নাটোরে ইউএনওর গাড়িচাপায় প্রাণ গেলো সাংবাদিকের

নাটোরে ইউএনওর গাড়িচাপায় প্রাণ গেলো সাংবাদিকের


নাটোরের সিংড়ার নলডাঙ্গা এলাকায় ইউএনওর সরকারি গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে প্রাণ হারিয়েছেন সোহেল রানা জীবন (৩৪) নামে স্থানীয় এক সাংবাদিক।

আজ সোমবার নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ির সাথে সাংবাদিক সোহেল রানা জীবনের মোটরসাইকেলের ধাক্কা লেগে। এ সময় গাড়ির চাকায় পিষ্ট হয়ে মারা যান তিনি।

সরকারি ওই গাড়িতে (নাটোর-ঘ ১১-০০৩২) নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুখময় সরকারের স্ত্রী সিংড়া গোল-ই আফরোজ সরকারি কলেজের বাংলা বিভাগের প্রভাষক মানসী দত্ত মৌমিতা তার কর্মস্থলে যাচ্ছিলেন বলে জানা গেছে।

নিহত সোহেল রানা জীবন সিংড়া পৌর শহরের বালুয়া বাসুয়া মহল্লার মৃত আব্দুল জলিলের ছেলে। তিনি সিংড়া বাজারের ফ্রেন্ডস কম্পিউটার এন্ড ষ্টেশনারীর স্বত্ত্বাধিকারী। কর্মজীবনে তিনি আগপাড়া শেরকোল বন্দর উচ্চ বিদ্যালয় এন্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক। তিনি বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক দুরন্ত সংবাদের সিংড়া উপজেলা প্রতিনিধি এবং সিংড়া প্রেসক্লাবের সদস্য ও পরিবেশ ও প্রকৃতি আন্দোলনের সহ-সভাপতি ছিলেন।


পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ইউএনও সুখময় সরকার স্ত্রী মানসী দত্ত মৌমিতাকে সরকারি গাড়িতে করে তার কর্মস্থলে পৌঁছে দিতে সিংড়া যাচ্ছিলেন। পথে সিংড়া উপজেলার নিংগইন তেল পাম্প এলাকায় গাড়ির সাথে সাংবাদিক সোহেল রানা জীবনের মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় তিনি গাড়ির চাকার নিচে পিষ্ট হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে পথমে সিংড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও পরে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। রাজশাহীতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুর ১টার দিকে তিনি মারা যান।

প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী সোলায়মান বলেন, সরকারি ওই গাড়িতে একজন মহিলা এবং গাড়ির চালকসহ মোট তিনজন ছিলেন। ঘটনার পর ওই মহিলা গাড়ি থেকে নেমে অন্য গাড়িতে চলে যান।

এদিকে দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাইওয়ে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে গাড়ি দুটি উদ্ধার করে। এ সময় ঘটনাস্থলে পৌঁছে সাংবাদিক সোহেল রানাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেন সিংড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এম সামিরুল ইসলাম।

ঝলমলিয়া হাইওয়ে থানার ওসি রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, দুর্ঘটনার খবর পেয়ে গাড়িটি উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে।

নলডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুখময় সরকার স্ত্রীকে কর্মস্থলে পৌঁছে দেয়ার কথা অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, নলডাঙ্গা ছোট উপজেলা। সেখানে পেট্রোল সঙ্কটের কারণে সিংড়ায় পেট্রোল নিতে পাঠিয়েছিলাম।

সিংড়ার ইউএনও এম এম সামিরুল ইসলাম বলেন, আমরা নিহতের চিকিৎসার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম। তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে পরিবারকে সহযোগিতা করার কথা জানান তিনি।