প্রধানমন্ত্রীর প্রতি চরম অমানবিকতা দেখিয়েছে বিএনপি

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি বিএনপি ও বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া চরম অমানবিকতা দেখিয়েছেন।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর পরিবার, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের প্রতি বিএনপি ও খালেদা জিয়া সবচেয়ে বেশি অমানবিকতা দেখিয়েছে। এই অমানবিকতা প্রতিষ্ঠা করেছেন জিয়াউর রহমান।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনার প্রতি বিএনপি এত অমানবিক হওয়ার পরেও আমাদের প্রধানমন্ত্রী তাদের প্রতি যে মানবিকতা ও উদারতা দেখিয়েছেন, এর থেকে তাদের শিক্ষা নেয়া উচিত। শুক্রবার বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেস ক্লাবের মৌলানা মো. আকরাম খাঁ হলে সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বিএনপি মানবাধিকারের কথা বলে। যখন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়, তখন তার কন্যা শেখ হাসিনা ৩২ নম্বর বাড়িতে গিয়ে বিলাপ করতে চেয়েছিলেন, তাকে বিলাপ পর্যন্ত করতে দেয়া হয়নি। এতে কি মানবাধিকার লংঘন হয় না।
গ্রেনেড হামলা করে যখন ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সভানেত্রীকে হত্যার চেষ্টা করা হলো, ২৪ জনকে হত্যা করা হলো, তখন সংসদে শোক প্রস্তাব আনার জন্য আমরা উদ্যোগ নিলাম, তখন বিএনপি নেতারা হাস্যরস করে বলছিলেন, শেখ হাসিনাই এ ঘটনায় দায়ী, তখন খালেদা জিয়া মুচকি হাসছিলেন। তখন মানবাধিকার লংঘন হয়নি?। যখন খালেদা জিয়া শোক দিবসে জন্মদিন পালন করেন, তখন মানবাধিকার লংঘন হয় না?।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, আমরা বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি শরণার্থী দেখতে পাচ্ছি ২০২১ সালে। এর পেছনের কারণ বিশ্বব্যাপী সংঘাত, অস্ত্রের প্রতিযোগিতা নিয়ে সংঘাত। মানবাধিকার রক্ষায় বিশ্ব নেতাদের যে পদক্ষেপ নেয়ার কথা ছিল, তারা তা নিচ্ছে না। তবে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান এখনও মানবাধিকার রক্ষা হোক এটা চায়।
তিনি বলেন, বিশ্ব মানবাধিকার রক্ষার মোড়ল হিসেবে নিজেদের যারা দাবি করে, তারা সে অবস্থানে নেই। কিন্তু তাদের নিজের দেশেই মানবাধিকার নেই। তারা অন্য দেশের মানবাধিকার নিয়ে কথা বলেন। অথচ তাদের নিজেদের দেশে বৈষম্য দেখা যাচ্ছে, সেখানে কৃষ্ণাঙ্গ হত্যা হচ্ছে।
রোহিঙ্গা ইসুতে মন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে বাংলাদেশে নির্যাতিত রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে। মিয়ানমার থেকে তাদের তাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এটা মানবাধিকার লংঘন। আমাদের দেশ ঘনবসতির দেশ। এমনিতেই আমাদের যে পরিমাণ খাদ্য উৎপাদন হয়, আরও প্রয়োজন। কিন্তু এই মুহূর্তেও আমাদের দেশ তাদের আশ্রয় দিয়েছে।
রোহিঙ্গা ইস্যুর ৬ মাসের মধ্যে ওআইসি কোনো ধরনের মিটিং ডাকতে ব্যর্থ হয়েছিল। আমাদের প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে মিটিংয়ের আয়োজন করা হয়। বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান তাদের সহযোগিতা দিচ্ছে। কিন্তু তাদের নিজ দেশে ফেরাতে কোনো উদ্যোগই নিচ্ছে না। রোহিঙ্গারাই তো চায় নিজেদের ঘরে ফেরত যেতে।
আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, সংগঠনের মহাসচিব অধ্যাপক মাওলানা মোহাম্মদ আবেদ আলী, সার্ক মানবাধিকার ফাউন্ডেশন উপদেষ্টা পরিষদ চেয়ারম্যান র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী, ঢাকাস্থ ভুটানের রাষ্ট্রদূত রিনচেন কুয়েন্টসিল, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক, জাতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) আব্দুর রশীদ প্রমুখ। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সভাপতি বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া।