পদ্মাসেতুতে উঠার আগে বিএনপিকে তওবা করতে হবে

পদ্মাসেতুতে উঠার আগে বিএনপিকে তওবা করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
আজ বৃহস্পতিবার রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, টিভিতে বিএনপি নেতা মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বয়ান, আর বর্ষাকালে ব্যাঙের ডাক একই। বিএনপির কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, যারা নিজেদেরই ঐক্য ধরে রাখতে পারে না তারা আবার সরকার পতনের ডাক দেয়! বিএনপি এর আগেও জাতীয় ঐক্য করেছিল। কিন্তু নির্বাচনের পর টেকেনি। এখন আবার জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া গঠনের কথা বলছে; অথচ তাদের নিজেদের মধ্যেই ঐক্য নেই।
সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের ফিরিস্তি তুলে ধরেন মন্ত্রী। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়ন দেখে বিএনপির মাথা খারাপ হয়ে গেছে। তারা বুঝে গেছেন যে, বিএনপির বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে। মানুষ তাদের প্রত্যাখ্যান করেছে। কারণ দেশটা বদলে গেছে। এই উন্নয়নের মাধ্যমেই আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় আসবে।
আওয়ামী লীগের তৃণমূলের কর্মীদের ওপর বিশ্বাস রেখে মন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার এ পর্যন্ত যে উন্নয়ন করেছে তাতে ভোট নৌকা বাদে অন্য কোথাও যাওয়ার কথা নয়। যদি যায় তবে বুঝতে হবে নেতাদের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণে মানুষ ভোট দেয়নি। ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ আমরা দেখতে চাই না, এদের কারণে দেশের উন্নয়নে ভাটা পড়তে দিতে পারি না।
ড. হাছান মাহমুদ দলের কতিপয় নেতাদের উদ্দেশ্য করে বলেন, হাত গুটিয়ে থাকা ও দলের সাধারণ কর্মীদের সাথে সম্পর্ক না রাখা মানুষদের আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে থাকার কোনো অধিকার নেই। আর তাদের দলেও দরকার নেই। যারা টাকা দিয়ে নেতা হতে চায় তাদের প্রয়োজন নেই।
বিএনপি'র করা সমসাময়িক বিভিন্ন মন্তব্য প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপি'র মন্তব্যের পর এখন বানরও ভেংচি কাটে। ওই বিএনপি বলেছিল- পদ্মা সেতু তৈরি করা সম্ভব নয়। কিন্তু পদ্মা সেতু এখন হয়ে গেছে। প্রধানমন্ত্রী গাড়ি চালিয়ে এর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত পাড়ি দিয়েছেন। তাই পদ্মা সেতুতে ওঠার আগে বিএনপি নেতা কর্মীদের তওবা পড়ে ওঠার পরামর্শ দেন মন্ত্রী। তওবা না পরে পদ্মা সেতু পার হওয়া তাদের উচিত হবে না।
এসময় তিনি বলেন, পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কারণে পরিবেশের কোন ক্ষতি হবে না। যারা এসব নিয়ে অপপ্রচার চালায় তারা উন্নয়ন চায় না।
মাঠে ময়দানে কোথাও নাই বিএনপি উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে বর্ষাকালে চারিদিক যখন তলিয়ে যায় তখন ব্যাঙ ডাকে। বিএনপি'র ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্য বর্ষাকালের ওই ব্যাঙ ডাকার মতই। সমাবেশ করতে পারে না। সমাবেশের নামে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে। যারা নিজেদের ঐক্য ধরে রাখতে পারে না তারা আবার সরকার পতনের ডাক দেয়। আওয়ামী লীগের উন্নয়নের দিশেহারা হয়ে তারা এমন কথাবার্তা বলছেন বলেও উল্লেখ করেন- মন্ত্রী।
শেষে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি নিয়েও কথা বলেন তথ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের বাজারে পণ্যের মূল্য বেড়েছে। তবে এর চাইতে বেশি বেড়েছে বিশ্ববাজারে। ইউরোপে খাদ্যপণ্যের দাম কয়েক দশকে সর্বোচ্চ বেড়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ৮০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়েছে। এরপরও বর্তমান সরকার দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অনিল কুমার সরকার। প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য ও রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদ দারা। বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহীর পুঠিয়া-দুর্গাপুর আসনের সংসদ সদস্য ডা. মনসুর রহমান, পবা-মোহনপুর আসনের সংসদ সদস্য আয়েন উদ্দিন, সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য আদিবা আনজুম মিতা ও জেলা আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. চিন্ময় কান্তি দাস।