‘দেশের মোট শ্রমশক্তির ৪১ ভাগ কৃষিখাতে নিয়োজিত, জিডিপিতে কৃষির অবদান ১৪.৫ শতাংশ অথচ সেই কৃষকই ফসলের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত। কৃষকরা দেশের ১৭ কোটি মানুষের আহার যোগায়। এমন কাজের জন্য তাদের পুরস্কার পাওয়ার কথা অথচ সেই কৃষক মনের দুঃখে ক্ষোভে ধানক্ষেতে ও বস্তায় আগুন লাগিয়ে দিচ্ছে।
রোববার বিকেলে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা এসব বলেন। ধানের লাভজনক দাম নিশ্চিত করা, অবিলম্বে পাটকল শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ ৯ দফা দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট।
কৃষি অধিদফতর বলছে, এক কেজি ধান উৎপাদনে কৃষকের খরচ হয় ১৭ টাকা, বাজারে বর্তমানে দাম ১ কেজি ১৩ টাকা। প্রতি কেজিতে ৪ টাকা লোকসান দিচ্ছে কৃষক। ১ বিঘা জমিতে কৃষকরা ৬৫০০ টাকা পর্যন্ত লোকসান দিচ্ছে।
তারা বলেন, ‘সরকার ঋণখেলাপীদের, ব্যাংক মালিকদের, শিল্প মালিকদের ছাড় দিচ্ছে কিন্তু কৃষকদের লাভজনক দাম নিশ্চিত করতে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না। শুধুমাত্র খুলনা অঞ্চলের ৯টি পাটকল শ্রমিকদের ১২ সপ্তাহের মজুরি ও কর্মকর্তা কর্মচারীদের ৩-৪ মাসের বকেয়া বেতন বাবদ পাওনা ৭৫ কোটি ১৪ লাখ টাকা। মৌসুমে ১২০০-১৫০০ টাকা মণ দরের পাট সময়মতো না কিনে পরে ২৫০০-৩০০০ টাকা দিয়ে ব্যবসায়ী ও ফড়িয়াদের কাছ থেকে কেনার ফলে যে ক্ষতি হয় তার দায়িত্ব কেন শ্রমিকেরা নেবে।’
বক্তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কৃষিমন্ত্রী কৃষকের জন্য কিছু করতে না পারলে তার ওই মন্ত্রণালয়ে দায়িত্বে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। খাদ্যমন্ত্রীর কৃষক ও জনগণকে নিয়ে উপহাস ও বিরূপ মন্তব্য করার দায়ে অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিত।’ প্রতিটি ইউনিয়নে ও হাটে সরকারি ক্রয় কেন্দ্র খুলে সরকার নির্ধারিত দামে সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ধান ক্রয় করা এবং প্রতিটি উপজেলায়-ইউনিয়নে খাদ্য গুদাম নির্মাণ করার দাবি জানান।
সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেস ক্লাব, তোপখানা রোড হয়ে পল্টন মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। বাম জোটের সমন্বয়ক ও বাসদ নেতা বজলুর রশীদ সভাপতিত্বে সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বাম জোটের কেন্দ্রীয় নেতা বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, সিপিবি সহকারী সাধারণ সম্পাদক কমরেড সাজ্জাদ জহির চন্দন, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক কমরেড মোশাররফ হোসেন নান্নু, বাসদ (মার্কসবাদী) নেতা আ.ক.ম. জহিরুল ইসলাম, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক প্রমুখ।