১৫ দফা দাবিতে গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে সারা দেশে অবিরাম নৌযান ধর্মঘট শুরু হয়েছে। নৌযান শ্রমিকদের ৬টি সংগঠনের জোট নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এ ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। তবে এর আওতায় থাকছে না যাত্রীবাহী নৌযান। মঙ্গলবার রাত থেকে সব ধরেণের নৌযান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে চারটার দিকে যাত্রীবাহী নৌযানকে ধর্মঘটের বাইরে রাখার ঘোষণা দেওয়া হয়।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি মো. শাহ আলম জানান, ১৫ দফা দাবি আদায়ে গত ১৫ এপ্রিল ধর্মঘট শুরু হয়েছিল। ধর্মঘটের প্রথম দিন শ্রমিক অধিদপ্তর, মালিক ও শ্রমিক পক্ষ ত্রিপাক্ষীয় বৈঠক করে দাবিগুলো বাস্তবায়নে ৪৫ দিনের সময় নেয় নৌযান মালিকপক্ষ। তাদের আশ্বাসে ওইদিন ধর্মঘট প্রত্যাহার করা হয়। কিন্তু গত মঙ্গলবার পর্যন্ত একটি দাবিও বাস্তবায়ন করেননি মালিকরা। এজন্য গত ২০ জুলাই সভা করে ২৩ জুলাই রাত ১২টা থেকে সারাদেশে অবিরাম শ্রমিক ধর্মঘট করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সারা দেশে নৌযান ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের আঞ্চলিক কমিটির সভাপতি মাস্টার শেখ আবুল হাসেম গতকাল বুধবার বিকেলে বলেন, ধর্মঘটের বিষয় নিয়ে ঢাকায় বৈঠক হয়েছে। দাবি আদায়ে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে যাত্রীবাহী নৌযান ধর্মঘটের বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এর আগে দুপুর ১২টায় শেখ আবুল হাসেম জানান, শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকে গোটা বরিশাল বিভাগের অভ্যন্তরীণ রুটে কোন লঞ্চ চলাচল করেনি। আর গত রাতে ঢাকা থেকে যে লঞ্চগুলো বরিশালসহ বিভিন্ন গন্তব্যের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেছিলো, সেগুলো যথাসময়ে ঘাটে এসে পৌছেছে। সকাল থেকে সব লঞ্চই ঘাটে নোঙর করে রাখা হয়েছে।
এদিকে কর্মবিরতির কারণে সকাল থেকে বরিশালে লঞ্চ চলাচল না করায় যাত্রীরা বেশ ভোগান্তিতে পড়েছে। অনেক যাত্রীই ঘাটে এসে লঞ্চ না পেয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে মেহেন্দিগঞ্জের বিভিন্ন ইউনিয়নের যাত্রীরা জানান, তাদের উপজেলার সাথে সড়কপথে কোন যোগাযোগ ব্যবস্থা না থাকায় লঞ্চ-শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে তারা বিপাকে পড়েছেন।
শ্রমিকদের দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- বেতনভাতা বৃদ্ধি করে যুগোপযোগী করা, সামাজিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, নৌযান শ্রমিকদের হামলার বিচার, নৌপথে চাঁদাবাজি বন্ধ, মেরিন আইনের যথাযথ বাস্তবায়ন, মৃত নৌযান শ্রমিকদের ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া।