উঠে যাচ্ছে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা

উঠে যাচ্ছে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা


বরিশালে প্রজনন মৌসুমে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা শেষ হচ্ছে রাত ১২টার পর। মা ইলিশ রক্ষায় গত ২১দিন ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা, জরিমানা, কারাদ- ও কারেন্ট জাল জব্দসহ নানা পদক্ষের নিয়েছে মৎস্য বিভাগ। অভিযান সফল হওয়ায় ৪ লাখ মেট্রিকটন ইলিশ আহরণ সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।

বুধবার বিকেলে বরিশাল মৎস্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আনিচুর রহমান জানিয়েছেন, টানা ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে বুধবার রাত ১২টায় উঠে যাচ্ছে ইলিশ শিকারে নিষেধাজ্ঞা। মা ইলিশ রক্ষায় মৎস্য অধিদপ্তরের নিষেধাজ্ঞা শেষ হওয়ায় বুধবার রাত ১২টার পর থেকে জেলেদের নদীতে মাছ শিকারে কোন বাঁধা নেই।

ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রজনন মৌসুমের সঙ্গে সমন্বয় করে এবার ১৪ অক্টোবর থেকে ৪ নভেম্বর পর্যন্ত  ইলিশ ধরা, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন, বিপনন ও বাজারজাতকরণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে মৎস্য বিভাগ। 

মৎস্য বিভাগ জানায়, গত ২১ দিনের অভিযানে বরিশাল বিভাগে ৯৮৭টি মোবাইল কোর্ট পরিচালনা হয়েছে। এসময় অবৈধভাবে মাছ শিকারের দায়ে ১ হাজার ১৭৪ টি মামলা দায়ের করা হয়। এসব মামলায় ১ হাজার ৫৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারা ও অর্থদন্ড প্রদান করা হয়। অর্থদন্ডের মাধ্যম মোট ১৭ লাখ ৪৩ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। ৭৮ লাখ মিটার কারেন্ট জাল এবং ৯ হাজার ৫০০ কেজি ইলিশ মাছ জব্দ করা হয়।
জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা (ইলিশ) ড. বিমল চন্দ্র দাস জানান, গত বছরের তুলনায় এবার নদীর পরিবেশ ভাল ছিল। এবার যে পরিমান মা ইলিশ ডিম অবমুক্ত করার সুযোগ পেয়েছে তাতে এবার ইলিশের উৎপাদন আরও বৃদ্ধি পাবে। 

মৎস্য বিভাগের দাবি, প্রজনন মৌসুমে প্রতিটি মা ইলিশ ২ লাখ থেকে ২০ লাখ ডিম ছাড়তে সক্ষম এবং অবমুক্ত ডিমের ১০ ভাগ মাছে পরিণত হবে। দেশে উৎপাদিত ইলিশের ৭০ ভাগ আহরণ হয় মেঘনা নদীর ভোলার শাহবাজপুর, বরিশালের তেতুলিয়া ও পটুয়াখালীর আন্ধারমানিক নদীর ৩৫০ কিলোমিটার এলাকার ৫টি অভয়াশ্রম থেকে। এ সকল অভায়শ্রমে ৬০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১০০ গ্রামের বেশি ডিম ধারণ করে। প্রতিটি ডিমে ২ লাখ থেকে ২০ লাখ ডিম্বানু রয়েছে। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে অধিকাংশ মা ইলিশ নদীতে অবমুক্ত করে। 

প্রজনন মৌসুম সফল হওয়ায় এ বছর ৪ লাখ মেট্রিক টন ইলিশ আহরণ করা সম্ভব হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য বিভাগ।
বরিশাল বিভাগীয় কমিশনার অমিতাভ সরকার জানান, অভিযানকালীন সময়ে বিভাগের ২ লাখ ৮২ হাজার জেলে পরিবারকে ২০ কেজি করে চাল প্রদান করা হয়েছে। জেলেরা সচেতন হওয়ায় এবার নিষেধাজ্ঞাকালীন নদীতে মাছ শিকারে নামেনি। এ কারণে এবার ইলিশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করেন তিনি।