বই মেলায় আজ এসেছে ২০১টি বই

বই মেলায় আজ এসেছে ২০১টি বই

আজ অমর একুশে বই মেলার ৭ম দিনে নতুন বই এসেছে ২০১টি। শনিবার ছুটির দিন হওয়াও গতকালের ন্যায় আজও ছিল উপচেয় পড়া ভীড়। আজ মেলায় শিশুপ্রহর থাকায় বহু অভিভাবক তাদের সন্তানদের নিয়ে এসেছিলেন মেলায়।

অন্যদিকে অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় ক-শাখায় ১৩০ জন এবং খ- শাখায় ৭০ জন শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করেন। বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রেজীনা ওয়ালী লীনা, ফয়জুল আলম পাপ্পু এবং ফয়জুল্লাহ সাঈদ। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৈয়দ হাসান ইমাম।

এ ছাড়াও অমর একুশে উদযাপনের অংশ হিসেবে সকাল ১০টায় গ্রন্থমেলার আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে শিশু-কিশোর সংগীত প্রতিযোগিতার প্রাথমিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতায় ক-শাখায় ৭৯ জন এবং খ-শাখায় ৮৮ জন শিশু-কিশোর অংশগ্রহণ করেন। বিচারক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এ. এস. এম. মহিউজ্জামান চৌধুরী (ময়না), ইয়াকুব আলী খান এবং চন্দনা মজুমদার।

বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় এম আবদুল আলীম রচিত বঙ্গবন্ধু ও ভাষা-আন্দোলন শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায়। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন প্রতিভা মুৎসুদ্দি। লেখকের বক্তব্য প্রদান করেন এম আবদুল আলীম। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।

প্রাবন্ধিক অপরেশ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বাঙালি জাতির জীবন ও ইতিহাসে ভাষা-আন্দোলন একটি ঐতিহাসিক এবং গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হয়ে আছে। বাঙালি জাতির এই ভাষাভিত্তিক আন্দোলনে বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রত্যক্ষ অবদান আমরা লক্ষ করি। ১৯৪৭ সালে ভাষা-আন্দোলনের সূচনা পর্ব এবং পরবর্তী সময়ে আইন সভার সদস্য হিসেবে এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে বাংলা ভাষার মর্যাদা প্রতিষ্ঠায় বঙ্গবন্ধু আত্মনিয়োগ করেন। শুধু এখানেই থেমে থাকেনি মাতৃভাষা ‘বাংলা’র প্রতি তাঁর মমত্ববোধ ও ভালোবাসা। আমৃত্যু তিনি বাংলা ভাষার উন্নয়ন ও বিকাশে সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে কাজ করে গেছেন এবং বাংলা ভাষা ও বাংলাভাষীদের দাবির কথা বলে গেছেন।

প্রতিভা মুৎসুদ্দি বলেন, বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার আন্দোলনে নিবিড়ভাবে সম্পৃক্ত ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৫২ সালে চীনের শান্তি সম্মেলন এবং ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে বাংলাভাষায় বক্তৃতা প্রদান মাতৃভাষার প্রতি তাঁর অদম্য ভালোবাসারই বহিঃপ্রকাশ। বাংলা আমাদের রাষ্ট্রভাষা হলেও আজও আমরা সর্বস্তরে বাংলাভাষার প্রচলন করতে পারিনি। মুজিব জন্মশতবর্ষে আমাদের অঙ্গীকার থাকবে বাংলা ভাষাকে বিশ্বের দরবারে মর্যাদার উঁচু আসনে অধিষ্ঠিত করা ও বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলা।

গ্রন্থের লেখক এম আবদুল আলীম বলেন, বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন ও ভাষা আন্দোলনের ইতিহাস বস্তুনিষ্ঠভাবে পর্যালোচনা করলে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর ভ‚মিকা পরিষ্কার হয়ে যায়। আমার এ গ্রন্থের মূল উদ্দেশ্য হলো একজন নিরপেক্ষ গবেষকের দৃষ্টিকোণ থেকে তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে ভাষা আন্দোলনে বঙ্গবন্ধুর অবদান মানুষের সামনে তুলে ধরা।

সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন, আমাদের ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং বঙ্গবন্ধুর অবদানকে নানাভাবে বিকৃত করার চেষ্টা হয়েছে বারবার। ভাষা আন্দোলনের ইতিহাসকে নিজস্ব মতাদর্শ ও ধ্যান-ধারণার ভিত্তিতে দেখবার প্রবণতাও লক্ষ করা যায়। বর্তমান প্রজন্মের কাছে ভাষা আন্দোলনের সঠিক তথ্য ও ইতিহাস তুলে ধরতে এম আবদুল আলীম রচিত বঙ্গবন্ধু ও ভাষা-আন্দোলন গ্রন্থটি গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখবে বলে আমার বিশ্বাস।