটি যেকোনো রাষ্ট্রের যিনি যখন ক্ষমতায় থাকবেন, এটি তার দায়িত্বের মধ্যে পরে। অনেকেই এটিকে উপেক্ষা করেছেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে কমিউনিটি ক্লিনিক আবিষ্কার করেছেন এবং প্রতিষ্ঠা করেছেন। এই প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দুঃখী মানুষেরা সেবা পাচ্ছে। এটা আমাদের কাছে অনেক বড় একটি দিক।

তিনি আরও বলেন, আমরা মনে করি, স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশে গণমানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষায় আমাদের সরকার যে দায়িত্ব পালন করছেন, এই দায়িত্ব নিয়ে আমাদের দিগন্ত বিস্তারী জায়গায় যাওয়া যায়। আমরা মনে করি স্বাস্থ্যসেবা, সুস্থ মানুষ, সামাজিক মূল্যবোধের জায়গায় অনেক বড় দিগন্ত তৈরি করে, সমাজকে উন্নত করে, রাষ্ট্রকে উন্নয়নের পথে নিয়ে যায়। সেই জন্য আমরা সুস্থ মানুষ চাই, তার অসুস্থতায় স্বাস্থ্য সেবা চাই এবং সবকিছু মিলিয়ে এই স্বাস্থ্য সেবাতে আমরা ধন্য হই। আমাদের এই ধন্য হওয়ার জায়গা, আমরা যখন সাধারণ মানুষের দিকে তাকাই, তখন পূর্ণ হয়ে যাই। আমি মনে করি কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবা আমাদের জনগণকে বড় জায়গায় পৌঁছে দিবে। তার স্বাস্থ্যকে সুস্থ রেখে তাকে জনজীবনে বৃহৎ পরিসরে স্থাপন করবে। এটাই হোক কমিউনিটি ক্লিনিকের স্বাস্থ্য সেবার মূলমন্ত্র।

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএসএমএমইউ এর ইমেরিটাস অধ্যাপক অধ্যাপক ড. এ বি এম আব্দুল্লাহ বলেন, আমি বিশ্বাস করি বঙ্গবন্ধু যদি এই দেশটাকে না বানাতেন তাহলে আমি আমার এই অবস্থানে আসতে পারতাম না। আজকের আলোচনার যে মূল প্রতিপাদ্য বিষয় “জাতির পিতার স্বাস্থ্য ভাবনা এবং রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার কমিউনিটি ক্লিনিক উদ্যোগ" এই আলোচনায় আমি একটি কথা বলতে চাই, আমার একটি লেখাতেও আমি বলেছিলাম, বঙ্গবন্ধুর হাতেই স্থাপিত হয়েছে দেশের স্বাস্থ্য খাতের মূল স্তম্ভ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। আর তার এই স্বপ্নকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন তার সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বঙ্গবন্ধু যখন দেশের দায়িত্ব নেন তখন দেশ ছিলো একদম ধ্বংসপ্রাপ্ত, বিপর্যস্ত অবস্থায়। এমন কঠিন একটি পরিস্থিতিতে দেশের দায়িত্ব নিয়ে তিনি মানুষের যে পাঁচটি মৌলিক অধিকার তার মাঝে অগ্রাধিকার দিয়ে স্বাস্থ্যকে পুনর্গঠিত করেন। কমিউনিটি ক্লিনিকের কারণে গ্রামের প্রান্তিক অঞ্চলের মানুষ খুব সহজেই স্বাস্থ্য সেবার সুযোগ পাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর দেখানো স্বপ্নকে তার কন্যা এক এক করে বাস্তবায়িত করে যাচ্ছেন।

করোনা প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, আমাদের স্বাস্থ্যখাত এখন খুব ভালো অবস্থানে রয়েছে একথা স্বীকার করতেই হবে। কারণ এই মহামারী করোনাভাইরাস আমরা যেভাবে মোকাবেলা করলাম, সেটা অনেক দেশের চেয়ে খুব ভালোভাবেই করেছি। জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্ব আমরা টিকা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছি। টিকা কার্যক্রম এত সুন্দরভাবে পরিচালিত হচ্ছে। আগামী এক থেকে দুই মাসের মাঝে ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ মানুষ টিকা পেয়ে যাবে। এছাড়া আমাদের দেশে টিকা উৎপাদনের ব্যাপারে জননেত্রী শেখ হাসিনা যথেষ্ট সচেতন। তার নেতৃত্ব আমাদের দেশে টিকা উৎপাদন হবে এবং শুধু তাই নয় এই টিকা আমাদের চাহিদা পূরণ করে বিদেশেও রপ্তানি হবে। প্রয়োজনে যারা গরিব রাষ্ট্র আছে তাদেরকেও আমরা সহযোগিতা করতে পারবো। জাতির পিতা দেশকে নিয়ে যে চিন্তা করতেন জননেত্রী শেখ হাসিনা সবকিছুই এক এক করে সব বাস্তবায়িত করে চলেছেন। বঙ্গবন্ধুর যে স্বপ্ন তা তিনি এক এক করে বাস্তবায়ন করে যাবেন।

বিএসএমএমইউ এর উপাচার্য অধ্যাপক ডা. শরফুদ্দিন আহমেদ বলেন, বঙ্গবন্ধু চিন্তা করতেন দেশের রোগী কিভাবে দেশে চিকিৎসা করা যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই লক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। কমিউনিটি ক্লিনিককে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যেখানে নিয়ে গেছেন সেটি অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে। আমরা শেখ হাসিনা কমিউনিটি ক্লিনিক ইন্সটিটিউট প্রতিষ্ঠা করতে চাই।

কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. সৈয়দ মোদাচ্ছের আলীর সভাপতিত্ব এবং সঞ্চালনায় আলোচনা সভার শুরুতেই কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ন্যাশনাল কো-অর্ডিনেটর শাহানা পারভীন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন এবং কবিতা পাঠ করেন। এছাড়াও আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন পরিপ্রেক্ষিত এর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ বোরহান কবীর, কমিউনিটি ক্লিনিক স্বাস্থ্য সহায়তা ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) তুলশী রঞ্জন সাহা, এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অধ্যাপক ডা. এহসানুল কবির জগলুল।