জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করতে হবে

জলবায়ু পরিবর্তনে তরুণদের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পায় এই জন্য যে জলবায়ু পরিবর্তনের নেতিবাচক প্রভাব অন্যান্য জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি তরুণ প্রজন্মকেও ক্ষতিগ্রস্ত করছে। যতদিন যাচ্ছে এই প্রভাব প্রকট হচ্ছে। জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে সচেতন ও সম্পৃক্ত করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য। জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন জাতীয় স্বার্থের প্রেক্ষিতে প্রাধান্য দেয়া হচ্ছে। তাই জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনে তরুণ প্রজন্মকে সম্পৃক্ত করতে হবে।
গত সোমবার বিকেলে ‘জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও তরুণদের করণীয়’ শীর্ষক ওয়েবিনারে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান এসব কথা বলেন।
বাগেরহাট জেলার সনাক সভাপতি প্রফেসর চৌধুরী আব্দুর রবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওয়েবিনারে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান, খুলনা বিশ^বিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. দিলীপ দত্ত। আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন টিআইবির জনসম্পৃক্তকরণ বিভাগের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস। সম্মানিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পরিবেশ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. এমদাদুল হক. পরিবেশ অধিদপ্তরের বরিশাল বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী বায়োকেমিস্ট মো: মুনতাসির রহমান।
ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)’র খুলনা ক্লাস্টারের ১১টি সচেতন নাগনিক কমিটি (সনাক) এর যৌথ আয়োজনে ওয়েবিনারে মূল প্রেজেন্টশন উপস্থাপন করেন টিআইবির জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন, গবেষণা ফেলো মো: নেওয়াজুল মওলা।
তিনি জলবায়ু পরিবর্তন: কী, কারন, প্রভাব, জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় বৈশি^ক ও জাতীয় পর্যায়ে গৃহিত পদক্ষেপসমূহ এবং জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিতে টিআইবি’র অভিজ্ঞতা/উদ্যোগসমূহসহ জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থাপনায় সুশাসন নিশ্চিতে তরুণদের ভূমিকা ও করণীয় বিষয়সমূহ উপস্থাপন করেন।
অলোচকের বক্তব্যে অধ্যাপক ড. দিলীপ দত্ত বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বলতে বর্তমানে সেই পরিবর্তনকেই বোঝানো হচ্ছে যা মনুষ্য সৃষ্টি। মানুষ্য সৃষ্টি জলবায়ু পরিবর্তন ৫ শতাংশের কম, কিন্তু এখন আমরা লক্ষ্য করছি এই ৫ শতাংশই খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে আমাদের কাছে ধরা পড়ছে। কিছু কিছু বিষয় পরিবর্তন করা যাবে না। আমরা নদীগুলোকে মেরে ফেলছি। নদীর গভীরতা কমে যাচ্ছে। আমরা নদী ভাঙনকে তরান্বিত করছি। পরিবেশকে আঘাত করা যাবে না। জলবায়ু পরিবর্তন যে প্রতিঘাত হয় তরুন সমাজকে সেই আঘাত রোধ করতে হবে।
আলোচনায় টিআইবি সিভিক এনগেজমেন্টের পরিচালক ফারহানা ফেরদৌস বলেন, তরুণদের প্রশ্ন করতে হবে। তথ্যের অবাধ প্রবাহ এবং জনসম্পৃক্ততা থাকতে হবে। আমরা পরবর্তীতে সোশ্যাল মনিটরিং-এর জন্য মোবাইল এ্যাপের মাধ্যমে তরুণদের দ্বারা বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করব। যেখানে তরুণেরাই মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করবে।
সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে খুলনা বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. এমদাদুল হক বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব মোকাবেলায় বর্তমান সরকার বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নিয়েছে। এছাড়াও জনসাধারনকে সম্পৃক্ত করবার জন্য বিভিন্ন প্রচারণার ব্যবস্থা করে থাকি। এক্ষেত্রে তরুণদেরকে এগিয়ে আসতে হবে।
ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) বরিশালের সভাপতি প্রফেসর শাহ্ সাজেদা, সনাক-খুলনার সভাপতি অ্যাডভোকেট শামীমা সুলতানা শিলু, সনাক-কুষ্টিয়ার সভাপতি মো: রফিকুল আলম টুকু, সনাক-পিরোজপুরের সভাপতি অ্যাডভোকেট মো: শহীদুল্লাহ খানসহ বিভিন্ন সনাক এর ইয়েস আহ্বায়ক ও সিএফজি উপকমিটির আহ্বায়কবৃন্দ।
খুলনা ও বরিশাল বিভাগের ১১টি সনাকের প্রতিনিধিবৃন্দসহ দুইশতাধিকেরও অধিক তরুন শিক্ষার্থী এই ওয়েবিনারে অংশগ্রহণ করেন। ওয়েবিনারের মুক্ত আলোচনায় তরুন শিক্ষার্থীরা অংশ নেন এবং জলবায়ু অর্থায়নে সুশাসন নিশ্চিতে তাদের করণীয় বিষয়ে গুগল ফরমেটের মাধ্যমে একটি কর্মপরিকল্পনা প্রস্তুত করেন। এছাড়া ওয়েবিনারে টিআইবি’র বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাবৃন্দ সংযুক্ত ছিলেন।