বীর মুক্তিযুদ্ধা, ১১ নম্বর সেক্টর কমান্ডার ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কর্নেল (অব.) আবু তাহেরের (বীরউত্তম) ৪৩তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (২১ জুলাই)। ১৯৭৬ সালের এই দিনে জেনারেল জিয়া তাকে এক প্রহসনের বিচারে সামরিক ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে দেয়া মৃত্যুদণ্ড ফাঁসিতে ঝুলিয়ে কার্যকর করেন।
তাহেরের ফাঁসির পর থেকে তার পরিবারসহ বিভিন্ন মহল ওই বিচারকে প্রহসনের বিচার এবং তাকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করে আসছে। তারা এ বিচারের রায় বাতিল, মামলার দলিলপত্র প্রকাশ এবং কর্নেল তাহেরের রাষ্ট্রীয় সম্মান পুনঃপ্রতিষ্ঠার দাবি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের মার্চে হাইকোর্ট কর্নেল তাহেরের বিচারকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করেন এবং তাকে মরণোত্তর দেশপ্রেমিকের মর্যাদা দেয়ারও নির্দেশ দেন।
কর্নেল তাহেরের মৃত্যুবার্ষিকীকে বিভিন্ন দল ও সংগঠন ‘তাহের দিবস’ হিসেবে পালন করে থাকে। জাসদসহ বিভিন্ন সংগঠন এ দিনটি উপলক্ষে আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
কর্নেল আবু তাহের ১৯৩৮ সালের ১৪ নভেম্বর ভারতের আসাম প্রদেশের বাদারপুরে জন্মগ্রহণ করেন। পরে তার পরিবার বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার পূর্বধলায় আসেন। তার বাবার নাম মহিউদ্দিন আহমেদ এবং মা আশরাফুন্নেসা। কর্নেল তাহের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পড়াশোনা শেষ করেন চট্টগ্রামের প্রবর্তক বিদ্যালয় ও কুমিল্লার ইউসুফ বিদ্যালয় থেকে। পরবর্তীতে ১৯৫৯ সালে সিলেটের এমসি কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে পড়াশোনা করেন।
আবু তাহের ১৯৬১ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে অফিসার হিসেবে যোগ দেন এবং ১৯৬২ সালে কমিশনপ্রাপ্ত হন। ১৯৬৫ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে কাশ্মীর আর শিয়ালকোট সেক্টরে যুদ্ধ করেন তিনি। ওই যুদ্ধে তিনি আহতও হন। একমাত্র বাঙালি অফিসার হিসেবে তাকে ‘মেরুন প্যারাস্যুট উইং’ সম্মাননা প্রদান করা হয়।