দিল্লিতে হাসিনা-মোদি বৈঠক ৮ সেপ্টেম্বর

দিল্লিতে অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে আগামী শুক্রবার (৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নয়া দিল্লিতে বৈঠকে বসবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। বৈঠকে তিস্তাসহ গুরত্বপূর্ণ ইস্যুতে আলোচনা করতে চায় ঢাকা।
মঙ্গলবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব কথা জানান পররাষ্ট্রসচিব মাসুদ বিন মোমেন।
পররাষ্ট্রসচিব বলেন, ৮ তারিখ সন্ধ্যার সময় বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক অনেক ইস্যু রয়েছে। এগুলো সবগুলো নিয়ে আলাপ হবে। আমাদের কানেক্টিভিটি ইস্যু আছে, তিস্তার পানির বিষয়ে কথা বলব। এরপর এনার্জি সিকিউরিটি, ফুড সিকিউরিটি নিয়ে আলাপ হবে।
মাসুদ বিন মোমেন বলেন, দুই দেশের মধ্যে এখন প্রচুর প্রজেক্টও রয়েছে, সেগুলোর অগ্রগতি নিয়ে আলাপ হবে। পুরো দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে নিয়ে আলাপ করার সুযোগ হবে না। তারপরও যত গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু রয়েছে সেগুলো নিয়ে আলাপ হবে।
বাংলাদেশে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির এটাই হবে শেষ দ্বিপক্ষীয় বৈঠক। সে কারণে এ বৈঠক নিয়ে যথেষ্ট আগ্রহ দুই দেশেই রয়েছে।
অন্যদিকে দিল্লিতে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যাওয়ার আগে ৭-৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ সফর করবেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ঢাকা সফরের সূচি নির্ধারণের পর সরকারপ্রধানের ঢাকা ও দিল্লির বৈঠকের সূচিরও পরিবর্তন ঘটেছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর এবং ফ্রান্স প্রেসিডেন্ট ও রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর ঢাকা সফরের সূচি নির্ধারণে হিমশিম অবস্থা ঢাকা, দিল্লি, মস্কো ও প্যারিসের কর্মকর্তাদের। সম্ভাব্য সূচি অনুসারে, ঢাকায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সৌজন্য সাক্ষাৎটি আগামী শুক্রবার সকালে হবে। এরপর সেদিন দুপুরের মধ্যে সরকারপ্রধান দিল্লি পৌঁছবেন। ওইদিন বিকেলেই তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। আর ১০ সেপ্টেম্বর বিকেলে অথবা সন্ধ্যায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ হাসিনার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে।
এদিকে ঢাকার ফ্রান্স দূতাবাসের এক ফেসবুক পোস্টে গতকাল জানানো হয়, জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ভারতের দিল্লিতে যাবেন আগামী ৯ সেপ্টেম্বর। সেখান থেকে দ্বিপক্ষীয় সফরে ১০ সেপ্টেম্বর ঢাকায় আসবেন তিনি।
ঢাকায় অবস্থানের সময় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন। পাশাপাশি ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাবেন। ১১ সেপ্টেম্বর তার ঢাকা ছাড়ার কথা রয়েছে বলে জানা গেছে। ম্যাক্রোঁর সফরটি হবে দীর্ঘ তিন দশক পর ফ্রান্সের কোনো প্রেসিডেন্টের প্রথম বাংলাদেশ সফর। এর আগে ১৯৯০ সালে ফ্রান্সের তখনকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া মিতেরাঁ বাংলাদেশে এসেছিলেন। এদিকে ২০২১ সালে ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে দ্বিপক্ষীয় সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সফরকালে তিনি ফরাসি প্রেসিডেন্টকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানান।
ফ্রান্স দূতাবাস জানিয়েছে, ফরাসি প্রেসিডেন্টের সফরের মধ্য দিয়ে দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির পথে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও গভীর হওয়ার সুযোগ তৈরি হবে। বাংলাদেশ ও ফ্রান্স বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একসাথে কাজ করছে। বিশেষ করে প্যারিস এজেন্ডা ফর পিপলস অ্যান্ড দ্য প্ল্যানেটের কাঠামোর সক্রিয় সমর্থক ঢাকা। শান্তিরক্ষা, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে আশ্রয় এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলায়ও গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী বাংলাদেশের পাশে থাকবে ফ্রান্স সরকার।