উজিরপুরের চৌধুরীরহাট ব্রীজ নিয়ে স্থানীয় জনগন ও ব্যবসায়ীরা অস্বস্তিতে
চৌধুরীরহাট উজিরপুরের ঐতিহ্যবাহী হাট হিসেবে সুপরিচিত। প্রায় ২০০ বছরের পুরোনো এই হাট নদী ভাঙ্গনে হারিয়েছে তার ঐতিহ্য, হারিয়েছে যৌবন। এরপরেও এই হাটের লঞ্চঘাট আর খেয়াঘাট বড়াকোঠা, শোলক ও ওটরা ইউনিয়নের জনগনের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। তিন ইউনিয়নের ঢাকাগামী লঞ্চ যাত্রীরা এই ঘাট ব্যবহার করে থাকে। স্থানীয় জনগন জেলা শহর বরিশালে এবং স্থানীয় ব্যবসায়ীরা পাশ্ববর্তী বানারীপাড়া, স্বরূপকাঠি উপজেলায় যাতায়াতের জন্য চৌধুরীরহাট খেয়ায় চড়ে ওপারের লস্করপুর থেকে গাড়ী যোগে আসা-যাওয়া করেন।
অপরদিকে বড়াকোঠা ইউনিয়নের ডাবেরকুল বাজার ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় বাজার হিসেবে বিবেচিত। পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের জনগনও বিভিন্নভাবে এ বাজারের উপর নির্ভরশীল। ডাবেরকুল বাজারের ব্যবসায়ীদের পণ্যবাহী ট্রলার চৌধুরীরহাটের পূর্ব পাশের খাল হয়ে আসা-যাওয়া করে। কিন্তু এতকিছুর পরেও অস্বস্তি চরম আকারে ধারন করেছে স্থানীয় জনগন ও ব্যবসায়ীদের মাঝে। কারন চৌধুরীরহাট ব্রীজ যেন সবকিছুর অন্তরায়। ব্রীজটি যেমন নিচু তেমনি সরু। বছর দুয়েক আগে একবার ট্রলারের ধাক্কায় ব্রীজটি উত্তরদিকে হেলেও পরে। যেকোন সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা বিরাজ করছে জনগনের মাঝে। বড়াকোঠা বাসিন্দা জাহাঙ্গীর ফকির জানান, তিনি সপরিবারে ঢাকায় যাওয়ার জন্য মালজিনিস সহ বাড়ি থেকে ভ্যানযোগে চৌধুরীরহাট লঞ্চঘাটে আসেন। কিন্তু ভ্যানচালক চৌধুরীরহাট ব্রীজ পর্যন্ত এসেই বলেন ভ্যান আর যাবে না। কারন মালজিনিস আর যাত্রীসহ গেলে ব্রীজ ভেঙ্গে পড়তে পারে। পরে তিনি বাধ্য হয়ে তার মাল জিনিস এক এক করে কাঁধে বয়ে লঞ্চঘাটে নিয়ে যান। এখানে এরকম ঘটনা নিত্তনৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।
এ বিষয়ে ডাবেরকুল বাজার কমিটির কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, নিত্যপ্রয়োজনিয় পণ্য ঢাকা, বরিশাল, বানারীপাড়া, স্বরূপকাঠি সহ পার্শ্ববর্তী অন্যান্য উপজেলা থেকে ট্রলার যোগে নিয়মিত ডাবেরকুল বাজারে আসত। কিন্তু চৌধুরীরহাট ব্রীজ নিচু ও ঝুকিপূর্ণ হওয়ায় কোন ট্রলার চালক ভিতরে আসতে চায় না। ফলে ট্রাকযোগে পণ্যগুলো আনতে হয়। যেকারনে কেরিং খরচ বেড়ে যাওয়ায় আগের তুলনায় বেশি দামে ক্রেতাদের কাছে পণ্য বিক্রি করতে হয়। অপরদিকে ডাবেরকুল বাজারের মৃধা এন্টারপ্রাইজের স্বত্ত্বাধীকারি জুয়েল মৃধা জানান, বর্তমানে ব্রীজটি ২৪ ফিট উচুতে স্থাপন করা আছে। কিন্তু ব্রীজটি ৩০ ফিট উচু করলে পণ্যবাহী ট্রলার ঝুকি এড়িয়ে ডাবেরকুল বাজারে আসতে পারবে। তাতে বিভিন্ন পণ্যের কেরিং খরচ কম পরবে এবং ক্রেতাদের কাছে তুলনামূলক স্বস্তায় পণ্য বিক্রি করা সম্ভব হবে।
এ বিষয়ে বড়াকোঠা ইউপি চেয়ারম্যান এড. সহিদুল ইসলাম মৃধা জানান, উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জানানো হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট অফিস চৌধুরীর হাট ব্রীজের ইস্টিমিট করে নিয়েছেন। আশা করা যায়, শীঘ্রহ ব্রীজ স্থাপনার কাজ শুরু হবে।
উজিরপুর উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ সিকদার বাচ্চু বলেন, চৌধুরীরহাট ব্রীজের বরাদ্ধ দেয়া হয়েছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য ব্রীজের ব্যাপারে অবগত আছেন। অল্পকিছুদিনের মধ্যে ব্রীজটির কাজ শুরু হবে বলেও তিনি জানান।
স্থানীয় জনগন ও ব্যবসায়ীদের দাবি, চৌধুরীরহাট ব্রীজটি উচু করে স্টীল ব্রীজ নির্মান করা হলে পরবর্তিতে ভাঙ্গন সংক্রান্ত দুর্ঘটনা এড়ানো ও পণ্যবাহী ট্রলার চলাচলে কোন অসুবিধা থাকবে না।