ধূমপানের দৃশ্য নিয়ে হাইকোর্টের রুল

নাটক ও সিনেমার দৃশ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারের প্রদর্শন নিয়ে রুল জারি করেছে উচ্চ আদালত। চার সংগঠনের পক্ষে করা এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের ওপর শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের ভার্চুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করে।
ধূমপান ও তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী সিনেমা-নাটকের দৃশ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার ও প্রদর্শন বন্ধে সংশ্লিষ্টদের (এ রিট মামলার বিবাদী) নিষ্ক্রিয়তা ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না এবং এ সংক্রান্ত আইন বাস্তবায়নে কেন নির্দেশনা দেওয়া হবে না, রুলে তা জানতে চেয়েছে হাইকোর্ট।
এতে রিট আবেদনে বিবাদী স্বাস্থ্য সচিব, আইন সচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, তথ্য সচিব, বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সেন্সর বোর্ড ও সরকারের তামাক নিয়ন্ত্রণ সেলের সমন্বয়ককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ভার্চ্যুয়াল রিট আবেদনের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান লিংকন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়।
ধূমপান ও তামাকের ক্ষতিকর দিক তুলে ধরে গত ৩ ফেব্রুয়ারি নাটক-সিনেমায় দৃশ্যে ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে এ রিট আবেদনটি করা হয়। বাংলাদেশ ক্যানসার সোসাইটি, মাদকবিরোধী সংগঠন ‘প্রত্যাশা’, গ্রাম বাংলা উন্নয়ন সংস্থা এবং পিডিও (পপুলেশন ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন) এর পক্ষে অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান লিংকন এ আবেদন করেন।
রিটকারীপক্ষের আইনজীবী জানান, ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবহার, ক্রয়-বিক্রয় ও বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ করতে ২০০৫ সালে সরকার ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন করে। আইনের বিধান অনুযায়ী পাবলিক প্লেস কিংবা গণপরিবহনে ধূমপান করলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ৩০০ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করার বিধান রয়েছে। কিন্তু আইনটি যথাযথভাবে কার্যকর না হওয়ায় ধূমপানের প্রবণতা নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না।
আইনজীবী বলেন, ‘আইনে প্রকাশ্যে ধূমপান নিষিদ্ধের পাশাপাশি এর বিজ্ঞাপন ও প্রচারণার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। কিন্তু সিনেমা ও নাটকে অহরহ ধূমপানের দৃশ্য দেখা যায় যা আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় চরিত্রে যারা থাকেন তাদের প্রিয় মানুষ হিসেবে শিশু, কিশোর ও তরুণদের অনেকে অনুসরণ করেন। ফলে শিশু, কিশোর ও তরুণরা ধূমপানের এসব দৃশ্য অনুসরণ করে এতে আসক্ত হচ্ছে।’
তিনি জানান, আইনের বিধান অনুযায়ী কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার লিখিত অভিযোগ ছাড়া কোনো আদালত এ আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচারের জন্য গ্রহণ করবে না। এটি সংবিধানের ২৭ ও ৩১ অনুচ্ছেদের পরিপন্থী। আবেদনে কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার পাশাপাশি ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহারে ক্ষতিগ্রস্তরাও যেন আদালতে যেতে পারেন সে জন্য আইনের ১৪ (২) ধারা সংশোধন চাওয়া হয়েছে। রুলের শুনানিতে এগুলো তুলে ধরা হবে।