গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম এমপি বলেছেন, গণপূর্ত অধিদতরের প্রকৌশলীদের বিশেষায়িত পদ এবং শিক্ষা যাতে কোনভাবেই প্রশ্নবিদ্ধ না হয় সে বিষয়টি সতর্কতার সাথে মনে রাখতে হবে। আমি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আপনাদের সুখ-দুঃখকে ভাগাভাগি করে নেয়ার জন্য প্রস্তুত আছি।
বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় গণপূর্ত অধিদফতরের সম্মেলন কক্ষে গণপূর্ত অধিদফতরের তিন দিনের বার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীদের উদ্দেশে গণপূর্তমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, ‘কোন কোন জেলায় প্রকৌশলীরা বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের প্রভাবে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে পড়েন। যতদিন আমি গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে আছি, আমাদের একজন কর্মকর্তাকে রাজনৈতিক বা অন্য কোন ক্ষমতা দেখিয়ে প্রভাবান্বিত বা হয়রানি করতে চাইলে আমাকে জানাবেন, আমি পাশে দাঁড়াব। টেন্ডার এবং অন্যান্য কর্মকাণ্ডে কাজ শেষ না করে দ্রুত বিল দিতে হবে, জোরপূর্বক তার লোককে টেন্ডার দিতে বাধ্য করা হবে-এই প্রবণতা কোনভাবেই প্রধানমন্ত্রীর নীতিমালার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ নয় এবং আমি নিজে এটাকে কোনভাবে অনুমোদন করবো না। আপনাদের ভীত সন্ত্রস্ত্র হবার কোনও কারণ নেই।
মন্ত্রী আরও বলেন, গণপূর্ত অধিদফতরের অধিকাংশ কর্মকর্তারাই সততা, স্বচ্ছতা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। তার ভেতরে কিছু ব্যত্যয়ও ঘটেছে। রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ঘটনা আমাদের ইমেজকে ভীষণভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। আমি সবখানেই বলি রূপপুর প্রকল্পের একটি ঘটনা দিয়ে গোটা অধিদফতর ও মন্ত্রণালয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না। অনেক সময় কেউ কেউ অতি লোভী হয়ে গোটা ডিপার্টমেন্টের ভাবমূর্তি ধ্বংস করার প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত হয়ে পড়েন।
মন্ত্রী প্রকৌশলীদের উদ্দেশে বলেন, আমি অতীতে এমপি-মন্ত্রী ছিলাম না। কিন্তু আমার জীবনে আন্দোলন, সংগ্রাম ও লড়াইয়ের কারণে মার্শাল ল সরকারের আমলে জেল খাটতে হয়েছে। আমি কিন্তু কোনদিন মুচলেকা দিয়ে বের হইনি। এই শক্ত অবস্থানে থাকা আত্ববিশ্বাসী মানুষ আমি। টিম ওয়ার্কে আপনারা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ উইং। আপনাদের এটাকে ধারণ করতে হবে।
শ ম রেজাউল করিম বলেন, এ দেশটা ৩০ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে পাওয়া। এ দেশের জন্য অনেক মানুষ জীবন দিয়েছেন। বাঙারি জাতির অধিকার আদায়ের জন্য আমাদের জাতির জনক পাকিস্তানের সাথে সমঝোতা করেন নি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অন্তত ১৯ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছিলেন, কিন্তু একবারের জন্যও তিনি শঙ্কিত হয়ে অধিকার প্রশ্নে ছাড় দেন নি। কর্তব্য পালনে আমি চাই স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি। অনিয়মের পরিসর থেকে সকলকে বেরিয়ে আসতে হবে। আপনারা মর্যাদাপূর্ণ পদ পান, পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা পান, বেতন-ভাতা পান। কোনভাবেই যেনো চিহ্নিত না হন, অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সাথে আপনারা সম্পৃক্ত। এক দুজনের জন্য কেনো বদনামের বোঝা আমাদের কাঁধে আসবে। তাদের উদ্দেশে বলছি, আসুন আমরা আত্বশুদ্ধি করি, আত্বসমালোচনা করি। আমার ভুল-ত্রুটিকে শুধরে নেই। তাহলে এই ডিপার্টমেন্টের ভাবমূর্তি অনেক উজ্জ্বল হবে’