আলু নিয়ে তুঘলকি কান্ড বন্ধ করতে হবে

তত্তাবধায়ক সরকারের সময় বেশি বেশি আলু খেতে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হয়েছিল। তখন একটা শ্লোগান বেশ জোরেসোরে শোনা যেত। সেটা হচ্ছে ‘ বেশি করে আলু খান, ভাতের ওপর চাপ কমান’। আলু খেলে ভুড়ি হয়, এ কথাটা সত্য নয়’। তখন বাজারে পর্যাপ্ত আলু পাওয়া যেত। কখনওই আলুর দাম ১০ টাকার বেশি ওঠেনি। ৫ থেকে ১০টাকা কেজি দরে আলু পাওয়া যেত। এখন সময় পাল্টোছে। বদলেছে দিন। সঙ্গে সঙ্গে আলুর বাজারেও দিনবদলের হাওয়া লেগেছে। ১০ টাকার আলু বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। ক্ষেত্রবিশেষে ১০০ টাকাও রাখা হচ্ছে। আলুর এই উর্ধ্বমূখি বাজার নিয়ন্ত্রণে উদ্যোগ নিতেই হবে। বন্ধ করেেত হবে আলু নিয়ে তুঘলকি কা-।
আলুর দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাজার আলু শূণ্য হয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। আজ বরিশালের পাইকারী বাজার আলু শূন্য হযে যায়। এখন আলুর দেখা পাওয়া ভার হয়ে হয়েছে। খুচরা দোকানে আলু থাকলেও কেজি ৭০ থেকে ৯০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। এখন কি আমাদের সেই আগের শ্লোগান পাল্টে বলতে হবে, ‘কম কম আলু খান, ভাতের ওপর চাপ বাড়ান’। অথবা ‘আলু খেলে ভুড়ি হয়, এ কথাটি সত্য রয়’।
আলুর মজুত না থাকার কারণেই আলুর দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে মনে করছেন অনেকে। কেউ কেউ আবার বলছেন বাজার নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে আলুর দাম বাড়ছে। আলু নিয়ে এই তুঘলকি কা- বন্ধ করতে হবে। সেজন্য বাজার মনিটরিং এর পাশাপাশি আলুর মজুত আছে সেটা নিশ্চত করতে হবে।
গত ১৮ অক্টোবর বরিশালের এক সভায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান বলেছেন, ভোক্তাদের চাহিদা অনুযায়ী দেশে সকল পণ্যের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। একটি মহল গুজব ছড়ানোর মাধ্যমে বাজার অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। কোন গুজবে কান না দিয়ে প্রয়োজন অনুযায়ী পণ্য ক্রয় করতে হবে। এক সপ্তাহ পার না হতেই বাজারের চিত্র বলছে অন্য কথা।
সারা দেশের মতো বরিশালের আলুর বাজার অস্থির। সরকার পাইকরী ও খুচরা বাজারে আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। গত ৭ অক্টোবর প্রতি কেজি আলু কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে ২৩টাকা, পাইকারী বাজারে ২৫ এবং খুচরা বাজারে ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দেয়। ওই দামে যাতে আলু বিক্রি হয় সেজন্য মাঠ প্রশাসনকে চিঠিও দেয় মন্ত্রণালয়। কিন্তু বাজারের আলুর দাম তখনও ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীদের দাবির প্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার সভায় সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আলুর দাম কোল্ডস্টোরেজ পর্যায়ে প্রতি কেজি ২৭ টাকা, পাইকারি পর্যায়ে কেজি ৩০ টাকা এবং খুচরা পর্যায়ে কেজি ৩৫ টাকা পুননির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু খুচরা বাজারে ওই মূল্য নির্ধারণী কোন কাজে আসছে না। উল্টো আলুর দাম দ্বিগুনেরও বেশি হয়ে গেছে।
আমরা চাই, পেঁয়াজের বাজার নিয়ন্ত্রণে নেওয়া উদ্যোগ আলুর বাজারেও নিতে হবে। পেঁয়াজ এবং আলু নিয়ে যদি কোন মহল কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করতে চায় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সঙ্গে সাধারণ ভোক্তা পর্যায়ে আলু ও পেঁয়াজের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে।