অসহায়দের পাশে খাবার নিয়ে বরিশালের গণমাধ্যম

করোনায় কর্মহীন ও অসহয় মানুষের পাশে কাজ করছে বরিশালের গণমাধ্যমকর্মীরা। নিজ নিজ গণমাধ্যমের বাইরে অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে প্রতিদিন দুই শতাধিক ছিন্নমূল শিশু ও অসহয়দের খাবারের ব্যবস্থা করছেন বরিশালের গণমাধ্যমকর্মীরা।
গত এক সপ্তাহ ধরে বরিশাল নৌবন্দরে থাকা ছিন্নমূল শিশু এবং অসহায় মানুষদের রাতের খাবার সরবরাহ করে চলেছে এই গণমাধ্যমকর্মীরা। বরিশাল শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবত প্রেসক্লাব, বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিসহ বরিশালের সকল গণমাধ্যম সংগঠনের কর্মীরা একজোট হয়ে ওই দায়িত্ব পালন করছেন। করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া পর্যন্ত এই খাবার সরবরাহ অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন তারা। এর অংশ হিসেবে গতকাল বুধবার রাত নয়টায় নৌবন্দরে থাকা মানুষদের খাবার সরবরাহ করা হয়।
কর্মসূচির উদ্যোক্তাদের একজন মুশফিক সৌরভ জানান, বরিশালের গণমাধ্যমকর্মীরা এমনিতেই করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় রাস্তায় থেকে মানুষদের সচেতন করতে কাজ করছে। এর বাইরে করোনার কারণে সংকটে থাকা দুস্থ্য শিশু ও অসহায় মানুষের পাশে খাবার সরবরাহের চেষ্টা চালায়। কোন ধরণের রাজনৈতিক চিন্তা থেকে নয়, কেবল দুঃস্থদের পাশে থাকার জন্য গণমাধ্যমকর্মীরা একাট্টা হয়েছেন। সবাই যার যার অবস্থান থেকে আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন। সেই অর্থ দিয়ে প্রতিদিন রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হচ্ছে। যতদিন অবস্থার উন্নতি না হবে ততোদিন এই চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।
ওই কর্মসূচিতে বিডি বুলেটিন এবং ইউরোটেল বিডি সর্বাত্মক আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন। এর বাইরে স্বেচ্ছায় উদ্যোগী হয়েও কেউ কেউ আর্থিক সহযোগিতা দিচ্ছেন। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় চলছে এই কর্মসূচি।
শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবত বরিশার প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন বলেন, সরকারি-বেসরকারি অনেক প্রতিষ্ঠান করোনায় কর্মহীনদের সহযোগিতা দিচ্ছেন। আমরা বরিশাল নদী বন্দরে থাকা ছিন্নমূল শিশু ও অসহয়দের জন্য রাতের খাবার ব্যবস্থা করার চেষ্টা করছি। এর কারণ হচ্ছে নৌবন্দরে থাকা এই ছিন্নমূল শিশুরা ঢাকা-বরিশাল নৌপথের লঞ্চগুলো এবং হোটেলে অবশিষ্ট খাবার খেয়ে রাত পার করতেকা। বর্তমানে করোনার কারণে হোটেল ও লঞ্চ সার্ভিস বন্ধ থাকায় তাদের খাবার সংকট দেখা দেয়। এসব মানুষের এক বেলা খাবার ব্যবস্থা করার ইচ্ছা থেকেই বরিশালের গণমাধ্যম কর্মীরা কাজ শুরু করে। ইচ্ছা আছে করোনা মোকাবেলায় বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় চিকিৎসা সহযোগিতা দিয়ে কাজ করার। এব্যাপারে কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা মুঠোফোনে পরামর্শ ও ব্যবস্থাপত্র দেবেন। সেই ব্যবস্থাপত্র পৌঁছে দেওয়া হবে অসুস্থ্য পরিবারের কাছে। এই কর্মসূচির সঙ্গে আমরা চিকিৎসকসহ গণমাধ্যমের প্রতিটি সদস্যর সহযোগিতা প্রত্যাশা করছি। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনও সহযোগী হয়ে আমাদের পাশে আছে।
গণমাধ্যম কর্মীরা আহ্বান জানাচ্ছে, তাদের দেওয়া প্রতিদিন রাতে খাবার সরবরাহ কর্মসূচির বাইরে যদি কোন ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠান রাতের খাবার সরবরাহ করতে চান, তাহলে যেন তারা একটু আগে গণমাধ্যমকর্মীদের অবহিত করেন। তাহলে ওইদিন আর গণমাধ্যম কর্মীরা খাবার সরবরাহ করবে না। একই সময় একাধিক ব্যক্তি প্রতিষ্ঠান খাবার সরবরাহ করলে অপচয় হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেবে।
এব্যাপারে এসএম জাকির হোসেন মুঠোফোন: ০১৭১৩৩৭৪৫২৫, মুশফিক সৌরভ: ০১৬৭৭৭৫১৭১২, কাওসার হোসেন: ০১৭১৮৩২৭৯৭০ নম্বরে যোগাযোগের জন্য অনুরোধ জানিয়েছেন তারা।