করোনা মোকাবেলার এই যুদ্ধ চিকিৎসকদের

করোনা মোকাবেলার এই যুদ্ধ চিকিৎসকদের

করোনা সারা দুনিয়ায় মহামারী আকার ধারণ করেছে। এটা একটা কঠিন যুদ্ধ। এই যুদ্ধে জয়ী হতে হলে আমাদের সচেতন ও সতর্ক থাকার কোন বিকল্প নেই। এই যুদ্ধ মোকাবেলার জন্য বিশেষ অস্ত্রও দরকার। সেই অস্ত্র যাদের হাতে তারা হচ্ছেন চিকিৎসক। যাদের আমরা ডাক্তার বলি। করোনার এই যুদ্ধ ডাক্তারদের। ডাক্তাররা সেবার মানসিকতা নিয়ে কাজ করছেন। তবে অভিযোগ আছে ডাক্তারদের মধ্যে কেউ কেউ চিকিৎসা দিতে অনিহা প্রকাশ করছেন। ভয় ও শঙ্কার কারণেই হয়তো তারা ওই অনিহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের কাজ করার জন্য আশ্বস্ত করতে হবে। সহাস যোগাতে হবে। এই মুহূর্তে ডাক্তারা চিকিৎসা দিতে অনিহা প্রকাশ করলে মানুষ কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে? সেই চিন্তা থেকে ঝুঁকির মধ্যে সুরক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে রোগির পাশে ডাক্তাররা থাকবেন এটা বিশ্বাস করি।

চিকিৎসকদের আশ্বস্ত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রনোদনা ঘোষণা করেছেন। যেসব ডাক্তাররা এই সময় চিকিৎসা সেবার সঙ্গে যুক্ত থাকবেন তাদের জন্য ১০ লাখ টাকার বীমা ঘোষণা করেছেন। এর সঙ্গে আরো কিছু বিষয় ঘোষণা করেছেন, সেগুলো উল্লেখ করার দরকার নেই। একই সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীকে চিকিৎসা না দেওয়ার অভিযোগ ওঠায় ক্ষুব্ধ হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন করোনায় চিকিৎসা সেবা না দিলে ডাক্তারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যথার্তই বলেছেন। কারণ করোনার কারণে সাধারণ রোগিরাও হয়রানীর শিকার হচ্ছেন। সেখান থেকে উত্তরণের জন্য ডাক্তারদেরই উদ্যোগ নিতে হবে। আমরা চাই, সারা বিশ্বের মতো বাংলাদেশের ডাক্তাররাও রোগিদের সেবায় নিবেদিত হবেন।

প্রথম দিকে চিকিৎসা সেবা নিয়ে একটা আশঙ্কার মধ্যে ছিল গোটা দেশ। করোনা প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ার আগেই বাংলাদেশের ডাক্তাররা চিকিৎসা সেবা দেওয়া অনেকটা বন্ধ করে দেন। বর্তমানে সেই অবস্থার উন্নতি হয়েছে। কিন্তু স্বাভাবিক হয়নি। ডাক্তারদের সুরক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য সরকার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে। তারপরও অনেক ডাক্তার আশ্বস্ত হতে পারছেন না। এরপর প্রধানমন্ত্রী ডাক্তারদের জন্য বিশেষ বীমা ঘোষণা করেন। আমরা মনে করি চিকিৎসকদের বীমা দিয়ে আশ্বস্ত করা যাবে না। তাদের মানবিক দিক দিয়ে আশ্বস্ত করতে হবে। করোনা যুদ্ধ মোকাবেলায় ডাক্তারদের ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া উত্তোরণ ঘটানো সম্ভব হবে না।

ডাক্তাররা বলছেন করোনায় তারাই সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে আছেন। আমরা এটা মেনে নিলেও বিশ্বাস করতে পারছি না। করোনা ছড়িয়ে পড়ার আতঙ্কে ডাক্তাররা সেবা বন্ধ করে দিয়ে যথার্থই করেছেন বলে মনে করেন অনেকে। তাহলে যারা প্রতিদিন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের শহর-বন্দর পরিচ্ছন্ন রাখছেন তাদের কি পরিচ্ছন্ন কাজ বন্ধ রাখা উচিত ছিল না? কোন ধরণের ব্যক্তিগত সুরক্ষা ষড়ঞ্জাম ছাড়াই তারা পরিচ্ছন্নতা কাজ অব্যাহত রেখেছেন। তাদের মাধ্যমে করোনা ছড়িয়ে পড়লে সেখান থেকে ডাক্তাররা রক্ষা পাবেন না। কেবল ডাক্তার নয়, জাতিকে করোনা মুক্ত করতে হলে ডাক্তারদের সঙ্গে সঙ্গে পরিচ্ছন্নতাকর্মী, হাসপতালের আয়া-বুয়া, নার্স, গণমাধ্যমকর্মী, পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং জনপ্রশাসনকর্মীদের সুরক্ষায় ব্যবস্থা নিতে হবে। সবাই মিলে যার যার অবস্থান থেকে করোনা মোকবেলায় দায়িত্ব পালন করতে হবে।

আমরা বিশ্বাস করি করোনায় ডাক্তারদের ঝুঁকি একটু বেশি। কিন্তু চিকিৎসা সেবা থেকে দূরে থাকলে আপনার ঝুঁকি এতটুকু কমবে না বরং অনেক ক্ষেত্রে বাড়বে। তাই আপনাদের ঝুঁকির সঙ্গে আমরা সেইভাবে সহযোদ্ধা হতে পারবো না। তবে সহস নিয়ে আপনাদের পাশে থাকতে পারবো। আপনারা এই দুর্যোগ মোকাবেলয় অনন্য যোদ্ধা হয়ে পাশে থাকুন। অবশ্যই আমরা করোনা মোকাবেলায় সচেষ্ট হবো।