ঘূর্ণিঝড় ‘ফনী’র প্রভাবে বরিশালে দমকা ও ঝড়ো হাওয়া এবং ভারী বৃষ্টি হয়েছে। গত শুক্রবার রাত আড়াই টার দিকে বরিশালের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দমকা ও ঝড়ো হওয়ার সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিলো ঘন্টায় ৭৬ কিলোমিটার। ঝড়ের সময় গাছ চাপা পড়ে বরগুনার পাথারঘাটায় ২জন পুরুষ এবং ভোলা সদরে একজন নারীর মৃত্যু হয়েছে।
শুক্রবার দুপুর ২টার পর থেকে গতকাল শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত বরিশালে ৮৩ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে স্থানীয় আবহাওয়া অফিস। ‘ফনী’র প্রভাবে সম্ভাব্য দুর্ঘটনার আশংকায় গতকালও বরিশাল নদী বন্দরসহ সারা দেশে সকল ধরণের নৌ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বলবৎ রেখেছে বিআইডব্লিউটিএ। সাগর ও নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় পটুয়াখালীর মীর্জাগঞ্জ ও কলাপাড়ায় এবং বরিশালের উজিরপুরের সাতলা-বাঁগধা এলাকা বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে বহু গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ওইসব এলাকার মানুষ সরকারি আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন।
বিভাগের ১ হাজার ৮৩৬টি আশ্রয় কেন্দ্রে শুক্রবার রাত পর্যন্ত ৪ লাখ ৩৭ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এছাড়া আরও সাড়ে ৩ লাখ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে (আশ্রয় কেন্দ্রে নয়)।
শুক্রবার রাতভর দমকা ও ঝড়ো হাওয়ার এবং ভারী বৃষ্টির পর গতকাল সকাল থেকেও দমকা ও ঝড়ো হওয়া বয়ে যায়। থেমে থেমে বৃষ্টি হয়।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস জানান, শুক্রবার রাতে উপকূলীয় এলাকার উপর বয়ে যাওয়া ঝড়ের সময় পাথরঘাটা উপজেলায় গাছ চাপা পড়ে দুই জন এবং ভোলা সদরে একজনসহ মোট ৩জন নিহত হয়েছে। নিহত প্রত্যেকরে পরিবারকে তাৎক্ষণিক ২০ হাজার টাকা করে অর্থ সহায়তায় দেওয়া হয়েছে।
দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে বরিশালসহ সারা দেশে আজ তৃতীয় দিনের মতো সব ধরণের নৌ চলাচল বন্ধ রয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত এই আদেশ বলবৎ থাকবে বলে জানিয়েছেন বরিশাল নদী বন্দর কর্মকর্তা আজমল হুদা মিঠু সরকার।
তবে বরিশালের উপর দিয়ে বিপদ প্রায়ই কেটে গেছে এবং ক্রমেই আবহাওয়া পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে বলে আশার কথা শুনিয়েছেন বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস। সম্ভাব্য দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য ২ হাজার ৩০০ মেট্রিক টন চাল এবং নগদ ৩৭ লাখ টাকা বরাদ্দ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।