অচলাবস্থর মুখে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

অচলাবস্থর মুখে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

অচলাবস্থর মুখে পড়েছে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। দুই সহকর্মী ওয়ার্ডবয়কে শিক্ষানবীশ চিকিৎসক (ইন্টার্ন) হোস্টেলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় বিচারের দাবীতে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের আল্টিমেটামের পর এবার নারী চিকিৎসককে উত্যক্ত করা অভিযোগ তুলে ওয়ার্ডবয়দের বিচারের দাবিতে ৭২ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে শিক্ষানবীশ চিকিৎসকরা।

আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে নারী চিকিৎসক উত্যক্তকারীর বিচার না হলে সরাসরি ধর্মঘটের হুমকী দিয়েছেন শিক্ষানবীশ চিকিৎসকরা। অন্যদিকে দুই ওয়ার্ডবয়কে নির্যাতনকারীদের কঠোর বিচার না হলে আন্দোলনের হুশিয়ারী দিয়েছেন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা। দুই পক্ষের কঠোর অবস্থানের কারণে করোনকালেও অচলাবস্থার মুখে পড়েছে দক্ষিণের কোটি মানুষের ভরসাস্থল বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। যদিও দুই পক্ষের অভিযোগ তদন্ত করে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন হাসপাতালের পরিচালক। 

গত ২৮ জুন রাতে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ওয়ার্ডের আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন জরুরী বিভাগের ওয়ার্ডবয় মো. বাদশাকে দেখতে গিয়ে পাশে ডাক্তারের ১৫ নম্বর কক্ষে ডাকাডাকি করেন ওয়ার্ডবয় মো. দিদারুল ইসলাম ও মো. নুরুল ইসলাম। এতে ক্ষিপ্ত হন ডাক্তারের কক্ষে থাকা এক নারী শিক্ষনবীশ চিকিৎসক। এ ঘটনার জের ধরে পরদিন ২৯ জুন রাতে ওয়ার্ডবয় দিদার ও নূরুলকে হোস্টেলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতন করেন শিক্ষানবীশ চিকিৎসকরা। এ ঘটনায় ৩০ জুন চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা হাসপাতালের পরিচালকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়ে অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেন। ওই দাবিতে তারা গত বৃহস্পতিবার পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করেন। দ্রুত অভিযুক্তদের বিচার না হলে কঠোর আন্দোলনের হুশিয়ারী দেন চতুর্থ শ্রেণি কর্মচারী সমিতির সভাপতি মোদাচ্ছের আলী কবির।

এদিকে গভীর রাতে করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত নারী সহকর্মীকে উত্যক্ত করার প্রতিবাদে এবং অভিযুক্ত ওয়ার্ডবয়দের বিচারের দাবিতে গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় হাসপাতালের পরিচালকের কার্যালয় ঘেরাও করেন শিক্ষানবীশ চিকিৎসকরা। ওই ঘটনায় পরিচালকের কাছে শিক্ষানবীশ চিকিৎসকরা লিখিত অভিযোগ করেন। আগামী ৭২ ঘন্টার মধ্যে ওই অভিযুক্তদের বিচার না হলে ধর্মঘটসহ কঠোর আন্দোলনের প্রস্তুতির কথা জানান শিক্ষানবীশ চিকিৎসক ডা. সজল ও ডা. তুলিসহ অন্যান্যরা। 

এদিকে দুই পক্ষের আল্টিমেটামে উত্তেজনা বিরাজ করছে বরিনশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সুষ্ঠু সমাধান না হলে স্বাস্থ্য সেবার ওপর প্রভাব পড়বে। করোনাকালে কোন ধরণের ধর্মঘট কিংবা আন্দোলন হলে হাসপাতালের সার্বিক চিকিৎসা ব্যবস্থায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশংকা করছেন সংশ্লিষ্টরা। 

বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. বাকির হোসেন বলেন, শিক্ষানবীশ চিকিৎসকরা গভীর রাতে করোনা ওয়ার্ডে দায়িত্বরত এক নারী শিক্ষানবীশ চিকিৎসকে উত্যক্ত করার অভিযোগ করেছেন। অপরদিকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা তাদের দুই সহকর্মীকে শিক্ষানবীশ চিকিৎসক হোস্টেলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ করেছেন। দুই পক্ষের অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কোনভাবেই হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার ওপর প্রভাব পড়তে দেওয়া হবে না।