উন্মুক্ত স্থানে স্তুপ ,বর্জ্য নিয়ে বিপাকে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল

বর্জ্য নিয়ে বিপাকে পড়েছে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (শেবাচিম) কর্তৃপক্ষ। মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য নিজস্ব কোন যন্ত্রপাতি কিংবা জনবল নেই কর্তৃপক্ষের। এক বছর ধরে ময়লা নেয় না সিটি করপোরেশন। এ কারনে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে উন্মুক্ত স্তুপ করে রাখা হয়েছে মেডিকেল বর্জ্য। এর দুর্গন্ধে হাসপাতালের পরিবেশ অসহনীয় হয়ে উঠেছে। সব কিছু মিলিয়ে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় লেজে গোবরে অবস্থা শেবাচিম শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের।
বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে দৈনিক গড়ে ৩ থেকে ৪টন বর্জ্য হয়। আগে এই বর্জ্য অপসারন করতো সিটি করপোরেশন। গত বছর করোনা প্রকোপ দেখা দেয়ার পর থেকে হাসপাতালের যাবতীয় নেয়া বন্ধ করে দেয় সিটি করপোরেশন।
এরপর থেকে হাসপাতাল ক্যাম্পাসের জরুরী বিভাগ ও করোনা ওয়ার্ডের সামনে এবং ইন্টার্ন ডক্টরস্ হোস্টেলের পাশে গর্ত করে করোনা ওয়ার্ডের বর্জ্য সহ যাবতীয় মেডিকেল বর্জ্য ফেলতে শুরু করে কর্তৃপক্ষ। কিন্তু গর্ত উপচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়া মেডিকেল বর্জ্যরে দুর্গন্ধে অসহনীয় হয়ে ওঠে হাসপাতালের পরিবেশ। তীব্র সমালোচনার মুখে জরুরী বিভাগের সামনের গর্ত ঢেকে দিয়ে এখন করোনা ওয়ার্ডের সামনে এবং ইন্টার্ন ডক্টরস্ হোস্টেলের পাশে গর্ত করে বর্জ্য ফেলছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মেডিকেলের মূল ভবনের উত্তর-পশ্চিম পাশে বর্র্জ্যরে স্তুপ। এসব স্থান থেকে ছড়িয়ে পড়ছে বর্জ্যরে দুর্গন্ধ। করোনা ওয়ার্ডের সামনে উন্মুক্ত স্থানে করোনা ওয়ার্ডের বর্জ্য ফেলে বিষিয়ে তোলা হচ্ছে সেখানকার পরিবেশ। পশু-পাখির মাধ্যমে এবং বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছে করোনা দুষন।
হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার আবুল কালাম জানান, প্রতিদিন গড়ে ৩ থেকে ৪টন বর্জ্য হয়। আগে এই বর্জ্য নিত সিটি করপোরেশন। করোনা শুরুর পর থেকে তারা বর্জ্য অপসারন বন্ধ করে দেয়ায় বিপাকে পড়েন তারা। এই ময়লা কি করবো, কোথায় রাখবো ? বাধ্য হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে গর্ত করে মেডিকেল বর্জ্য ফেলছেন। এখন আর বর্জ্য ফেলার জায়গা নেই। তিনি আরও বলেন, ১০০০ শয্যা হাসপাতালে ঝাড়–দারের ২৭০টি পদে মধ্যে আছেন ৭৮জন। যার মধ্যে ১৫ থেকে ২০জন শারীরিকভাবে অক্ষম হয়ে পড়েছে। এমএলএসএস এর ৪৪৮টি পদের মধ্যে কর্মরত আছে ১৩৫জন। যার মধ্যে অন্তত ২০ থেকে ২৫ জনের এখন আর এই ধরনের কাজ করার শারীরিক সক্ষমতা নেই। ঘাটতি জনবল দিয়ে হাসপাতাল পরিস্কার পরিচ্ছন্ন এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করা সম্ভব নয়।
হাসপাতালের সহকারী পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. মনিরুজ্জামান জানান, করোনার শুরুতে সিটি করপোরেশন বর্জ্য নেয়া বন্ধ করে দেয়ার পর একাধিকবার তাদের কাছে চিঠি লিখে বর্র্জ্য অপসারনের অনুরোধ করা হয়েছে। কিন্তু তারা কোন সায় দেয়নি। এর প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয়ে চিঠি দিয়ে মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার বিষয়ে নির্দেশনা চাওয়া হয়। গত কয়েক দিন আগে ওই চিঠির উত্তরে স্বাস্থ্য মন্ত্রনালয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে নিজস্ব ব্যবস্থায় মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা করতে বলেছে।
হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক ডা. আব্দুর রাজ্জাক বলেন, মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য একটা ‘ইনছেনারেটর’ মেশিন চেয়ে মন্ত্রনালয়ে চিঠি দেয়া হয়েছে। তারা খোঁজ নিয়ে দেখেছেন এই মেশিন দেশের কোন সরকারি হাসপাতালে নেই। মন্ত্রনালয় এই মেশিন এ্যারেঞ্জ (সরবরাহ) করতে পারলে করবে। না পড়ালে যেভাবে আছে সেভাবেই চলবে। আমাদের কি করার আছে- প্রশ্ন রাখেন তিনি।