“খুনীদের বাঁচাতে আমার মেয়েকে জবাই দিয়েছে ওরা”

রিফাত শরীফের খুনীদের বাঁচাতে আমার মেয়েকে জবাই দিয়েছে ওরা। তাই আমরা কোরবানি দিতে পারিনি। আমার মেয়ে পোলাও-গোস্ত খাবে আমি চেয়ে চেয়ে দেখবো। আক্ষেপের সাথে এসব কথা বলেছেন আয়শা সিদ্দিকা মিন্নির বাবা মোজাম্মেল হোসেন কিশোর। কিশোর জানান, জামিনের কাগজপত্র ডাকযোগে বরগুনার আদালতে পৌছালে মিন্নিকে আমার হাতে বুঝিয়ে দেয়া হবে।
মিন্নির মা মিলি আক্তার বলেন, আমার মেয়েটার কষ্ট আমাদের সহ্য হয়না। যে মেয়েকে ছাড়া একটা ঈদও আমরা করি নাই সেই মেয়ে এখন কারাগারে। প্রতিবছর কতো আনন্দ ফুর্তি হয়, সবাই একসাথে ঈদ পালন করি কিন্তু আমার মেয়েটা বিনা অপরাধে বন্দি থাকায় কিছুই করতে পারি নাই। শুধু আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করা ছাড়া আমাদের আর কিছু করার নেই।
রিফাত হত্যা মামলায় এখন পর্যন্ত ১৫ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত আসামীরা হচ্ছে- রিফাত ফরাজী, রিশান ফরাজী, চন্দন সরকার, রাব্বি আকন, হাসান, অলি, টিকটক হৃদয়, সাগর, কামরুল হাসান সাইমুন, আরিয়ান শ্রাবন, রাফিউল ইসলাম রাব্বি, তানভীর, নাজমুল হাসান, রাতুল সিকদার ও আয়শা সিদ্দিকা মিন্নি।
মামলার এজাহারভুক্ত ৫ নম্বর আসামী মুসা বন্ড, ৭ নম্বর আসামী মোহাইমিনুল ইসলাম সিফাত, ৮ নম্বর আসামী রায়হান ও ১০ নম্বর আসামী রিফাত হাওলাদারকে এখনো পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। প্রধান আসামী নয়ন বন্ড গত (২ জুলাই) পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছে।
গত ২৬ জুন সকালে প্রকাশ্যে বরগুনা সরকারি কলেজ গেটের সামনে রিফাতকে কুপিয়ে আহত করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় বরিশাল নেওয়ার পর তিনি মারা যান। এ ঘটনায় রিফাতের বাবা আবদুল হালিম দুলাল শরীফ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে বরগুনা থানায় হত্যা মামলা করেছে।
নিহত রিফাত শরীফের বাবা দুলাল জানান, মিন্নির জামিন হয়েছে সেটা আদালতের ব্যাপার। কিন্তু রিফাত হত্যায় মিন্নির সম্পৃক্ততা শতভাগ রয়েছে। তাই পরবর্তীতে প্রমান অনুযায়ী আদালত আসামীদের বিচার করবে বলে জানান তিনি।
স্থাণীয় মানবাধিকার কর্মী চিত্ত রঞ্জন শীল ও হোসনেয়ারা হাসি জানান, একজন মানুষ আদালতে জামিন পাওয়া এটি তার আইনি অধিকার। তাছাড়া মিন্নি একজন কিশোরী নারী হিসেবে তার জামিনের অধিকার আরো বেশী। যেকারনে হাইকোর্ট তাকে জামিন দিয়েছে। মিন্নি যদি অপরাধী হয়ে থাকে তাহলে কোর্ট তার বিচার করবে।
এদিকে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও বরগুনা থানার পরিদর্শক মো. হুমায়ুন কবির বলেন, সম্পূর্ণ প্রতিবেদন তৈরী করতে না পারায় আদালতে পুলিশ প্রতিবেদন দাখিল করা সম্ভব হয়নি।