জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় থাকছে

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষায় থাকছে

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সরকার যে সমন্বিত বা গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার কথা ভাবছে, সে পদ্ধতিই অনুসরণ করবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মীজানুর রহমান  বলেন, ‘আমরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেব।’

সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা সংক্রান্ত উপাচার্যদের কমিটির এই সদস্যের মতে, সব বিশ্ববিদ্যালয় সমন্বিতভাবে পরীক্ষা নিলে শিক্ষার্থীদের ভোগান্তি কমে আসবে।

‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগীয় শহরে পরীক্ষার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এটা ইতিবাচক। যেহেতু এ বছর বিশেষ একটা পরিস্থিতি, সে জন্য যানজট ও পরিবহনের চিন্তা করে ঢাবির পরীক্ষা বাংলাদেশের সব জায়গায় হবে। অতএব পরীক্ষাটা সম্মিলিতভাবে সবাই একদিনে নিয়ে নিলেই তো হয়ে যায়।’

উপাচার্য মীজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের সবগুলো বিশ্ববিদ্যালয় বিভাগীয় সদরেই আছে। ঢাবির সিদ্ধান্ত যদি সবাই মেনে নিই, সব শহরে একদিনে পরীক্ষা হবে; এ পরীক্ষার ফলাফলই সবাই গ্রহণ করবে, তাহলেই তো ঘটনাটা শেষ হয়ে যায়।’

২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষে তিনটি ইউনিটে শিক্ষার্থী ভর্তির আবেদন নিয়েছিল জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।

পরে এসএসসি ও এইচএসসির ফলাফল অনুযায়ী প্রাথমিক আবেদনকারীদের মধ্যে থেকে প্রতি ইউনিটে বাছাইকৃত ২৫ হাজার শিক্ষার্থী লিখিত পরীক্ষায় বসেছিলেন।

দেড় ঘণ্টার ৭২ নম্বরের লিখিত পরীক্ষার পাশাপাশি এসএসসির ১২ ও এইচএসসির ১৬ মিলিয়ে মোট ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে ২৭৬৫ আসনে শিক্ষার্থী ভর্তি করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়টি।

পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ও ২০০ নম্বরের পরিবর্তে ১০০ নম্বরের ভিত্তিতে শিক্ষার্থীদের মূল্যায়ন করবে।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার ধরন নিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বলেন, ‘যখনই পরীক্ষা হোক, তা উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাসের উপর হবে। কমন সাবজেক্ট যেগুলো, সেগুলো নিয়ে হবে।’

‘তিন বিভাগের তিনটা পরীক্ষা হবে। পরীক্ষা নিয়ে প্রত্যেককে স্কোর দেওয়া হবে, একশর মধ্যে কত পেল। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের শর্ত অনুযায়ী তাদের ভর্তি করবে। শর্ত দিয়ে, ‍বিজ্ঞাপন দিয়ে যার যার মতো করে অনলাইনে ভর্তি করে ফেলবে।’

মূল্যায়নের ক্ষেত্রে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার ফলাফল যোগ হবে কিনা, তা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নিজেদের মতো সিদ্ধান্ত নেবে বলেও জানান অধ্যাপক মীজানুর রহমান।

এবার জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে এইচএসসির ফল মূল্যায়ন করা হবে। এতে ১৩ লাখ ৬৫ হাজারের বেশি শিক্ষার্থীর সবাই পাস করবেন; যাদের ফল প্রকাশ হবে ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে।

এই শিক্ষার্থীরা ৩৯টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬০ হাজার আসনে স্নাতক প্রথম বর্ষে ভর্তির যুদ্ধে নামবেন।

শিক্ষার্থীদের দুর্ভোগ ও ব্যয় লাঘবে কয়েক বছর ধরেই সব পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তিতে সমন্বিত পরীক্ষার চেষ্টা করছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আচার্য রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদও এ বিষয়ে নির্দেশনা দিয়েছিলেন।

কিন্তু বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর আপত্তিতে তা সম্ভব না হওয়ায় গত বছর ইউজিসি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা গুচ্ছ পদ্ধতিতে নেয়।

গত ১১ ফেব্রুয়ারি সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠক করে সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার কথা বলেছিল ইউজিসি, কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের আপত্তিতে সে উদ্যোগও এগোয়নি।

এবার মহামারির কারণে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি তোড় জোর চালালেও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় নিজেদের মতো পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়।

এই পরিস্থিতিতে গত রোববার চারটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের সঙ্গে সভা করে তাদের ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান শিক্ষামন্ত্রী।

এ ছাড়া এবার ভর্তি পরীক্ষা কীভাবে হবে সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে শিগগিরই উপাচার্যদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় পরিষদ ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে বসতে যাচ্ছে ইউজিসি। বৈঠকের প্রস্তাবিত পদ্ধতি নির্ধারণে বৃহস্পতিবার ইউজিসি নিজেদের মধ্যে একটি সভাও ডেকেছে।