তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস করছে মানুষ

তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস করছে মানুষ
বাংলা পঞ্জিকার হিসেব মতে মধুমাস জ্যৈষ্ঠের শেষ দিন শুক্রবার (১৪ জুন)। অর্থাৎ গ্রীষ্মের বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। বৃষ্টি ঝরুক আর নাই বা ঝরুক শনিবার (১৫ জুন) পহেলা আষাঢ়। তবে হাঁসফাঁস গরম থেকে মুক্তির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না এখনও। শুক্রবার বরিশালে তাপমাত্রার পারদ উঠেছে ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। জ্যৈষ্ঠ মাসের বেশি সময় ধরে বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ওঠানামা করছে। এতে অস্থির হয়ে পড়ছে জনজীবন। বিশেষ করে শহরে মানুষরা দুর্বিষহ জীবন-যাপন করছেন। প্রতিদিনই বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যেন পাল্লা দিয়ে বাড়ছে তাপমাত্রা। একটু বৃষ্টির জন্য চারিদিকে হাহাকার পড়ে গেছে। তাপমাত্রার দাপটে মানুষের পাশাপাশি পশু-পাখিরাও গরমে কষ্ট পাচ্ছে। শেরে-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হিটস্ট্রোক ও ডায়রিয়াসহ গরমজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মানুষজনের ভর্তি হওয়ার সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় মনে হচ্ছে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি, মানুষ মাত্রাতিরিক্ত ঘামছেন তাই ঘরের বাইরে বের হলেই মানুষ সঙ্গে নিচ্ছেন ছাতা এবং পানির বোতল। গরমের কারণে বিভিন্ন স্থানে গাছের ছায়ায় অনেকেই বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন। আর পথচারিরা ভিড় করছেন ফুটপাতের শরবত এবং ডাব বিক্রেতাদের কাছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রাকে ‘মৃদু’, ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে ‘মাঝারি’ এবং ৪০ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। জানতে চাইলে বরিশালের আবহাওয়া অফিসের জেষ্ঠ পর্যবেক্ষক প্রদীপ কুমার ভোরের আলোকে বলেন, শুক্রবার বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৩৪ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৮ দশমিক ০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এদিকে, আবহাওয়া অধিদফতরের ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বর্ধিতাংশ পশ্চিম থেকে উত্তর-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগ অতিক্রম করে বাংলাদেশের পূর্বাংশ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। এতে বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় রংপুর, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং খুলনা বিভাগের দুই এক জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেইসঙ্গে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, নেত্রকোণা, কুষ্টিয়া, যশোর, রাজশাহী, রংপুর ও সিলেট বিভাগের ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। তবে কিছু কিছু জায়গায় তা প্রশমিত হতে পারে। যদিও ২৪ ঘণ্টায় ভারী বর্ষণের সম্ভাবনা নেই। ১৬ জুনের পরে ঢাকার তাপমাত্রা কমতে পারে। এতে বৃষ্টির প্রবণতা বাড়বে। ৭২ ঘণ্টার মধ্যে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেশের অবশিষ্টাংশে বিস্তার লাভ করতে পারে।