আজ খুলছে স্বপ্নের দ্বার

এখন আর স্বপ্ন নয়। শুধু বাস্তব এবং দৃশ্যমান অবকাঠামোও নয়। ১৬ কোটি মানুষের আকাঙ্ক্ষার ফসল। বিশ্বের কাছে বাংলাদেশের নতুন এক পরিচয়। দেশের আত্মমর্যাদা ও সক্ষমতার একটি প্রতীক। গর্ব ও আকাঙ্ক্ষার সেই প্রতীকটি হচ্ছে ‘পদ্মা সেতু’।
নিজস্ব অর্থায়নে ৩০,১৯৩ কোটি ৩৮ লাখ টাকার প্রকল্পের আওতায় নির্মিত বহুল কাঙ্ক্ষিত এই সেতু উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষণ আজ শনিবার ২৫ জুন সকাল ১১টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আড়ম্বর অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই সেতুর উদ্বোধন করবেন।
আগামী দিন ২৬ জুন থেকে ৯ দশমিক ৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ সেতুতে সাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। এর মধ্য দিয়ে অদম্য বাঙালি জাতির স্বপ্নের দ্বার খুলছে। এ সেতুর মাধ্যমে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশের সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হতে যাচ্ছে।
যাতায়াত ব্যবস্থায় নতুন মাইলফলকে পৌঁছল বাংলাদেশ।দেশি-বিদেশি নানা প্রতিকূলতা এবং প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নে সক্ষমতা অর্জনের প্রমাণ মিলল। সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষ্যে সারা দেশে সাজসাজ রব উঠেছে। মাওয়া ও জাজিরা, ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় আলোকসজ্জা করা হয়েছে।সেতু বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, এই সেতুর মধ্য দিয়ে দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশে নিরবচ্ছিন্ন সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা চালু হতে যাচ্ছে। এর সরাসরি সুফল পাবেন তিন কোটির বেশি মানুষ। পরোক্ষ সুফল পাবে পুরো বাংলাদেশ। এ সেতুর সুবিধা নিয়ে মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দর এবং ভোমরা স্থলবন্দরের ব্যবহার বেড়ে যাবে। কমবে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরের ওপর আমদানি-রপ্তানি চাপ।ঢাকার সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের যাতায়াতের সময় অন্তত দুই থেকে চার ঘণ্টা কমে যাবে। ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত এক ঘণ্টায় যাতায়াত করা যাবে।
এ সেতুর কারণে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে নতুন নতুন শিল্প-কারখানা গড়ে উঠছে। উন্মুক্ত হচ্ছে পর্যটনের নতুন দুয়ার।এ সেতুর ফলে বছরে দশমিক ৮৪ শতাংশ দরিদ্রতা হ্রাস পাবে এবং জিডিপিতে এক দশমিক ২৩ শতাংশ অবদান রাখবে। শুধু তাই নয়, আঞ্চলিক যোগাযোগ ব্যবস্থায় এটি বড় ভূমিকা রাখবে। এশিয়ান হাইওয়েতে-১ (তামাবিল-সিলেট-ঢাকা-পদ্মা সেতু-যশোর-বেনাপোল) সরাসরি যুক্তের মাধ্যমও এ সেতুটি।এর আগে পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর ও নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ২০০১ সালের ৪ জুলাই মাওয়ায় পদ্মা সেতুর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।