কমিশন আর একটি ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন করার জন্য বসেছেন-জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন আওয়ামী লীগের স্বার্থ রক্ষার জন্য আর একটি ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন, যা ২৯ তারিখ রাতে হয়েছিল, সেই নির্বাচন করার জন্য বসেছেন। যেহেতু বেশীরভাগ বিরোধী দল ইভিএম চায় না, সেহেতু আপনাদের চাওয়া অনুযায়ী নির্বাচন হলে নিরপেক্ষ রেজাল্ট আসবে না। বিরোধী দল যেটা চায় আপনার সেই জায়গায় আসেন। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স দিয়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিলে বুঝতাম নির্বাচন কমিশন কিছুটা সদিচ্ছা দেখাচ্ছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে বরিশাল প্রেসক্লাবের হলরুমে গণসংহতি আন্দোলন আয়োজিত ‘বর্তমান রাজনৈতিক সংকট উত্তরনে প্রস্তাবিত রাজনৈতিক রূপরেখার ভিত্তিতে গণসংহতি আন্দোলনের গণসংলাপ’ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন তিনি।
জোনায়েদ সাকি বলেন, আমরা ভোটাধিকার চাই। ভোটাধিকার মানে একটা ভোট নয়। ভোটাধিকার প্রয়োগের ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার নিশ্চয়তা। সেই নিশ্চয়তা যদি চান, তাহলে সরকার পতন তো লাগবেই। সেই সঙ্গে শাসন প্রক্রিয়ারও পরিবর্তন লাগবে।
সিইসির এমন বক্তব্যের উদ্বৃতি দিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ওরা যদি তলোয়ার নিয়ে আসে, আপনারা বন্দুক নিয়ে আসবেন, আমরা তলোয়ার আর বন্দুকের সঙ্গে যুদ্ধ করে তারপর ভোট দেবো। উনি এটার সমর্থন করেন। এই কথা বলার আগে ওনার পদত্যাগ করা উচিত ছিল। একটা দেশকে বলে দিচ্ছেন, ভোট দিতে হলে কিন্তু তোমাকে বন্দুকের রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকারে থাকবে, তার পেছন পুলিশ সহ সমস্ত রাষ্ট্র প্রশাসন থাকবে, তার সঙ্গে তোমরা যুদ্ধ করে তারপর ভোট দেবে। পরিষ্কারভাবে তিনি যুদ্ধের দিকে জনগণকে ঠেলে দিতে চাইছেন।
জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, উনি এসে বলনে, ইভিএমএর সিদ্ধান্ত তো আমরা নেবো। রাজনৈতিক দল নেবে না। কিন্তু বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো তো ইভিএমএর ওপর আস্থা রাখতে পারছে না। কারণ যন্ত্র তো নিজে থেকে কিছু ঠিক করে দেয় না। যন্ত্রের পেছনে যে আছে তার ওপর আমার আস্থা আছে কি না সেটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। যন্ত্রের পেছনে যারা আছেন, নির্বাচন কমিশনন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, তাদের প্রতি তো আমাদের আস্থা নাই। কারণ তারা তো আওয়ামী লীগের অঙ্গুলীহেলনে চলছেন।
তিনি বলেন, সত্যি যদি অন্যান্য বিরোধী দলগুলোকে নির্বাচনে আনতে চাইাতেন তাহলে তো আপনি ইভিএম ব্যবহার করবেন না। যেহেতু বেশিরভাগ বিরোধী দল ইভিএম চায় না, আওয়ামী লীগের চাওয়া অনুযায়ী নির্বাচন হলে বিরোধী দল আসবে না। বিরোধী দল যেভাবে চায়, সবাই যেভাবে চায়, সেই চাওয়ার জায়গায় আসেন। স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স দিয়ে নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিলে বুঝতাম নির্বাচন কমিশন কিছুটা সদিচ্ছা দেখাচ্ছে। তার মানে আস্তে আস্তে উনি (সিইসি) দেখাচ্ছেন, আসলে উনি আওয়ামী লীগেরই স্বার্থ রক্ষার জন্য আর একটি ২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন, যা ২৯ তারিখ রাতে হয়েছিল, সেই নির্বাচন করার জন্য বসেছেন। কাজেই এইরকম নির্বাচনে জনগণ যাবে না। নির্বাচন কমিশনের নিয়োগ যদি প্রধানমন্ত্রী দেয়, তাহলে এরকম নির্বাচন কমিশনই খুঁজে খুঁজে বের করা হবে। প্রথমে মনে হবে নিরপেক্ষ নিরপেক্ষ, আস্তে আস্তে তারা আসল চেহারাটা দেখিয়ে দেবেন। তাই আগামী নির্বাচন সংবিধান সংষ্কার হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে, যাতে কেউ জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে।
সংগঠনের সদস্য সাকিবুল ইসলাম সাফিনের সঞ্চালনায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গণসংহতি আন্দোলনের রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য মনির উদ্দীন পাপ্পু, কেন্দ্রীয় সদস্য আমজাদ হোসেন, জেলা কমিটির সদস্য সচিব আরিফুর রহমান মিরাজ, মহানগর জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক অধ্যাপক মহসিন-উল ইসলাম হাবুল, জেলা বাসদ সদস্য সচিব ডা. মানীষা চক্রবর্তী সহ অন্যান্যরা।