সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন সিসিইউতে

সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন সিসিইউতে

সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদকে (৯২) ‘গুরুতর’ অসুস্থ অবস্থায় ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালের (সিএমইচ) ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিট- সিসিইউতে ভর্তি করা হয়েছে।

সাবেক এ প্রধান বিচারপতির শারীরিক অবস্থা ‘সংকটাপন্ন’ বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন তার জামাতা অধ্যাপক আহাদুজ্জামান মোহাম্মদ আলী।

তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘অবস্থা ভালো না, সংকটাপন্ন বলা যায়। সিসিইউতে আছেন। এক সপ্তাহের ওপরে হাসপাতালে সিএমএইচে ভর্তি। একাধিকবার সিসিইউতে নেওয়া হয়েছে।’

২০০১ সালে রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব থেকে অবসরে যাওয়ার পর গুলশানের বাসভবনে অনেকটা নিভৃত জীবন যাপন করছিলেন সাহাবুদ্দীন আহমদ। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন অসুস্থতায় ভুগছিলেন।

তার বাড়ির ব্যবস্থাপক আবদুল মোতালিব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি থেকে শারীরিক অবস্থা খারাপ হলে সাবেক রাষ্ট্রপতিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। করোনাভাইরাস সংক্রমণের সময়ে তিনি বেশ সতর্কতার সঙ্গে জীবন যাপন করেছেন। এখনো করোনা আক্রান্ত নন তিনি।

সাবেক রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমদের দুই ছেলে গুলশানের বাসায় বাবার সঙ্গেই থাকেন। তার দুই মেয়ে বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। নব্বইয়ের আন্দোলনে স্বৈরশাসক এইচ এম এরশাদ সরকারের পতনের নাটকীয়তার মধ্যে আকস্মিকভাবে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে আসেন তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাহাবুদ্দীন আহমদ।

এরশাদ পদত্যাগ করার পর রাষ্ট্রপতির পদে কে আসবে, নির্বাচন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে থাকবেন- সেই প্রশ্নে আওয়ামী লীগ, বিএনপিসহ গণ-অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া দলগুলো (তিন জোট) একমত হতে পারছিল না। পরে প্রধান বিচারপতিকে সেই দায়িত্ব দেওয়ার বিষয়ে সমঝোতা হয়। আবার সুপ্রিম কোর্টে ফেরার শর্ত দিয়ে সাহাবুদ্দীন আহমদ তাতে রাজি হন।

মওদুদ আহমেদ উপ-রাষ্ট্রপতির পদ থেকে ইস্তফা দিলে সেই দায়িত্বে আসেন সাহাবুদ্দীন। ৬ ডিসেম্বর এরশাদ ক্ষমতা ছাড়লে সাহাবুদ্দীন হন রাষ্ট্রপতি। পরে তার নেতৃত্বাধীন নির্দলীয় সরকারের অধীনে ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি পঞ্চম জাতীয় সংসদ নির্বাচন হয়। নির্বাচনের পর আবার প্রধান বিচারপতির পদে ফেরেন তিনি। চাকরির মেয়াদ শেষে ওই পদ থেকেই অবসরে যান।

১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর সংসদীয় সরকার পদ্ধতিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সাহাবুদ্দীন আহমদ। ২০০১ সালের ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত তিনি সেই দায়িত্বে ছিলেন।

দীর্ঘদিন বার্ধক্যজনিত রোগে ভুগে ২০১৮ সালে ৮০ বছর বয়সে মারা যান সাহাবুদ্দীন আহমদের স্ত্রী আনোয়ারা আহমদ। তাদের পাঁচ সন্তানের মধ্যে সবার বড় ড. সিতারা পারভীন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক ছিলেন। ২০০৫ সালের ২৩ জুন যুক্তরাষ্ট্রে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি।


পিআর/ডিআর