চট্টগ্রাম বন্দরের ভয়াবহ আগুন

চট্টগ্রাম বন্দরের ভয়াবহ আগুন

চট্টগ্রাম বন্দরের মালামাল রাখার একটি শেডে ভয়াবহ আগুন নেভাতে বুধবার সারারাত লেগেছে দমকল বাহিনীর সদস্যদের।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৮টায় এ রিপোর্ট পর্যন্ত আগুন নেভানোর কাজ করছেন তারা।

তবে এ অগ্নিকাণ্ডে শেডের ভেতরে থাকা বিপুল পরিমাণ মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

চট্টগ্রাম বন্দর ফায়ার স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন অফিসার মো. শামীম মিয়া বলেন, বুধবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলেও দমকল বাহিনীর সদস্যদের সারারাত আগুন নেভানোর কাজ করতে হয়েছে। এখনো শেডের বিভিন্ন স্থানে ছোট ছোট আগুনগুলো নেভানোর কাজ চলছে।

শেডের ভেতরে বিপুল পরিমাণ মালামাল পুড়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা আসার পর কখন আগুন সম্পূর্ণভাবে নির্বাপন হয়েছে, আগুণে কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, আমরা কী পরিমাণ সম্পদ আগুন থেকে রক্ষা করতে পেরেছি- এ বিষয়ে ধারণা দেয়া যাবে।

এদিকে আগুনের ঘটনা তদন্তে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গঠিত ৫ সদস্যের তদন্ত টিম বৃহস্পতিবার তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবে বলে জানিয়েছেন টিমের প্রধান চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলম।

দমকল বাহিনী সূত্র জানায়, বুধবার বিকেল ৪টা ১৫মিনিটে চট্টগ্রাম বন্দরের তিন নম্বর শেডে আগুন লাগার খবর পেয়ে বন্দর, আগ্রাবাদ ও সিইপিজেড স্টেশন থেকে ১৪টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে আসে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বন্দরের শেডে আগুন লাগার পরপরই আগুনের লেলিহান শিখা দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। এসময় কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী পুরো এলাকা ছেঁয়ে যায়। বিভিন্ন ধরণের দাহ্য পদার্থ ও কেমিকেল থাকার কারণে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে এবং তা নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল বাহিনীর সদস্যদের বেগ পেতে হয়।

আগুনের খবর পেয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল এস এম আবুল কালাম আজাদসহ বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যান।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বুধবার সন্ধ্যা ৭টায় ফায়ার সার্ভিসের বরাত দিয়ে বলেন, আগুন মোটামুটি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে এখনো তারা আগুন নেভানোর কাজ করে যাচ্ছে।

তিনি জানান, ওই শেডে বহু বছরের পুরোনো বিভিন্ন ধরনের মালামাল রয়েছে। যেগুলোর কোনো দাবিদার নেই। মূলত ওই কাস্টমসের অকশনযোগ্য মালামাল রাখা ছিল।

তিনি আরও জানান, আগুন লাগার কারণ এবং কী পরিমাণ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে তা তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি।

এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (প্রশাসন ও পরিকল্পনা) জাফর আলমকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে।

জানতে চাইলে তদন্ত কমিটির প্রধান জাফর আলম দেশ রূপান্তরকে বলেন, আজ বৃহস্পতিবার তারা তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবেন।

তিনি বলেন, কিভাবে আগুন লাগলো, কী ধরণের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, ওই শেডে দীর্ঘদিন ধরে এভাবে মালামাল রাখার ঝুঁকি, কী কারণে এতদিন মালামালগুলো রয়ে গেল- এ বিষয়গুলো আমরা দেখবো এবং আমাদের প্রয়োজনীয় সুপারিশ তুলে ধরবো।


ভোরের আলো/ভিঅ/১৬/২০২০