চাপে পরিবহন আইন সংশোধন চেষ্টা আত্মঘাতী: টিআইবি

চাপে পরিবহন আইন সংশোধন চেষ্টা আত্মঘাতী: টিআইবি


 
বাস্তবায়নের আগে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধন চেষ্টার নিন্দা জানিয়েছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

দুর্নীতি বিরোধী সংগঠনটি বলছে, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের চাপে সাজার মেয়াদ কমানোসহ আইনে জনস্বার্থবিরোধী অনেক সংশোধনী আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। যা উচ্চ আদালতের অবমাননা ও প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনার পরিপন্থী। পুরো বিষয়টি অন্যায্য ও আত্মঘাতী উল্লেখ করে সেখান থেকে সরকারকে সরে আসার আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।

শনিবার টিআইবির জনসংযোগ বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।

গত বছর নিরাপদ সড়ক চেয়ে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ পাস করে সরকার। একই বছরের ৮ অক্টোবর এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশ করে আইন মন্ত্রণালয়। তবে আইনটি নিয়ে মালিক-শ্রমিকদের অসন্তোষ থাকায় এখনো সেটি কার্যকর করা সম্ভব হয়নি বলে দাবি করে আসছেন সড়ক নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা।

এরই মধ্যে গত ২৫ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ে পরিবহন মালিক ও শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সভা শেষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক পরিবহন আইন সংশোধনের সুপারিশ সংবলিত প্রতিবেদন জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের কাছে দাখিল করতে যাচ্ছেন বলে জানান।

এ সময় আসাদুজ্জামান খান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আইনটি যখন করা হয়, তখন তাদের (পরিবহন মালিক-শ্রমিক) কিছু দাবি-দাওয়া ছিল। সেই দাবি-দাওয়া সম্পূর্ণভাবে আইনে আসেনি, এটি তাদের ডিমান্ড ছিল। সে জন্য পাস হওয়া আইন প্রয়োগের কোথায় সমস্যা হচ্ছে, কেন হচ্ছে সেটা আমরা দেখার জন্য বসেছি।’ একই সাথে আইনটি সংশোধন হবে বলে ইঙ্গিত দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরের প্রসঙ্গে বিবৃতি পাঠায় টিআইবি। এতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদ অনুযায়ী, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের অযৌক্তিক দাবিদাওয়া ও চাপের কাছে সরকার যদি নতি স্বীকার করে তা হবে আদালত অবমাননা ও জনস্বার্থের পরিপন্থী। বিশেষ করে সড়ক পরিবহন আইন ভঙ্গের জন্য সাজার মেয়াদ কমানোর দাবিটি সরাসরি সর্বোচ্চ আদালতের রায়ের সাথে সাংঘর্ষিক। এছাড়া আইনের সকল ধারা জামিনযোগ্য করাসহ অর্থদণ্ড কমানো ও ড্রাইভিং লাইসেন্স পাওয়ার শিক্ষাগত যোগ্যতা পঞ্চম শ্রেণি করা সড়ক পরিবহন ব্যবস্থায় সুশাসন, ন্যায়বিচার, জননিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় কোনোভাবেই সহায়ক হবে না।

তিনি আরও বলেন, আইন সংশোধনের ক্ষেত্রে প্রতিবেশী দেশগুলোর আইনের সাথে তুলনামূলক সামঞ্জস্যের যুক্তির কথা বলা হলেও পরিবহন মালিক-শ্রমিকদের চাপেই আইনটি দুর্বল করে দেওয়ার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে।