একে স্কুলের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে,অন্য শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন

একে স্কুলের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে,অন্য শিক্ষকদের সংবাদ সম্মেলন

বরিশাল নগরের আছমত আলী খান (এ.কে) ইনস্টিটিউশনের সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিদ্যালয়ের অন্য শিক্ষকরা। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আইরীন পারভীন।

 রোববার বেলা ১১টায় বরিশাল রিপোর্টার্স ইউনিটিতে বিদ্যালয়ের ১৮ জন শিক্ষক-কর্মচারীর উপস্থিতিতে এই সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন- শিক্ষক মো. জিয়াউল হক ফারুক, কাঞ্চন আলী, রতন কুমার মজুমদার, ইসরাত জাহান শিল্পী, আচমা আক্তার, মো. মামুন হাওলাদার, আইরীন জাহান সালমা, তরিকুল ইসলাম, রোকসানা কনক প্রমুখ।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকদের করা অভিযোগ অস্বীকার করেছেন অনিয়ম এবং দুর্নীতির অভিযোগে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক এইচ.এম জসীম উদ্দিন। তার দাবি সংবাদ সম্মেলনে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে তার কোনটিরই প্রমাণ দিতে পারবে না। বরং বর্তমান শিক্ষক এবং অবৈধ ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ.কে ইনস্টিটিউশনের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আইরীন পারভীন অভিযোগ করেন, দুর্নীতির দায়ে সাময়িকভাবে বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক এইচ.এম জসীম উদ্দিন প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিভিন্ন প্রকার আত্মঘাতি অপপ্রচার চালাচ্ছেন। শিক্ষক মন্ডলীকে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। শিক্ষকদের চরিত্র হরণের জন্য নানান রকম নাটক সাজাচ্ছেন। এসময় তিনি প্রধান শিক্ষক এইচএম জসীম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন আয়ের উৎসের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ২০০৯ সালে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকেই কমিটির অনুমোদন নিয়ে অস্থায়ীভাবে বিদ্যালয়ের দুটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন। যেখানে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ ব্যবহার করছেন। এসব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিত প্রধান শিক্ষক এইচ.এম জসীম উদ্দিনকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। এমনকি তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে। যা বর্তমানে পিবিআইতে তদন্তাধীন আছে।

সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করে বলেন, ‘বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষক জসীম উদ্দিন নিজের অপরাধ এবং দুর্নীতি ঢাকতে একেরপর এক নাটকীয়তার আশ্রয় নিচ্ছেন। তার মধ্যে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বশির উদ্দিনকে শ্লীলতাহানীর মামলায় জড়িয়ে হয়রানি অন্যতম। জসীম উদ্দিন নিজের স্ত্রীকে দিয়ে সদ্য অবসরে যাওয়া ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছেন। তার এই কর্মকান্ডের জন্য আমরা নারীদের পাশাপাশি পুরুষ সহকর্মীরাও ভীত। আমরা আশংকা করছি তিনি ক্যাম্পাসে অবস্থান করা মানেই সকলের মধ্যে আতঙ্ক। আমাদের দাবি তার দখলে থাকা শ্রেণিকক্ষ দুটি দখলমুক্ত করা হোক। তাকে বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ছেড়ে দেয়ার জন্য একাধিকবার নোটিশ করা হলেও কর্ণপাত করেননি তিনি।

অভিযোগ প্রসঙ্গে সাময়িক বরখাস্ত হওয়া প্রধান শিক্ষক এইচ.এম জসীম উদ্দিন বলেন, ‘নিয়ম বহিঃর্ভূতভাবে এডহক কমিটি দিয়ে আমাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এই ঘটনায় আমি এডহক কমিটির সভাপতি হাসান মাহমুদ বাবুসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করি। মামলাটি এখনো তদান্তাধিন আছে।
আর ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা করার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘মামলাটি বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশ তদন্ত করছে।
এ প্রসঙ্গে একে ইনস্টিটিউশনের ম্যানেজিং কমিটির বর্তমান সভাপতি এবং মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাসান মাহমুদ বাবু জানান, পরিপত্র অনুযায়ী আমরা বিদ্যালয়টি পরিচালনা করে আসছি। পরিপত্রের নিয়মগুলো মেনেই প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। তিনি মামলা করেছেন, আমরা খারিজের জন্য আবেদন করেছি।

তিনি আরও বলেন, প্রধান শিক্ষক দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে শ্রেণিকক্ষ দখল করে বসবাস করছেন। এটা নিয়ে ইতোপূর্বে শিক্ষকদের তেমন আপত্তি ছিলো না। তবে সম্প্রতি সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে মামলা করায় বিষয়টি অন্য শিক্ষকদের গায়ে লেগেছে। এ কারণেই তারা এখন বরখাস্তকৃত প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে শ্রেণি কক্ষ মুক্ত করতে চাচ্ছেন।