ডেঙ্গু। এই শব্দ শুনলে শরীরে একধরণের কাঁপনী শুরু হয়। ডেঙ্গু জ¦র কিংবা চিকনগুণিয়া এখন এক আতংকের নাম। সারা দেশে ডেঙ্গুর প্রভাব চিন্তিত করে তুলছে চিকিৎসকসহ সাধারণ নাগরিকদের। নানা সচেতনতা মূলক কর্মসূচি চলছে দেশজুড়ে। তারপরও কমছে না ডেঙ্গুর প্রভাব।
ডেঙ্গু সম্পর্কে আমাদের স্বচ্ছ ধারণা নেই বলে মনে হচ্ছে। আমরা মনে করি মশার কামড়েই ডেঙ্গু হয়। যে কোন মশার কামড়ে ডেঙ্গু ছড়ায়। তাই আমরা ঝোপঝাড় ময়লা আবর্জনা পষ্কিার করতে ব্যস্ত হয়ে পরি। তাতে মশার উপদ্রব কিছুটা কমেও বটে। কিন্তু তাতে কি ডেঙ্গুর প্রভাব কমবে বলে মনে হয়? কমবে না। কারণ ওই মশা ডেঙ্গু ছড়ায় না। এ বিষয়টি নগর ভবন কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানবে এটা আমাদের বিশ্বাস। বিশেষ করে নগর ভবনের স্বাস্থ্য বিভাগ অব্যই জানে। তারা ডেঙ্গুর প্রভাব থেকে নাগরিক সচেতনতা বৃদ্ধিতে কাজ করবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু কিভাবে ডেঙ্গু ছড়ায় সেটা নগরবাসী সেভাবে জানে না, কিংবা জানলেও মানে না।
বরিশাল মহানগরে মশার উপদ্রব কমাতে কার্যকর ব্যবস্থা নেই। যদিও নগরভবন কর্তৃপক্ষের দাবি ওষুধের স্বল্পতার কারণে প্রতি ওয়ার্ডে সপ্তাহে দুই একদিন পরপর ওষুধ ছিটানো হয়। তবে বাস্তব চিত্র অন্য কথা বলে। সে যাই হোক। ডেঙ্গুর প্রভাব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেয়র মহোদয় নগরবাসীকে আতংকিত না হতে আহ্বান জানিয়েছেন। মেয়রের আহ্বানের সঙ্গে সঙ্গে নগর ভবনের স্বাস্থ্য বিভাগ বরিশাল মহানরীতে মশার ওষুধ ছিটানো বাড়িয়ে দিয়েছে। এটা আশার কথা যে ওই ওষুধের কারণে স্বাভাবিকভাবেই মশার উপদ্রব কিছুটা কমেছে।
কিন্তু ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ানোর এডিস মশার উপদ্রব কি তাতে কমবে? উত্তর হবে, কমবে না। কারণ এডিস মশার বিস্তার ঝোপঝাড় কিংবা ময়লা আবর্জনার নর্দমায় হয় না। এডিস মশা হচ্ছে অনেকটা সৈয়দ কিংবা কুলিন মশার প্রজাতি। তাদের কৈলুন্য বজায় রাখতে তারা স্বচ্ছ পানিতে বংশ বিস্তার করে। তাও আবার স্রােত আছে এমন জলাশয় নয়। এডিশ মশা বিস্তার ঘটে বাড়ির ছাদ কিংবা আঙিনায় রাখা টবের জল, বালতিতে কয়েকদিন ধরে জমানো জলে। তাই তারা সহজেই আক্রমণ করতে পারে। ভয়ের বিষয় হচ্ছে ডেঙ্গু ভাইরাস ছড়ানো এডিস মশা রাতে নয় দিনে আক্রমণ করে। ফলে ডেঙ্গু নামক ভাইরাসে অনায়াসেই আক্রান্ত হই আমরা। তাই বলতে হয়, এডিশ মশার উপদ্রব কমাতে সচেতনতা বাড়ানোর বিকল্প নেই।
মাননীয় মেয়রের আহ্বান ডেঙ্গু জ¦রে আতংকিত না হওয়ার। আমরা তাঁর আহ্বানে সাড়া দিতে চাই। কেবল সাড়া দিলেই হবে না। আমাদের বাড়ির আঙিনায় স্বচ্ছ জল যাতে না জমে সেদিকে নজর রাখতে হবে। একই সঙ্গে বাড়ির ছাদে, টবে যাতে জল না জমে সেদিকেও লক্ষ্য রাখতে হবে। তাহলে ডেঙ্গু ছড়াতে পারবে না। আমরা মুক্ত হবো ডেঙ্গু নামক ভাইরাসের আক্রমণ থেকে।