পটুয়াখালীতে থানা পুলিশের হেফাজতে বিষপানে এক ব্যক্তির মৃত্যু

পটুয়াখালীতে থানা পুলিশের হেফাজতে বিষপানে এক ব্যক্তির মৃত্যু

পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলায় থানা পুলিশের হেফাজতে লিটন খাঁ নামে এক সিএনজি চালকের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় এক মাদ্রাসা সুপারের অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে থানায় নেয়া হয়েছিলো। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে বিচার দাবি করেন নিহতের স্ত্রী। এদিকে পুলিশ বলছে বাথরুমে গিয়ে সে বিষপান করেছে। লিটন গ্রেপ্তারকৃত আসামী না হওয়ায় তার শরীর তল্লাশী করা হয়নি দাবি পুলিশের। 

রোববার বিকেল ৩টার দিকে লিটনকে জিজ্ঞাসাবাদের কথা বলে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। রোববার রাত ১টার পর বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় লিটন মারা যায়।

গত শনিবার রাতে মাদ্রাসা সংলগ্ন একটি পুকুরে কে বা কারা বিষ ঢেলে মাছ নিধন করে। এ ঘটনায় মাদ্রাসা সুপার মাওলানা সিহাব উদ্দিন দশমিনা থানায় লিটন খাঁ’র বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন।

লিটন ৩ সন্তানের জনক ছিলেন। ৩ সন্তানের ভবিষ্যত নিয়ে হাসপাতালের মর্গে বিলোপ করছিলেন তার স্ত্রী মাজেদা বেগম।
পটুয়াখালী জেলার দশমিনা থানার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের লিটন খাঁ ঢাকায় সিএনজি চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতো। স্থানীয় আক্রাম খান সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে জমি নিয়ে বিবাদমান পুরনো সমস্যা সমাধানের কথা বলে তাকে বাড়িতে ডেকে আনা হয়। 
নিহত লিটন খাঁ’র ভগ্নিপতি মোফিজুর রহমান জানান, লিটনকে থানায় নেয়ার খবর পেয়ে তিনিও সঙ্গে সঙ্গে থানায় যান। থানায় গিয়ে দেখেন অসুস্থাবস্থায় লিটনকে পুলিশ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাচ্ছিলো। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাকে রাতে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার রাত ১টার পর লিটন মারা যায়।

লিটনের স্ত্রী মাজেদা বেগম অভিযোগ করেন, জমি নিয়ে পাশ^বর্তী আক্রাম খান সিনিয়র দাখিল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে দির্ঘদিন ধরে লিটনের বিরোধ চলছিলো। এর জের ধরে মাদ্রাসা সুপারের প্রভাবের কারণে পুলিশ তার স্বামীকে সুস্থ অবস্থায় ধরে নিয়ে যায়। পরে লিটন অসুস্থ বলে তাকে খবর পাঠানো হয়। পরে শুনতে পান বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেলে তার স্বামী মারা গেছেন। পুলিশ হেফাজতে স্বামীর মৃত্যুর ঘটনায় বিচার দাবি করেন লিটনের স্ত্রী মাজেদা বেগম।   

দশমিনা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) আব্দুস সালাম মোল্লা জানান, অভিযোগের ভিত্তিতে লিটনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। সে গ্রেপ্তারকৃত আসামী না হওয়ায় তার শরীর তল্লাশী করে থানায় প্রবেশ করানো হয়নি। বাথরুমে গিয়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসক পুলিশকে জানিয়েছে লিটন বিষপান করেছে। রোববার রাত ১টার দিকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। লিটনের মরদেহ গতকাল সোমবার দুপুরে বরিশাল মর্গে ময়না তদন্ত করা হয়। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।