অপরাধ দানাবাধার আগেই সমাধানের উপায় আছে : পুলিশ কমিশনার

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, যে কোন অপরাধ সংঘটিত হওয়া কিংবা অপরাধ দানাবাধার আগেই তা সমাধানের উপায় আছে। এব্যাপারে ওপেন হাউজ ডে প্রো-অ্যাকটিভ পুলিশিং এর একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে অপরাধ দানাবাঁধার আগেই বিট পুলিশিং কার্যালয়ে শান্তিপূর্ণ সামাজিক সমাধানের উপায় রয়েছে।
বুধবার বেলা ১১টায় বরিশাল বিমানবন্দর থানা আয়োজিত ওপেন হাউজ ডে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার।
এসময় তিনি বিগত ওপেন হাউজ ডে'তে উপস্থাপিত ভুক্তভোগীদের সমস্যার বিপরীতে গৃহীত পদক্ষেপ পর্যালোচনায় দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সরাসরি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং উপস্থিত সকল ভুক্তভোগীর সমস্যা শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করেন।
পুলিশ কমিশনার বলেন, ‘এই ওপেন হাউজ ডে'তে আমরা তিন ধরনের আবেদন গুরুত্ব সহকারে শুনে থাকি ; ভুক্তভোগীর কথা শুনি, সমাজের শৃঙ্খলা রক্ষায় সাধারণ জনগণের গঠনমূলক পরামর্শ শুনি. এমনকি আমাদের কোন পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনিয়ম রয়েছে কিনা তা সরাসরি আপনাদের কাছ থেকে শুনে থাকি এবং সেই অনুযায়ী গৃহীত ব্যবস্থা সকলের সামনে পর্যালোচনা করে থাকি। আপনার নিজের প্রয়োজন না থাকলেও সমাজের প্রয়োজনে এই ওপেন হাউজ ডে তে নিয়মিত আসবেন। যারা বিট পুলিশিং কার্যক্রম সম্পর্কে জানে না তাদের এবিষয়ে অবহিত করে তাদেরকেও ওপেন হাউস ডের কর্মসূচিতে নিয়ে আসবেন।’ তিনি বলেন, জমি থেকে বা জমির বিরোধ থেকে ফৌজদারি অপরাধ সংঘটিত হয়, ফৌজদারি মামলার অবতারণা জমিজমা থেকেই বেশি হচ্ছে। ওপেন হাউজ ডের মাধ্যমে আমরা এ বিষয়ে জানতে পারি। ওপেন হাউজ ডে, বিট পুলিশিং কার্যালয়সহ বিভিন্ন মাধ্যমে এ সংক্রান্ত যে আবেদন-নিবেদনগুলো আমরা পেয়ে থাকি, তা সমাজে প্রো-অ্যাকটিভ পুলিশের অংশবিশেষ, যা সমাজে অপরাধ দানা বাধার আগেই নির্মূল করার প্রক্রিয়া। অপরাধ যাতে সংঘটিত হতে না পারে সেজন্য শুরুতেই হস্তক্ষেপ করে তাদেরকে আইনের প্রতি আস্থাশীল হওয়ার পরামর্শ দেই, এবং সচেতন করি তাহলে এগুলো থেকে বড় ধরণের কোন আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির উদ্ভব হবে না।
তিনি বলেন, সমাজে একটা পুরনো ধারণা ছিল, যেমনেই হোক জমি আমার দখলে রাখতে হবে। দখলদারকে বিতাড়িত করার পুরনো সংস্কৃতি সমাজ থেকে তুলে দিতে হবে। বিট পুলিশিং হতে পারে এই সমস্ত সমস্যাগুলো শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের সামাজিক উপায়। ন্যায় সঙ্গত কোন দাবি থাকলে, ন্যায় সঙ্গত নির্ধারিত যে পথ আছে সেই পথে হাঁটতে হবে। পুলিশ একা কোন কাজ করতে পারে না। বস্তুনিষ্ঠ তথ্যের ভিত্তিতে সংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণের সম্পৃক্ততা, সহযোগিতা সম্মিলিত উদ্যোগ নিয়ে একটি নিরাপদ সমাজ উপহার দেয়া সম্ভব।
উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর মো. খাইরুল আলম বলেন, পুলিশ সম্পর্কে আপনাদের যে পুরনো ধারণা ছিলো, আমরা আর সেগুলোর মাঝে সীমাবদ্ধ নেই। ভুক্তভোগীর সেবা ও পুলিশের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে ওপেন হাউজ ডে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যাঁরা জানেন না, আসেন না তাদেরকে গিয়ে এবিষয়ে বেশি বেশি অবগত করবেন। বিট পুলিশিং, কমিউনিটি পুলিশিং ও ওপেন হাউজ ডে এর মাধ্যমে আমরা সমাজ থেকে সকল প্রকার অপরাধ দূর করতে চাই। এ জন্য জনসাধারণকে পুলিশের কাছে এলাকার চলমান ঘটনা সম্পর্কে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করতে হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। মাদকের বিরুদ্ধে সবাইকে আরো সোচ্চার হতে হবে। সব সময় সকল তথ্য পুলিশের কাছে থাকে না। তাই অপরাধ মুক্ত সমাজ গড়তে পুলিশকে সহযোগিতা করুন।
অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার উত্তর রুনা লায়লা বলেন, সবার সহযোগিতার মাধ্যমে নিজেরা সচেতন হতে পারলে একটি নিরাপদ সমাজ উপহার দিতে পারবো।
বিমানবন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ মো জাহিদ বিন আলম-এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওপেন হাউস ডেতে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, বিমানবন্দর থানার সহকারী পুলিশ কমিশনার নাসরিন জাহান, পুলিশ পরিদর্শক তদন্ত শাহ মোহাম্মদ ফয়সাল,প ুলিশ পরিদর্শক অপারেশন বিপ্লব। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, বিমানবন্দর থানার অফিসারবৃন্দ, কমিউনিটি পুলিশিং এর সদস্যবৃন্দসহ ওয়ার্ডের সর্বস্তরের জনগণ ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ।