মেজর জেনারেল হলেন বরিশালের কৃতী সন্তান জিয়াউল আহসান

মেজর জেনারেল হলেন বরিশালের কৃতী সন্তান জিয়াউল আহসান

মেজর জেনারেল হিসেবে পদোন্নতি পেলেন এনটিএমসি’র পরিচালক জিয়াউল আহসান। একইসঙ্গে ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক হিসেবে পদায়ন করা হয়েছে বরিশালের কৃতী সন্তান সেনা কর্মকর্তা জিয়াউল আহসানকে।

আজ বৃহস্পতিবার সশস্ত্র বাহিনী থেকে এমন একটি আদেশ জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারির বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র বাংলাদেশ প্রতিদিনকে নিশ্চিত করেছে।

বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জিয়াউল আহসানের কাছে জানতে চাইলে তিনি সত্যতা নিশ্চিত করেন। এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, আমার উপর আস্থা রাখায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপর কৃতজ্ঞতার শেষ নেই। ভবিষ্যতেও অর্পিত দায়িত্ব নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।

দীর্ঘদিন পুলিশের এলিট ফোর্স র‌্যাবে দায়িত্ব পালন করেন জিয়াউল আহসান। ২০০৯ সালের ৫ মার্চ র‌্যাব-২-এর উপ-অধিনায়ক হিসেবে যোগ দেন তিনি। একই বছর ২৭ আগস্ট লেফটেন্যান্ট কর্নেল হিসেবে পদোন্নতি পেয়ে র‌্যাবের ইন্টেলিজেন্স উইংয়ের পরিচালক হন। ২০১৩ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে তিনি র‌্যাব ছাড়ার আগ পর্যন্ত অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

জিয়াউল আহসান ১৯৭১ সালের ১ জানুয়ারি বরিশালে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম নাসির উদ্দিন আহমেদ বরিশাল শহরের একজন সফল ব্যবসায়ী এবং মাতা মরহুম হোসনেয়ারা বেগম বরিশালের অন্যতম প্রচীন ও সুনাম সমৃদ্ধ স্কুল সিস্টারস্ ডে প্রাইমারি স্কুলের স্বনামধন্য শিক্ষক ছিলেন। বরিশালের সম্ভ্রান্ত ও সুশিক্ষিত এক বৃহৎ পারিবারিক বলয়ের পাঁচবোন এবং তিন ভাইয়ের মধ্যে জিয়াউল আহসান পরিবারের চতুর্থতম সন্তান। ১৯৮৫ সালে তিনি বরিশাল জিলা স্কুল থেকে এসএসসি এবং ১৯৮৭ সালে সরকারি ব্রজমোহন কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন। সর্বশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ক্রিমিওলজিতে মাস্টার্স সম্পন্ন করে, ১৯৯১ সালের ২১ জুন বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর পদাতিক অফিসার হিসেবে কমিশন্ড লাভ করেন। 

র‌্যাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় জিয়াউল আহসান দক্ষতা ও সর্বোচ্চ পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রাখেন। তার নেতৃত্বে র‌্যাব জাতীয় অনেক গুরুত্বপূর্ণ অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করে। র‌্যাবে দায়িত্ব পালনের সময় জেএমবি, হুজি ও আনসারুল্লাহসহ বিভিন্ন জঙ্গি সংগঠনের শীর্ষ নেতা, সাভারের রানা প্লাজার মালিক সোহেল রানা ও মাদক সম্রাট আমিন হুদাসহ অনেক শীর্ষ সন্ত্রাসীকে গ্রেফতারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। এছাড়া তিনি র‌্যাবকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করতে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম হন।

র‌্যাবের অতিরিক্ত মহাপরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকার সময় তাকে ডিরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্সের (ডিজিএফআই) ডিডিজি হিসেবে বদলি করা হয়। পরে তাকে সেখান থেকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থার (এনএসআই) পরিচালক হিসেবে সংযুক্ত করা হয় ২০১৬ সালের ২৮ এপ্রিল। ২০১৭ সালের ২ মার্চ থেকে এনটিএমসি’র পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর কমান্ডো ব্যাটালিয়নের এক চৌকষ প্যারাকমান্ডো হিসেবে সুখ্যাতি রয়েছে জিয়াউল আহ্সানের।