জাবিতে আমরণ অনশনে গুরুতর অসুস্থ ৫

চাকরি স্থায়ীকরণের এক দফা দাবিতে টানা দ্বিতীয় দিনের আমরণ অনশনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত ১৫৬ কর্মচারী। মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে চারটা পর্যন্ত এই অনশনে জ্ঞান হারিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন ৫ কর্মচারী। গুরুতর অসুস্থ ৩ জনকে সাভারের এনাম মেডিকেলে ভর্তি করানো হয়েছে বলে জানান অনশনকারী বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের পিয়ন ফরহাদ হোসেন।
অসুস্থরা হলেন-বঙ্গমাতা হলের এটেনডেন্ট আবু রায়হান, শেখ হাসিনা হলের ক্লিনার রিফা সুলতানা, বেগম সুফিয়া কামাল হলের নূর নাহার বেগম, শেখ হাসিনা হলের মালি শরিফুল ইসলাম ও শহীদ রফিক-জব্বার হলের নিরাপত্তারক্ষী সেলিম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রের উপ-প্রধান মেডিকেল অফিসার ডা. রিজওয়ানুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, পাঁচজনের মধ্যে তিনজনকে এনাম মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে এবং একজনকে আমরা স্যালাইন দিয়েছি। অন্যজন এখন সুস্থ আছে। অসুস্থদের সবাই খাবার না খাওয়ায় এসিডিটির সমস্যায় এমন হয়েছে।
অনশনকারী তারিকুল ইসলাম বলেন, প্রায় আট দশ বছর ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে দৈনিক ৪০০ টাকায় মজুরি ভিত্তিতে চাকরি করছেন তারা। চাকরি দেয়ার প্রাথমিক পর্যায়ে তিন মাস পরে তাদের চাকরি স্থায়ী করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছিল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো বাস্তব পদক্ষেপ দেখা যায়নি, বরং বিভিন্ন সময়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে নতুন পদে বাইর থেকে লোক নেয়া হয়েছে। এখন প্রশাসন আবারও আগের মতো বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আবেদন করতে বলছে। কিন্তু আবেদন করলে আমাদের স্থায়ীভাবে নেয়া হয় না। এখন আমরা আমরণ অনশনে আছি, তারা চাকরির নিশ্চয়তা না দেয়া পর্যন্ত আমরা এখানে থাকবো।
এদিকে আন্দোলনরতদের অনশন প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তবে এতে সাড়া দেননি অনশনকারীরা। বরং তাদের চাকরি স্থায়ী হওয়ার নিশ্চয়তা না দেওয়া পর্যন্ত আমরণ অনশন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
এদিকে আন্দোলনকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র ইউনিয়ন সংসদের সাধারণ সম্পাদক অমর্ত্য রায় বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, অনশনকারীদের যৌক্তিক দাবি আদায়ে পাশে থাকবে জাবি ছাত্র ইউনিয়ন। আমরা আশা করবো, যত দ্রুত সম্ভব প্রশাসন অনশনকারীদের সাথে আলোচনা করে তাদের চাকরি স্থায়ী করার ব্যাপারে সিদ্ধান্তে উপনীত হবে। নতুবা অনশনকারীদের দাবি আদায়ে আন্দোলনের ডাক দেবে ছাত্র ইউনিয়ন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ফিরোজ-উল-হাসান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সবমিলিয়ে নতুন হলগুলোতে প্রায় ৭৩টি শূন্য আসন রয়েছে। আন্দোলনকারীদের অধিকাংশই মালি, বাবুর্চি, পিয়ন, ক্লিনার হিসেবে বর্তমানে কাজ করছে। কিন্তু নতুন হলে এ ধরনের কোনো পদই নেই। তাছাড়া ১৫৫ জনকে একসাথে কারো পক্ষে চাকরি স্থায়ী করা সম্ভব নয়। আমরা তাদের অনশন প্রত্যাহার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি এবং ভিসি স্যার বলেছেন তাদের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী আবেদন করলে তাদেরকে অগ্রাধিকার দেয়া হবে। কিন্তু তারা চাকরির নিশ্চয়তা চায়, এটা কারো পক্ষে দেয়া সম্ভব না।