সময় এসেছে বদলাবার

সময় এসেছে বদলাবার

বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান তাপমাত্রার কারইে বিশ্বে শীর্ষস্থানীয় জলবায়ু বিজ্ঞানীরা বলেছেন ‘এখনই কিছু করুন, নাহলে সংকটে ঝুঁকিতে থাকুন।’ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রতিবেদন অনুযায়ী তাপমাত্রা দ্রুত বৃদ্ধির ফলে পৃথিবীতে নেমে আসতে চলেছে ভয়ঙ্কর  অমানিশা।

জাতিসংঘের বৈশ্বিক উষ্ণতা বিষয়ক আন্ত সরকার প্যানেসের (আইপিসিসি) গবেষইায় দেখা যায়, আমাদের গ্রহটি ১২ বছরের মধ্যে তাপমাত্রা বৃদ্ধির চূড়ান্ত সীমা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস অতিক্রম করতে পারে। যেটা কিনা প্রাক শিল্পযুগের মাত্রার থেকেও বেশি। এতে করে আবহাওয়া পরিস্থিতি আস্বাভাবিক রূপ নেবে। বিশেষ করে আবহাওয়া চরম দুর্ভিক্ষ, দাবানাল, বন্যা, সেই সঙ্গে লাখ লাখ মানুষের খাদ্য সংকটের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেবে। ইতমধ্যেই যার প্রভাব শুরু হয়ে গেছে।

পৃথিবীর ফুঁসফুঁস নামে খ্যাত অ্যামাজান জঙ্গলের ভায়াবহ দাবানল কারোরই নজর এড়ায়নি। The National Institute for Spece Research    তাদের উপগ্রহ থেকে সংগৃহিত ছবি থেকে বলেছে, ২০১৮ এর তুলনায় ২০১৯ সময়ে আগুন লাগার ঘটনা বেড়েছে ৮৫ ভাগ সমীক্ষা অনুযায়ী জানা যায়, ২০১৩ সালের পর থেকে এই হার সবচেয়ে বেশি। তারই ভয়াবহতার প্রমাণ মেলে ১ জনুয়ারি ২০২০ সালের, অস্ট্রেলিয়ার দাবানলের প্রকোপে। 

আর ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মাসে শনাক্ত হওয়া কোভিড-১৯ ভাইরাসটি তার তান্ডবলীলা শুরু করে। এখানে অনকের মনেই একটি প্রশ্ন উঠবে, কোভিড-১৯ এর সঙ্গে বৈশ্বিক উষ্ণয়নের সম্পর্ক কি? ভোরের আলো আপনাদের সেই প্রশ্নের জবাবই দেবে।

আমরা বেশিরভাগ মানুষই বৈশ্বিক উষ্ণায়ন শব্দটির সঙ্গে পরিচিত হলেও এর অভ্যন্তরীণ বিষয়াবলী সম্পের্কে শব্দটির সঙ্গে পরিচিত হলেও অবশ্যই বুঝতে পারি। কিছু খারাপ হতে চলেছে। বৈশি^ক উষ্ণয়নের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা বেড়ে গলিয়ে ফেলছে মেরু অঞ্চলের বরফ। বরফের স্তর পাতলা হওয়ায় দেখা দিয়েছে বড়সর আশঙ্কা। বরফের মধ্যে থাকা ভাইরাস ও ব্যকটেরিয়া সক্রিয় হওয়ার প্রমাণ পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। অ্যালাস্কা ও সাইবেরিয়াতে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের আক্রমণের প্রমাণ মিলেছে, ঘটেছে কয়েকটি মৃত্যুও। অ্যালস্কাতে পাওয়া গেছে ‘ক্যানারো ব্যাকটেরিয়াস প্লেইস্টেথিয়াম’ এবং সাইবিরিয়াতে পাওয়া গেছে ‘পিথোভাইরাস সাইবেরিকাম ও মলিভাইরাস সইবেরিকাম। এরা আদি যুগের ব্যকটেরিয়া, তাই এদর প্রতিরক্ষা গড়তে আমাদের শরীর একেবারেই অক্ষম।

বৈশ্বিক উষ্ণয়নে হারিরে যাচ্ছে বিভিন্ন বন্যপ্রাণি ও জীববৈচিত্র্য। এমন চলতে থাকলে অচিরেই মানবসভ্যতা বিলীন হয়ে যাবে সভ্যতার অতল গহ্বরে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, এর  থেকে পৃথিবীকে রক্ষার উপায় কি? তবে কি প্রিয় পৃথিবীকে বাঁচানো সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব। মানুষ যেভাবে পারিস্থিতির জন্য দায়ী তেমনি মানুষই পারে পৃথিবীকে আবার পুনরুজ্জীবীত করতে। বৈশ্বিক উষ্ণয়নের প্রধান কারণ কার্বানায়ন। কার্বানায়ন কমাতে-

১। গণপারিবহন ব্যবহার করুন।
২। শক্তির অপচয় রোধ করুন।
৩। মাংস, খাওয়া কমিয়ে নিরামিষভোজী হয়ে যান ও কমিয়ে ফেলুন।  (মাংস উল্লেখ্য পরিমান গ্যাস নির্গমন ঘটায়)।
৪। প্রতিটি জিনিস পুনব্যবহারের চেষ্টা করুন একমনকি পানিও। 
৫। গাছ লাগান বেশি করে। 
৬। অন্যদের এসব জানান এবং শেখান। 

ভোরের আলো পত্রিকার পাঠকদের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনার পৃথিবীকে সুন্দর রাখার জ্যন্য আপনি স্বয়ং পারেন নিজের উদ্যেগে এসব নিয়মগুলো মেনে পৃথিবীকে ভবিষ্যত মহামারী থেকে রক্ষা করতে। ভুলে যাবেন না এবং এমন কিছু করবেন না, যাতে পৃথিবীর বায়ু আপনার ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য অযোগ্য হয়ে যায়। সরকারের কাছে আমাদের একটাই অনুরোধ, প্রাথমিক পর্যায় থেকে শুরু করে শিক্ষার সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত বৈশ্বিক উষ্ণায়ন সম্পর্কিত অনুশীলন বই জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড এর অন্তর্ভুক্ত করা হোক। যাতে শিক্ষর্থীরা এ সম্পর্কে অবগত হতে পারে এবং তাদের অনুশীলনের মাধ্যমে পৃথিবীকে সমৃদ্ধ করতে পারে। উল্লেখ্য, কোন বিষয়ের থেকেই এই বিষয়টিেেক গুরুত্ব কম নয়। তাই রাষ্ট্রীয় কতৃপক্ষকে বিষয়টি বিবেচনা করার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হল।

পরিশেষে কিছু কথা অবারত্ত বলতে চাই, সরকারের একার প্রচেষ্টায় এই সমস্য সমাধান করা সম্ভব নায়। আসুন ‘আমরা এখনই কিছু করি, সময় এসেছে বদলাবার’।