করোনামুক্ত বিশ্ব চান পাপন

করোনামুক্ত বিশ্ব চান পাপন

করোনা ভাইরাস আতঙ্কে শঙ্কিত, উদ্বিগ্ন গোটা বিশ্ব। করোনায় এরই মধ্যে প্রাণহানি ঘটেছে সহস্রাধিক মানুষের। বাংলাদেশে অন্যসব জমায়েত, সমাবেশ-জনসমাগম আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আজ দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে স্থগিত করা হলো সব ধরনের ক্রিকেট খেলাও।

বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন সোজা জানিয়ে দিয়েছেন, ‘এখন গোটা বিশ্ব ও দেশের যা অবস্থা তা, খেলা উপযোগি পরিবেশ না। আসলে এটা খেলার সময় না।

এদিকে প্রথমে শোনা গিয়েছিল যে, আগামী ৩১মার্চ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগ। গতকাল আনুষ্ঠানিকভাবে লিগ বন্ধের ঘোষণা দিতে গিয়ে বিসিবি প্রধান আরও একধাপ এগিয়ে দিয়েছেন।

তার ব্যাখ্যা, ‘আসলে কেউ বলতে পারছেন না, বা বলার কোনই অবকাশ নেই যে, অমুক দিন সবকিছু ভাল হয়ে যাবে। ৩১ মার্চের আগে পরিস্থিতি ভাল হয়ে গেলে বলা যেত ওইদিন থেকে আবার লিগ শুরু হবে; কিন্তু তা বলার কোনোই সুযোগ নেই। তাই ঠিক বলা যাচ্ছে না, লিগ আবার কবে থেকে শুরু করা যাবে। তবে তিনি আনুমানিকভাবে একটা সময় সীমা বেঁধে দিয়েছেন। তার ধারনা ১৫ এপ্রিলের আগে লিগ শুরি করা কঠিনই হবে।’

এদিকে ওই সময়ে লিগ শুরু হলে জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা খেলতে পারবেন কিনা? বোর্ড তাদের লিগ খেলার অনুমতি দেবে কি না? সেটাও দেখার। কারণ করোনার কারণে অনিশ্চিত হলেও মে এবং জুনে জাতীয় দলের দুটি অ্যাসাইনমেন্ট আছে। প্রথমটি মে মাসে। পরেরটি জুনে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হোম সিরিজ।

এর মধ্যে আয়ারল্যান্ডের সাথে রয়েছে তিন ম্যাচের ওয়ানডে আর চার ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ। ১৪ মে, বৃহস্পতিবার, বেলফাস্টে হবে প্রথম ওয়ানডে। তারপর দ্বিতীয় ম্যাচ : ১৬ মে, শনিবার, বেলফাস্ট। আর ১৯ মে, মঙ্গলবার ওই বেলফাস্টেই তৃতীয় ওয়ানডে।

এছাড়া ২২, ২৪, ২৭ ও ২৯ মে ইংল্যান্ডের মাটিতে চার টি-টোয়েন্টি ম্যাচ হবার কথা। আর তারপর জুনে ঢাকার শেরে বাংলা ও চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে আসার কথা অস্ট্রেলিয়ার। বর্তমান অবস্থায় ওই দুই সিরিজ নিয়েও আছে রাজ্যের সংশয়।
আর ক্রিকেটাররা সত্যি ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত খেলা ও ট্রেনিংয়ের বাইরে থাকলে ওই সিরিজ দুটিতে ম্যাচ ফিটনেস ক্ষতিগ্রস্ত হবে কি না? তা নিয়েও জেগেছে সংশয়। যেহেতু প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ। ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগত পর্যায়ে নিজের বাড়ি ছাড়া জিমে যাওয়া এবং শেরে বাংলায় এসে ফিজিক্যাল ট্রেনিং ও ক্রিকেটীয় প্রস্তুতি নেয়া- সব বন্ধ থাকবে।

তাতে করে কি ক্রিকেটারদের প্রস্তুতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে না? বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন জানান, এখন করোনা ভাইরাসে দেশ ও বিশ্বের যা অবস্থা, তাতে কোনরকম খেলাধুলার সুযোগ নাই। তাই কি হবে না হবে, না ভেবে পরিস্থিতির উন্নতি কামনাই শেষ কথা।

বিসিবি সভাপতি বলেন, ‘এখন যে পরিস্থিতি সেটা যদি উন্নতি না করে তাহলে তো খেলাধুলার কোনো সুযোগ নাই। পরিস্থিতিটা কি রকম দাঁড়ায় সেটার উপর নির্ভর করছে। আমরা কেউ নির্দিষ্ট তারিখ দিয়ে কিছু বলতে পারবো না, কবে এটা থেকে মুক্তি পাবে এই পৃথিবী। শুধু বাংলাদেশেই নয় বিশ্বের কোনো দেশ কবে মুক্তি পাবে বলা যাচ্ছে না। তবে আমরা আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব এটাকে কোয়ারেন্টাইন করতে পারি তত দ্রুত এটা থেকে বাঁচতে পারবো।’

বিসিবিতে সাংবাদিকদের আসা-যাওয়া নিয়ে যা বললেন পাপন

আগেই জানা দক্ষিণ আফ্রিকান ক্রিকেট বোর্ড, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড বিসিসিআই আর পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য ক্রিকেট এসোসিয়েশন সিএবির অফিস বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ওই সংশ্লিষ্ট বোর্ড স্টাফদের নিজ নিজ বাসা থেকে দরকারি কাজ করতে বলা হয়েছে।

এখন প্রশ্ন উঠেছে বিসিবিতে কি হবে? বিসিবিও কি ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড ও সিএবিকে অনুসরণ করবে? এমনিতেই মাঠের সব ধরনের ক্রিকেট খেলা বন্ধ।
বোর্ড অফিসও যদি বন্ধ হয়ে যায়, তখন কি এখনকার মত বিসিবিতে সাংবাদিকরা অবাধে আসতে পারবেন? না কোনরকম নোটিশ জারি করা হবে? বিসিবি কি কোনোরকম নোটিশ দেয়া হবে? জানতে চাইলে বিসিবি প্রধান জানান, বিষয়টি আসলে স্পর্শকাতর।

তার ব্যাখ্যা, ‘আমি যদি বলি তো আসবেন, আর কারো যদি হয় (করোনা আক্রান্ত) তো বলবেন আমার জন্য। আর আমি যদি বলি আসবেন না তাহলে বলবেন আমাদের ঢোকা নিষিদ্ধ।’