উপাচার্য প্রফেসর এস এম ইমামুল হকের অপসারণ চেয়ে শুররু হওয়া আমরণ অনশন কর্মসূচির তৃতীয় দিনেও অব্যাহত রয়েছে। অনশনে অশং নেওয়া বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি কায়ছার আহম্মেদ জয়, সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া, ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মিজানুর রহমান, বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সঞ্জয় কুমার সরকারসহ মোট ৪ জন শিক্ষক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। যারমধ্যে শিক্ষক সমিতির সহ-সভাপতি ও ইংরেজি বিভাগের সহকারী অধ্যাপককে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীরা ববির মেডিকেল সেন্টারে রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া।
অন্যদিকে শুক্রবার (২৬ এপ্রিল) সকাল পর্যন্ত মোট ১০ জন শিক্ষার্থী অসুস্থ রয়েছেন বলে জানিয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নেতা লোকমান হোসেন। তিনি জানান, ১২ জন শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ষষ্ঠ ব্যাচের আনোয়ার, অর্থনীতি বিভাগের ষষ্ঠ ব্যাচের রাশেদ, লোক প্রশাসনের ষষ্ঠ ব্যাচের মারুফ ও সোহাগসহ ৪ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকীদের মধ্যে কয়েকজন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল ক্যাম্পে আর অন্যরা কর্মসূচিস্থলে (বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নীচে) চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, ভিসির অপসারণ মর্মে কোন সংবাদ না পাওয়া পর্যন্ত আন্দোলন থেকে তারা পিছু হটবে না।
শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর মিয়া জানিয়েছেন, শিক্ষক সমিতির আহ্বানে সাড়া দিয়ে বুধবার থেকে এ পর্যন্ত ৫৬ জন শিক্ষক তাদের স্ব-স্ব প্রশাসনিক পদ (প্রভোষ্ট, প্রক্টর, চেয়ারম্যানসহ বিভিন্ন পদ) থেকে পদত্যাগের বিষয়ে সম্মতি জ্ঞাপন করেছন এবং যারা এরইমধ্যে তাদের পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
এদিকে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যৌথ আন্দোলনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) নেতৃবৃন্দর সংহতি প্রকাশ করায় কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেছেন ববি শিক্ষার্থীরা।
ববি শিক্ষার্থী শফিকুল ইসলাম বলেন, গত বৃহষ্পতিবার ডাকসুর সহসভাপতি-সম্পাদক সাক্ষরিত এক প্রতিবাদ লিপিতে আমাদের আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি তারা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকারীদের (ববি শিক্ষার্থীদের) সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন এবং উদ্ভুত সমস্যার সমাধানে দ্রুততম সময়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষের কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উদাত্ত আহবান জানিয়েছেন। আমরা তাদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
উল্লেখ্য গত ২৬ মার্চ একটি অনুষ্ঠানে বরিশাল বিশ^বিদ্যালয়ের উপাচার্য এসএম ইমামুল হক শিক্ষার্থীদের রাজাকারের বাচ্চা বলে গালি দেয়ার অভিযোগ ওঠে। সেই থেকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত। প্রথমে ১০ দফা এবং পরে উপাচিার্য পদত্যাগের এক দফা দাবিতে আন্দোলনে নামে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের একমাস অতিক্রম করলেও এর কোন সুরাহা হয়নি। বর্তমানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষরা একযোগে উপাচার্য অপসারণের দাবিতে আমরণ অনশন করছেন।