পুঁজিবাজারে সাড়ে ৬ মাসে সর্বোচ্চ দরপতন

সপ্তাহের দ্বিতীয় কার্যদিবস সোমবারও (২৫ অক্টোবর) দেশের পুঁজিবাজারে বড় দরপতন হয়েছে। এদিন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে ডিএসইতে সূচক কমেছে ১২০ পয়েন্ট। চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জে (সিএসই) কমেছে ৪২৬ পয়েন্ট। যা গত ৬ মাস ২১ দিনের মধ্যে উভয় পুঁজিবাজারে সূচকের সর্বোচ্চ পতন। এদিন দরপতনের প্রতিবাদে দুপুরে রাজধানীর মতিঝিলে মানববন্ধন করেছেন বিনিয়োগকারীরা। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সামনে এ মানববন্ধন করেন তারা। এদিন ব্যাংক, বিমা এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানসহ সব খাতের শেয়ারের দাম কমেছে।
দাম আরও কমবে এমন আতঙ্ক বিরাজ করছে পুঁজিবাজারে। বিনিয়োগকারীরা বলেছেন, সোমবার দিনের লেনদেনের শুরুতে প্রথমে বড় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রি করেন। এরপর তাদের দেখা-দেখি সাধারণ বিনিয়োগকারীরা আতঙ্কিত হয়ে শেয়ার বিক্রি করেন।
তথ্য বলছে, সোমবার দিনভর অস্থিরতার মধ্যদিয়ে লেনদেন হয়েছে। এদিন সূচক পতনের মধ্যদিয়ে লেনদেনের শুরু হয়, যা অব্যাহত ছিল দুপুর ১২টা ৩৬ মিনিট পর্যন্ত। এ সময় আগের দিনের চেয়ে সূচক কমেছে ১৬৩ পয়েন্ট। তবে পরের ২ ঘণ্টা লেনদেন হয়েছে সূচক ওঠানামার মধ্যদিয়ে। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছে ১২০ পয়েন্ট, যা চলতি বছরের ৪ এপ্রিলের পর সর্বোচ্চ সূচক পতন। ওই দিন ডিএসইর প্রধান সূচক কমেছিল ১৮১ দশমিক ৪৪ পয়েন্ট।
এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৬টি প্রতিষ্ঠানের ৩১ কোটি ৬৩ লাখ ৬০ হাজার ৭১২টি শেয়ার হাতবদল হয়েছে। লেনদেন হওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৩০৭টির শেয়ারের দাম কমেছে, বেড়েছে ৪৭টির। আর অপরিবর্তিত ছিল ২২টির।
অধিকাংশ কোম্পানির শেয়ারের দাম কমায় ডিএসইর প্রধান সূচকের পাশাপাশি অন্য সূচকগুলোর মধ্যে শরিয়াহ সূচক ২২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৪৬৫ পয়েন্টে এবং ডিএসই-৩০ সূচক ৫৩ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৬৪৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ৪৭০ কোটি ৪৩ লাখ ১৯ হাজার টাকার শেয়ার। আগের দিন লেনদেন হয়েছিল ১ হাজার ৪৭১ কোটি ৪ লাখ ৬২ হাজার টাকার শেয়ার। অর্থাৎ আগের দিনের চেয়ে লেনদেন কিছুটা কমেছে।
অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক সূচক সিএএসপিআই ৪২৬ পয়েন্ট কমে ২০ হাজার ১৪৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। সিএসইতে লেনদেন হওয়া ২৯৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪১টির শেয়ারের দাম বেড়েছে, কমেছে ২৪৪টির, আর অপরিবর্তিত রয়েছে ৯টির শেয়ারের দাম। এ বাজারে লেনদেন হয়েছে ৬০ কোটি ৬০ লাখ ২৭ হাজার ৫২৪ টাকার শেয়ার। এর আগের দিন লেনদনে হয়েছিল ৪৯ কোটি ৯৮ লাখ ৮১ হাজার ৭৭১ টাকার শেয়ার।
‘বিশ্ব চাইলে মহামারির অবসান সম্ভব’
বিশ্বের সব দেশ যখন সহজলভ্য সকল স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কার্যকরভাবে ব্যবহার শুরু করবে; করোনাভাইরাস মহামারি কেবলমাত্র তখনই শেষ হবে। রোববার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গেব্রেইয়েসুস বার্লিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে দেওয়া বক্তৃতায় এই মন্তব্য করেছেন।
তিনি বলেছেন, ‘বিশ্ব যখন এই মহামারি শেষ করতে চাইবে, কেবলমাত্র তখনই এটি শেষ হবে। এটি আমাদের হাতে। আমাদের প্রয়োজনীয় সব স্বাস্থ্য সরঞ্জাম হাতে রয়েছে: কার্যকর জনস্বাস্থ্য সরঞ্জাম এবং কার্যকর মেডিক্যাল সরঞ্জাম।’
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই প্রধান বলেন, কিন্তু বিশ্ব সেসব সরঞ্জাম ভালোভাবে ব্যবহার করছে না। প্রতি সপ্তাহে ৫০ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি নিয়ে এই মহামারির অবসান এখনও অনেক দূরে।
বিশ্বজুড়ে সমতার ভিত্তিতে ভ্যাকসিন বিতরণের লক্ষ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেওয়া উদ্যোগ কোভ্যাক্স এবং আফ্রিকান ভ্যাকসিন অ্যাকুইজিশন ট্রাস্টের (এভিএটি) সঙ্গে টিকা নিয়ে আরও বেশি কাজ করতে জি-২০ সদস্য দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ডব্লিউএইচওর প্রধান।
একই দিন বিশ্বজুড়ে কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের ন্যায্য বিতরণ নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় আরও ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদান সংগ্রহের কাজে সহায়তা করতে জি-২০ দেশগুলোর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস।
বার্লিনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সম্মেলনে তিনি বলেন, অক্টোবরের শুরুর দিকে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বণ্টনে বৈশ্বিক কৌশল গ্রহণে তিনি ডব্লিউএইচও প্রধানের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন। এতে চলতি বছরের শেষের আগেই বিশ্বের সব দেশের ৪০ শতাংশ এবং আগামী বছরের মাঝের দিকে ৭০ শতাংশ মানুষের জন্য ভ্যাকসিন সরবরাহে বিশ্বাসযোগ্য এবং সাশ্রয়ী পরিকল্পনা নেওয়া হয়।