৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ ঘোষণায় সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা

৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ হিসেবে ঘোষণায় সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা। ১৯৭১ সালের এই দিনটিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালির স্বাধীনতার ডাক দিয়েছিলেন। এছাড়া দেশের সব জেলা-উপজেলায় বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নির্মাণের বিষয়ে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব দিয়েছে।
এনিয়ে বিস্তারিত আলোচনার পর মন্ত্রিসভা ৭ মার্চকে বিশেষ দিবস হিসেবে ঘোষণার জন্য সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়কে নতুন করে প্রস্তাব আনতে বলেছে। সোমবার সভা শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন।
করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার ভার্চুয়াল বৈঠক হয়।
আনোয়ারুল বলেন, ৭ মার্চকে জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস হিসেবে ঘোষণা করা এবং মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এ সংক্রান্ত পরিপত্রের ‘ক’ শ্রেণিতে অন্তুর্ভুক্তকরণের প্রস্তাব সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় করেছিল।
হাইকোর্ট বছরের শুরুতে এক আদেশে ৭ মার্চকে ‘জাতীয় ঐতিহাসিক দিবস’ ঘোষণা করে এক মাসের মধ্যে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছিল। সেই সঙ্গে প্রতি উপজেলায় জাতির জনকের মুর্যাল নির্মাণের আদেশও দিয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এগুলো সভায় আলোচনা হয়েছে। ৭ মার্চ একটি ঐতিহাসিক দিবস এবং বঙ্গবন্ধুর ভাষণ ইউনেস্কো তাদের মেমোরি অব দ্য ওয়ার্ল্ড রেজিস্ট্রারে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এসব বিষয়ে আলোচনার পর ৭ মার্চকে জাতীয় দিবস ঘোষণা করার বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে মন্ত্রিসভা।
আনোয়ারুল বলেন, ৭ মার্চ, স্বাধীনতা দিবসকে কেন্দ্র করে সরকার অনেক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড হাতে নিয়েছে। তাই মন্ত্রিসভা আলাদাভাবে বঙ্গবন্ধুর কোনো মুর্যাল করার প্রয়োজন নেই বলে মনে করে। কারণ ওই প্রোগ্রামের মধ্যেই অনেক কিছু আছে।
হাইকোর্টকে এ জিনিসটি অবহিত করা হবে। পুরো যে প্রকল্প বাস্তবায়িত করা হচ্ছে হাইকোর্ট সম্ভবত সে বিষয়ে অবহিত না। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এখন হাইকোর্টে বিষয়টি উপস্থাপন করবে।”
এরপর ৭ মার্চকে বিশেষ দিবস হিসেবে ঘোষণার জন্য সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে নতুন করে মন্ত্রিসভায় প্রস্তাব আনতে বলা হয়েছে বলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান।
বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে, সেই ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ কোটি বাঙালিকে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
তিনি ঘোষণা দেন, এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম- এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
তার ওই ভাষণের ১৮ দিন পর পাকিস্তানি বাহিনী বাঙালি নিধনে নামলে বঙ্গবন্ধুর ডাকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ। নয় মাসের সেই সশস্ত্র সংগ্রামের পর আসে বাংলাদেশের স্বাধীনতা।
একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পরাজিত পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই আত্মসমর্পণের দলিলে সই করে।
বিভিন্ন দেশের ৭৭টি ঐতিহাসিক নথি ও প্রামাণ্য দলিলের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণকে ‘ডকুমেন্টারি হেরিটেজ’ হিসেবে ‘মেমোরি অফ দ্য ওয়ার্ল্ড ইন্টারন্যাশনাল রেজিস্টারে’ যুক্ত করেছে ইউনেস্কো।
ভোরের আলো/ভিঅ/১৩/২০২০