আগুনে পোড়া রোগীর চিকিৎসা

আগুন লাগলে সময় দেয় না বাঁচার। প্রাণে বাঁচলেও রয়ে যায় ক্ষত। আর এই ক্ষত ঠিকমতো চিকিৎসা না করলে হতে পারে ভয়াবহ ইনফেকশন। রান্না করতে গিয়ে গ্যাসের চুলা, দুর্ঘটনায় পোড়া, কারখানায় কাজ করতে গিয়ে কিছু ফেটে অগ্নিদগ্ধ হওয়ার, গরম জাতীয় কিছু পড়ে ত্বক পুড়ে যায়। তবে এর মধ্যে আগুনে পুড়ে যাওয়া রোগীর ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় অনেকখানি। পোড়া জায়গায় নতুন চামড়া হওয়া সহজ কিন্তু ইনফেকশন এড়ানো বেশ কঠিন বলছে চিকিৎসকরা।
প্রথমেই যা করবেন
প্রথমেই শরীরের পুড়ে যাওয়া স্থানে প্রচুর ঠান্ডা পানি দিতে হবে। হাত-পা পুড়ে গেলে বালতির ঠান্ডা পানিতে ডুবিয়ে বসে থাকুন অন্তত ১০-১৫ মিনিট। আগুন নেভাতে কম্বলের ব্যবহার করা যায়। কিন্তু তারপর আর ব্যবহার করা উচিত নয়। কোনো ধরনের ক্রিম, ওষুধ বা কোনো ময়েশ্চারাইজার পোড়া জায়গায় লাগাবেন না। এতে বিপদ আরও বাড়ে। হাতের চুড়ি, আংটি যত দ্রুত সম্ভব খুলে নিতে হবে। মুখ ও হাত পুড়ে গেলে বাড়িতে চিকিৎসা না করিয়ে অবশ্যই হাসপাতালে নিয়ে যান।
হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময় অ্যাম্বুলেন্সের বিছানায় ঘরের পাতলা, নরম, পরিচ্ছন্ন কাপড় বিছিয়ে তার ওপর রোগীকে শুইয়ে দিন।
শরীরের ৪০-৫০ শতাংশ পুড়ে যাওয়া রোগীর প্রথম ছয়-সাত দিন পর পুড়ে যাওয়া ত্বক শুকাতে থাকে। এ সময় শরীরে ইনফেকশনের সম্ভাবনা বাড়ে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকলে সহজেই ইনফেকশন সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে। তাই পুড়ে যাওয়ার পর দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহকে সবচেয়ে দুশ্চিন্তার সময় বলে ধরা হয়। অ্যান্টিবায়োটিক ও নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই রোগীকে এ অবস্থা থেকে রক্ষা করতে পারে।
হাই-সুগার, হাই-প্রেশার নেই এমন কারও শরীরের ৪০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেলে সুস্থ হওয়া নিয়ে তেমন সংশয় থাকে না। কিন্তু ৫০ শতাংশের বেশি হলে পরিস্থিতি কঠিন হয়ে পড়ে। তবে সবার ইনফেকশন হবে এমন নয়। পোড়া স্থান ও কতটা অংশ পুড়েছে তার নির্ভর এটি করে। অনেক সময়ই ঘা দ্রুত কমে যায় এবং ইনফেকশন হয় না।
আগুনে পুড়লে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসার জন্য চিকিৎসক বা হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে যান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো কিছু পোড়া জায়গায় ব্যবহার করবেন না।
প্রথমেই শরীরের পুড়ে যাওয়া স্থানে প্রচুর ঠা-া পানি দিতে হবে। হাত-পা পুড়ে গেলে বালতির ঠা-া পানিতে
ডুবিয়ে বসে থাকুন অন্তত ১০-১৫ মিনিট
ডা. এ এইচ মামুন ভূঁইয়া
বাতব্যথা, প্যারালাইসিস ও প্রতিবন্ধী রিহ্যাব বিশেষজ্ঞ, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়
চেম্বার : পেইন কিউর ফিজিওথেরাপি সেন্টার, শহীদ আমির হোসেন রোড, আখাউড়া, ব্রাহ্মণবাড়িয়া