অভিভাবকহীন বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঁচ মাস ধরে অভিভাবকহীন হয়ে রয়েছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য থাকা স্বত্বেও কিছু বাধ্যবাধকতা থাকায় অনেক কাজ করা থেকে বিরত আছে যা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সমস্যা, শিক্ষা ও উন্নতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
গত ২৯ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপসচিব হাবিবুর রহমানের স্বাক্ষরীত এক বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড.এস এম ইমামুল হককে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়ে তাকে অপসারণ করা হয়। তখন থেকেই অভিভাবক শূণ্য।
বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ও ভিসি বিরোধী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক লোকমান হোসেন বলেন, শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন একজন স্বৈরাচারী, দুর্নীতিবাজ উপাচার্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন। এ আন্দোলন ছিলো স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মুক্তির আন্দোলন, নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার সংগ্রাম। আমরা দীর্ঘ ৩৬ দিন অহিংস আন্দোলনের মাধ্যমে প্রমাণ করেছি যে আমরা ছিলাম ন্যায়ের পক্ষে, স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তির পক্ষে। এ কারণেই আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি এবং দেশরত্ন, মমতাময়ী, আমাদের সুযোগ্য প্রধানমন্ত্রী সেই স্বৈরাচারী উপাচার্যকে অপসারণ করেছেন। এইজন্য আমরা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির প্রতি কৃতজ্ঞতা ও শ্রদ্ধা নিবেদন করছি।
তিনি আরো বলেন, আমরা ২৯ শে এপ্রিল ২০১৯ তারিখে উপাচার্যের অপসারণ/ছুটির নোটিশ পাই। সেই থেকে উপাচার্যের সকল কার্যক্রম রুটিন দায়িত্ব হিসেবে আমাদের ট্রেজারার স্যার ড.এ কে এম মাহবুব হাসান পালন করছেন। কিন্তু তার সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্য পরিচালনা করতে পারছেন না। এমতাবস্থায় আমাদের শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপনা সংক্রান্ত যাবতীয় কাজ পিছিয়ে পরছে এবং শিক্ষার্থীদেরও অনেক কাজে জটিলতার শিকার হতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষার্থীই চায় বিশ্ববিদ্যালয় যেন সঠিকভাবে পরিচালিত হয়, সকল শিক্ষার্থী যেন নিজের শিক্ষা এবং শিক্ষা সংশ্লিষ্ট কার্যক্রমে সঠিকভাবে অংশ নিতে পারে। নতুন উপাচার্যের নিয়োগ ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়ে এই গতিশীলতা সৃষ্টি হবে না। তাই উপাচার্যের নিয়োগ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম গতিশীল করার লক্ষ্যে আমাদের মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও অগ্রনায়ক, মমতাময়ী, দেশরত্ন এবং সফল মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দ্রুত শিক্ষার্থীবান্ধব ও মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের উপাচার্য নিয়োগ দিবেন।
বলা হয়ে থাকে, ড.এস এম ইমামুল হক ২৬ মার্চের এক ঘটনাকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থীদের রাজাকার বলায় ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা ভিসি আপসারণের দাবিতে আন্দোলন করে।তার পরিপ্রেক্ষিতে ১১ই এপ্রিল থেকে ২৬শে মে পর্যন্ত বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠিয়ে অপসারণ করা হয় ড.এস এম ইমামুল হককে।তারপর কিছুদিন ধরে ট্রেজারার ড.এ কে এম মাহবুব হাসান উপাচার্যের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।কিছুদিন দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দেওয়া হলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও একাডেমিক কার্যক্রম পরিচালনা করার জন্য আবারও ট্রেজারারকে ২৫শে জুন থেকে দায়িত্ব দেয় যা শেষ হবে ১০ই অক্টোবরে।
এমতাবস্থায় নতুন উপাচার্যকে নিয়োগ দিয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল কার্যক্রমকে ত্বরান্বিত করার লক্ষে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা দ্রুত নতুন ভিসি নিয়োগের আহবান জানান।